• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

তারাই আমাদের বাতিঘর

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮  

আবার এসেছে ফিরে ডিসেম্বর। শোক, শক্তি ও সাহসের মাস, আমাদের অহঙ্কারের মাস। এ মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়- কী অমূল্য আমাদের এই স্বাধীনতা। ১৪ ডিসেম্বরের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের শোক আমাদের ১৬ তারিখের বিজয় উল্লাসের মাঝেও মনে করিয়ে দেয় কত লক্ষ প্রাণের দামে কিনেছি এই ভূমি। এ সময়টাই শ্রেষ্ঠ সময় নিজের বিবেকের পরিশুদ্ধতা যাচাই করার। সেই সঙ্গে আবার ভেবে দেখার সময় যে, কত কষ্টে বাঙালি তার নিজ ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জন করেছে।

এবারের ডিসেম্বর সেই যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ মাসের শেষেই ভোটের মাধ্যমে আমাদের নতুন সরকার নির্বাচিত করতে হবে। এবারের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক তরুণ ভোটার ভোট দেবেন। এই তরুণদের ভোট দেওয়ার প্রাক্কালে একজন শহীদ-সন্তান হিসেবে আমি কিছু কথা বলতে চাই। নিশ্চিতভাবে, একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশই হবে এই প্রজন্মের মুখ্য চাওয়া।

তারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন চাইবে, খুলে দিতে চাইবে নিজের সম্মুখের সব দ্বার, বহির্বিশ্বের সঙ্গে পালল্গা দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিম লে মাথা উঁচু করে নিজেদের স্থানটি করে নিতে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই চাওয়াকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য তাদের নিজেদের কী করণীয়, তারা কি সেটা জানেন? সেটা নিয়ে কি তারা ভাবছেন? আমরা কি সেটা তাদের কাছে উপস্থাপন করেছি? নীতিনির্ধারণের সময় তাদের কি আমরা যুক্ত করছি? জাতীয় জীবনের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজে তরুণদের সংযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজ দৃষ্টি দিতে চাই আসন্ন নির্বাচনে তরুণদের কাছে জাতির প্রত্যাশার ওপর।

একটি ভোট শুধু একটি সরকার বদল করে না, সেই সঙ্গে একটি জাতির যাত্রার গতিপথ পরিবর্তন করে দিতে পারে। এমনকি, সম্মুখ যাত্রার পথ রুদ্ধও করে দিতে পারে। নিজের একটি ভোটের ক্ষমতা কত বিশাল তরুণ প্রজন্মকে তা অনুধাবন করতে হবে। এই বাংলাদেশে, ১৯৯১-এর নির্বাচনের ভোট যুদ্ধাপরাধীদের সরকারের অংশ হওয়ার সুযোগ করে দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পবিত্র রক্তে রঞ্জিত পতাকা তাদের খুনিদের গাড়িতে তুলে দেওয়ার পথ খুলে দেয়। কী দুঃখজনক এই ঘটনা! শুধু এবার নয়, ভবিষ্যতে এ দেশে আর কোনো ভোট যেন তেমন ভুলের ক্ষেত্র তৈরি করতে না পারে কোনোদিন, সে জন্য আজকের তরুণদের সচেতন করতে হবে। তরুণদের জানাতে হবে, তাদের হাতের একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বোঝাতে হবে প্রতিটি জনগণের হাতের এক একটি ভোট, শুধু সরকার নয়, সমাজ বদলের কত বড় হাতিয়ার।

তরুণ প্রজন্মকে তাই সঙ্গতভাবেই ভাবতে হবে, কীভাবে তারা তাদের হাতের ভোটটির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারেন। এর স্পষ্ট উত্তর পূর্বপুরুষের রক্তের প্রতি অনুগত থেকে ভোট দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে আজীবন থাকতে হবে। বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে যে শোষণহীন, বঞ্চনাহীন, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল দেশের স্বপ্ন দেখে আমাদের স্বজনরা অকাতরে দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন, সেই আদর্শই আমাদের পথ চলার বাতিঘর হয়ে থাকবে আজীবন। এর থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না কখনই, কোনো কারণেই। এই আদর্শের ভেতরেই থাকতে হবে স্বাধীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে।

একজন শহীদ সন্তান হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যুদ্ধাপরাধীদের দল বা তার সহযোগীদের বাক্সে নিজের পবিত্র আমানত হাতের ভোটটি তুলে দিয়ে তারুণ্য তার রক্তের ঋণের সঙ্গে বেইমানি করবে না, তারুণ্যের দ্রোহের যে গর্ব তাকে অপমান করবে না। তাই আমি দু-একটা স্লোগান এখানে উচ্চারণ করব, যা এখন খুব উচ্চারিত হচ্ছে রাজপথে ও ভার্চুয়াল মিডিয়াতে, যা আমার মনে হয়েছে তরুণদের জন্য খুব প্রযোজ্য। উচ্চারিত হচ্ছে, `তরুণ ভোটার প্রথম ভোট, স্বাধীনতার পক্ষে হোক`। স্লোগান উঠেছে, `আমার ভোট আমি দিবো, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দিবো`। আমার মনে হয় এই স্লোগান দুটোতে স্পষ্ট বলে দেওয়া আছে তরুণদের প্রতি জাতির আকাঙ্ক্ষার কথা।

এ দেশের সব আন্দোলনে তরুণরাই ছিলেন প্রথম সারির সৈনিক। `৫২, `৭১, `৯০- তাদেরই রক্ত ঝরেছে সর্বাধিক। তাদের পূর্বসূরি সব শহীদের পবিত্র রক্তের প্রতি অনুগত থেকে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে তরুণ ভোটাররা যুদ্ধাপরাধী, তাদের সন্তান অথবা তাদের আশ্রয় দেওয়া দল বর্জন করবেন- দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভোট দিয়ে, চলমান উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পথে থাকতে সাহায্য করে জাতির এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে তরুণরা তাদের পবিত্র দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবো।

 

বরগুনার আলো