• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

মৃতকে জীবিত করে যে কূপ!

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবর ২০১৯  

বাস্তবে, গল্পে বা বইয়ের পাতায় আমরা সবাই অলৌকিক কিছু গল্প পড়ে বা শুনে থাকি। কিছু কূপ সম্পর্কেও নিশ্চয়ই জেনেছেন! এমনই একটি কূপ, যার পানিতে মৃত ব্যক্তি পুনরায় জীবন ফিরে পেত। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক রাজা পরশুরামের র্নিমিত এই কূপ সর্ম্পকে-

কূয়ার ইতিহাস

জিয়ৎ কুন্ড নামে পরিচিত এ কূপটির নির্মাণ সম্পর্কিত কোনো সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে ঐতিহাসিকেরা মনে করেন, ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাজা পরশুরাম প্রসাদ নির্মাণের সময় কূপটি খনন করেন।

 

পরশুরামের প্রাসাদ

পরশুরামের প্রাসাদ

পরশুরাম প্রাসাদের ইতিহাস

পরশুরামের প্রাসাদটি মহাস্থানগড় ইতিহাসের অন্যতম দুর্দান্ত নিদর্শন। এটি ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ের সীমানা প্রাচীরের ঘেরের মধ্যে পাওয়া প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন। স্থানীয়ভাবে এটি হিন্দু রাজা পরশুরাম প্রাসাদ হিসেবে পরিচিত। পরশুরাম পুরাণে বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার ছিলেন। তিনি ত্রেতা যুগে উপস্থিত ছিলেন। পরশুরামের পিতা জামদগনি ব্রাহ্মণ হলেও মা রেণুকা ছিলেন ক্ষত্রিয়। কঠোর প্ররিশ্রম করে তিনি শিবের নিকট হতে পরশু লাভ করেছিলেন। 

১৯০৭, ১৯৬১ ও ১৯৯৫ সালে মোট তিন বার এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ পরিচালনা করে তিনটি নির্মাণ যুগের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা অনুমান করেন যে, দ্বিতীয় পর্বটি সুলতানি আমলে ১৫ শতকে নয়তো ১৬ শতকে নির্মাণ করা হয়েছিল। এছাড়াও, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময়কালে (১৮৩৫-১৮৫৩) দুটি মুদ্রা পাওয়া গেছে।

কূপের অবকাঠামো

জিয়ৎ কুন্ড অমর কূপ নামে বেশি পরিচিত। এ কূপটির উপরিভাগের ব্যাস ৩ দশমিক ৮৬ মিটার ও নিচের দিকে ক্রমহ্রস্বমান। এটি একটি চতুর্ভূজ গ্রানাইট পাথরের খণ্ডটি কূপের পূর্ব ধারে অবস্থিত। এই কূয়া পানি উত্তোলনের সুবিধার্থে ব্যবহার করা হতো বলে মনে করা হয়। কূপের তলদেশ পযর্ন্ত দুইটি সারিতে আরো অনেকগুলো প্রস্তরখন্ড আংশিক বাইরে রেখে দেয়ালের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করা হয়েছে। যেন সহজে কোনো কিছু উত্তোলন করা যায়।

 

মহাস্থানগড় ইতিহাসের অন্যতম দুর্দান্ত নিদর্শন কূপটি

মহাস্থানগড় ইতিহাসের অন্যতম দুর্দান্ত নিদর্শন কূপটি

মহিষাওয়ার কে?

মহিষাওয়ার মধ্য এশিয়ার বালখের একজন শাসক ছিলেন। তিনি ছিলেন বালখের শাসক শাহ আলী আসগারের পুত্র। পিতার মৃত্যুর পরে তাকে শাসক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তিনি তার রাজত্ব ছেড়ে দরবেশে পরিণত হন। ৪৪ এচ.ই. পুন্ড্রবর্ধনে আসার পরে তিনি প্রথমে বাংলার সন্দ্বীপে পৌঁছেছিলেন। তিনি সেখানে কয়েক বছর অবস্থান করেন। পরে তিনি পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানী মহাস্থানগড়ে চলে এসেছিলেন। 

কাল্পনিক কিছু কথা

কিংবদন্তি অনুসারে, বালখির শাহ সুলতান তার শিষ্যদের সঙ্গে একটি মাছের মতো আকৃতির নৌকায় ফকিরের পোশাক পরে মহাস্থানগড়ে এসেছিলেন। প্রথমদিকে পরশুরামের সেনাপ্রধান ও আরো কিছু লোক ইসলামের বাণী গ্রহণ করে মুসলমান হন। তবে রাজা পরশুরাম ও তার বোন শিলা দেবী তা গ্রহণ করেননি।

রাজা পরশুরাম শাহ সুলতানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা করেন। যুদ্ধের প্রথমেই শাহ সুলতান পরাজিত হয়। কারণ যুদ্ধ চলাকালীন শত্রুকে আক্রমণের সময় শাহ সুলতানের যোদ্ধাদের সংখ্যা কমলেও পরশুরামের যোদ্ধাদের সংখ্যা কমেনি। অপ্রাকৃতিক ও অলৌকিক কিছু শক্তির বলে এমনটি ঘটেছিল। যুদ্ধ চলাকালীন অনেক সময় পরশুরামের মৃত সৈন্যদের পুনরায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত।

পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে জানা যায়, জিয়ৎ কুণ্ড নামে একটি কূপ আছে যেটি অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। এই কূপটি মৃতকে জীবিত করতে পারে। রাজা পরশুরাম যখন শাহ সুলতান বালখী মহিষাওয়ারের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন তখন তিনি এই কূপের সাহায্যে মৃত সৈন্যদের পুনর্জীবিত করতেন।

 

রাজা পরশুরাম

রাজা পরশুরাম

কূপটির অলৌকিক ক্ষমতার পতন

শাহ সুলতান বালখী পরশুরামের কূপটি সর্ম্পকে জানতে পারে। পরবর্তীতে কূপটির অলৌকিক ক্ষমতা বিনাশের জন্য তিনি একটি ফ্যালকের সাহায্যে কূপের মধ্যে একটি গরুর মাংস ফেলে দিলেন। তারপর থেকে কূপের জলের অলৌকিক শক্তি অদৃশ্য হয়ে যায়। এ কারণে পরশুরাম শাহ সুলতান বালখী মহিষাওয়ারের কাছে পরাজিত হন।

শীলাদেবী ঘাটের উৎপত্তি

কাহিনী-কিংবদন্তী অনুযায়ী শীলাদেবী ছিলেন মহাস্থানগড়ের শেষ হিন্দু রাজা পরশুরামের কন্যা বা ভগ্নি। মুসলিম সাধক শাহ সুলতান বলখী (রঃ) মাহীসওয়ার কর্তৃক রাজা পরশুরাম পরাজিত হলে শীলাদেবী করতোয়ার এই স্থানটি পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেন। 

এই স্থানটি তাই শীলাদেবীর ঘাট নামে পরিচিত। অনেকেই শিলা দেবীর কাহিনীটি কিছু পণ্ডিত পুরাণ হিসেবে দেখেন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সেই সময় মহাস্থানগড়ে এক মাইলের মধ্যে অসংখ্য শিব লিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছিল। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সেখানে তাদের বার্ষিক পৌষ-নারায়ণী স্নান উযদাপন করতেন। এ উপলক্ষে হিন্দুরা মেলার আয়োজনও করতো।

বরগুনার আলো