• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সুস্থ থাকুন এই শীতে

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৮  

 

তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে, আরো কমে যাবে।শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে শহুরে জীবনেও। এ ঋতু পরিবর্তন শুধু যে কুয়াশা মোড়ানো সকাল আনে তা তো নয়, সঙ্গে আনে স্বাস্থ্যগত পরিবর্তনও। শীতের আবহাওয়া শুষ্ক, ধুলাবালির মাত্রাটাও কিছুটা বেড়ে যায়। এ কারণে স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। শীতের শুরুতেই জ্বর, সর্দি ও কাশি যেন আঁকড়ে ধরে। তবে বেশি বাড়ে শ্বাসতন্ত্রের রোগ। এসব রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে ভাইরাস।

সাধারণত ঠান্ডা ও ফ্লুর কারণে কাশি হয়। তবে অ্যালার্জি, অ্যাজমা, শুষ্ক আবহাওয়া, ধূমপান, এমনকি কিছু কিছু ওষুধ সেবনের ফলেও এ সমস্যা হতে পারে।

**সর্দি-কাশি বা কমনকোল্ডঃ 

শীতে সবচেয়ে বেশি যে রোগ হয় তা হলো সর্দি-কাশি, কমন কোল্ড বা ঠান্ডাজ্বর। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জার মাধ্যমে এ রোগ হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস, লালা, কাশি বা হাঁচি থেকে নিঃসরিত ভাইরাসের মাধ্যমে সর্দি-কাশির সংক্রমণ হয়। এর ফলে রোগীর জ্বর, গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে অসুবিধা, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে অনবরত সর্দি নিঃসৃত হওয়া, খুসখুসে কাশির সঙ্গে গলা, মাথা ও বুকে-পেটে ব্যথাও অনুভূত হয় । এ রোগে আক্রান্ত হলে বিশ্রাম, প্রচুর পানীয়, ফলের রস ও পানীয় গ্রহণ করতে হবে। খুব বেশি জ্বর, গলাব্যথা, কাশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।

**টনসিলের প্রদাহঃ 

শীতে গলাব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হলো এডিনয়েড, টনসিল বড় হওয়া বা প্রদাহ হওয়া। এর ফলে রোগীর গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে কষ্ট, জ্বর, নাক দিয়ে নিশ্বাস নেওয়া এবং ঘড়ঘড় শব্দ ইত্যাদি হতে পারে।এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করেও প্রতিরোধের চেষ্টা করা যেতে পারে।

**এ ছাড়া শীতের সময় অনেকে আবার সাইনোসাইটিসের সমস্যায় ভোগেন। শীতের সময় অনেকে আবার ফুসফুসের সংক্রমণের সমস্যায় ভোগেন। সাধারণত শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এগুলো বেশি দেখা যায়। শীতে এসব রোগের হাত থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

**কাশি দূর করার কার্যকর উপায়ঃ 

কুলকুচা: 

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা-চামচ লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করতে হবে। এক সপ্তাহ যাবৎ প্রতিদিন তিন বেলা করে কুলকুচা করবেন। এতে কফ, কাশি, গলাব্যথা—সবই খুব দ্রুত কমে যাবে। এটি খুবই কার্যকর একটি পদ্ধতি।

মধু:
এক কাপ লেবুমিশ্রিত চায়ের মধ্যে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। মধু কাশি কমাতে সাহায্য করে এবং গলাব্যথায় উপশম করে।

এ ছাড়া আদা চা, গরম পানি খাওয়া, গলায় ঠান্ডা না লাগানো নিয়মিত মেনে চললে কাশি দ্রুত ভালো হয়ে যায়।
এরপরও কাশি ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

***সর্দি-কাশিও হাঁপানি প্রতিরোধে করণীয়
১. ঠান্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করা
২. কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা উচিত।
৩. প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা। তীব্র শীতের সময় কান-ঢাকা টুপি পরা এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করা ভালো।
৪. ধুলাবালি ও ধূমপান এড়িয়ে চলা।
৫. ঘরের দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ না রেখে মুক্ত ও নির্মল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা।
৬. হাঁপানি রোগীরা শীত শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
৭. যাদের অনেক দিনের শ্বাসজনিত কষ্ট আছে, তাদের জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোকক্কাস নিউমোনিয়ার টিকা নেওয়া উচিত।
৮. তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা, যা দেহকে সতেজ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
৯. হাত ধোয়ার অভ্যাস করা। বিশেষ করে চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়া।
১০. সাধারণভাবে রাস্তায় চলাচলের সময় মাস্ক পরা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা এবং তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহার না করাই ভালো। তাজা ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

যাদের হাঁপানি বা অনেক দিনের কাশির সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস আছে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় তাদের কষ্টও বাড়ে। নিউমোনিয়াও এ সময় প্রচুর দেখা দেয়। তাই প্রত্যেকের প্রতিরোধমূলক জীবনযাপন করা উচিত।

এছাড়া শীতে সুস্থ থাকতে হলে কিছু খাবার প্রতিদিন গ্রহণ করা উচিত যা আপনাকে রোগ থেকে দূরে রাখবে। এমন কিছু ফল এবং শীতকালীন শাক -সবজি আছে যা আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। 

*আপেল

প্রবাদ আছে দিনে একটি আপেল খাও ডাক্তারকে এড়িয়ে চলো। আপেল হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধক। বাজারে লাল ও সবুজ দুই ধরণেরই আপেল পাওয়া যায়। দিনের মধ্যভাগে একটি আস্ত আপেল খেতে পারেন।

*কমলা

সারা বছর কমলা পাওয়া গেলেও এটি সাধারণত শীতকালীণ ফল। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরণের কমলা পাওয়া যায় বাজারে। ভিটামিন 'সি' সমৃদ্ধ কমলা আস্তও যেমন খেতে পারেন তেমনি জুস করেও খাওয়া যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা ফল আস্ত খাওয়ার পরামর্শ দেন।  কমলায় রয়েছে পটাসিয়াম ,ফ্লোরেট, মিনারেল এবং ফাইবার। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সর্দি কাশির মতো অসুখগুলো থেকে আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে।

*বাদাম ও ড্রাই ফুড

বেশিরভাগ বাদামে সিলিনিয়াম থাকায় এটি বিষন্নতা ও মানসিক স্বাস্থ সুরক্ষায় বেশ কার্যকর। শুকনো ফলে তাজা ফলের চেয়ে বেশি পুষ্টি থাকে। তাই শীতের এসময়টায় বেশি করে শুকনা ফল খাওয়া ভালো।

*ডার্ক চকলেট 

চকলেট খেলে মন ভালো হয়ে যায়। এতে চিনি থাকার কারণে এটা শরীরকেও উষ্ণ রাখে। তবে, অন্যান্য চকলেটের চেয়ে ডার্ক চকলেট ভালো। বছরের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে শীতের এ সময়টায় ডার্ক চকলেট খেতে পারেন অনায়াসেই।

*পালং শাক ও পীসঃ

শীতকালে এমনিতেই অনেক শাক-সবজি বাজারে পাওয়া যায়। এসব শাকের মধ্যে পালং শাক ও গ্রীনপিস অনেক বেশি পুষ্টিকর। এতে আছে উচ্চমাত্রার আয়রন যা রক্তশূণ্যতা প্রতিরোধ করে।

*গাজর

গাজরে আছে ভিটামিন বি, সি, ডি, ই এবং কে। এটি উচ্চমাত্রার ফাইবার, মিনারেল ও এন্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এর শেকড় হজম সমস্যার সমাধান করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এমনি টনসিলের মতো সমস্যাও দূর করে।

*মিষ্টি আলু

ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু পুষ্টিকর খাবারগুলোর একটি। শুধু তাই নয়, এটি ভিটামিন 'এ' ও 'সি' তে ভরপুর। এতে আরো আছে ম্যাঙ্গানিজ ও কপার। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মিষ্টি আলু রাখতে পারেন।

নিজের যত্ন নিন সুস্থ থাকুন। খেয়াল রাখুন বাচ্চা এবং বৃদ্ধদের দিকে। শীত উপভোগ করুন সুস্থ দেহে, সুস্থ মনে 


 

বরগুনার আলো