ইসলামের দৃষ্টিতে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব

‘তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।’ কেউ কেউ এটাকে হাদিস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী এটা সরাসরি হাদিস নয়, তবে এর অর্থ বিভিন্ন হাদিস দ্বারা সমর্থিত। আল্লাহ চরিত্র অর্জন বলতে বুঝানো হয়েছে তার ওই আখলাক, যা মানুষের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব তা অর্জন করা। যেমন ক্ষমা করা, দয়া দেখানো, ভালো কাজের প্রতিদান দেয়া ও সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদি।
আল্লাহ তায়ালার অন্যতম একটি গুণ হচ্ছে ন্যায় বিচার করা। তিনি নিজে ন্যায়পরায়ণ শাসক। জমিনে তার প্রতিনিধি মানুষকে তিনি ন্যায় বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন। ন্যায় বিচার শুধু মামলা-মোকাদ্দামার সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট নয়। বরং মানুষের আচার-ব্যবহারেরও রয়েছে ন্যায়-বিচার ও ভারসাম্য রক্ষার বিষয়। নিম্নে কোরআন ও হাদিসের আলোকে ন্যায় বিচারের গুরুত্ব ও এর প্রতিবন্ধকতাগুলো তোলে ধরা হয়েছে।
ইনসাফ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব
হজরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা.) বলেন, তিনটি গুণ যে অর্জন করতে পারবে তার ঈমান পূর্ণতা পাবে। ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা, মানুষকে সালাম দেয়া ও অস্বচ্ছলতায় থেকেও দান করা। (সহীহ বুখারী) ইনসাফের জন্য মানুষের দুটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হয় আমানতদারিতা ও ইখলাস। ইখলাস ও আমানতদারিতা থেকে বিচ্যুতি ঘটলে মানুষ কখনো ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না।
আল কোরআনেও বহু জায়গায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠার কথা এসেছে। আল্লাহ তায়ালা সূরা হাদিদে বলেন, ‘নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে নির্দশনাদি দিয়ে প্রেরণ করেছি এবং তাদের সঙ্গে নাজিল করেছি কিতাব ও মাপার পাল্লা, যেন মানুষ ন্যায় বিচার কায়েম করতে পারে।’(সূরা হাদিদ, আয়াত নং-২৫) অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন, যাতে মানুষ আকীদা-বিশ্বাস, আখলাক ও আমলের ক্ষেত্রে ন্যায়ের পথে চলতে পারে। শিথিলতা ও বাড়াবাড়ির রাস্তা পরিহার করে চলে। আর আল্লাহ তায়ালা পাল্লা দিয়েছেন যেন লেদদেন ও বেচাকেনায় কমবেশি না করে ইনসাফের রাস্তায় চলে। উভয়টি ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ মেজাজের বহিপ্রকাশ।
ইনসাফ ও ভারসাম্য রক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে অন্যত্র তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ আদেশ করেন ইনসাফ, মঙ্গলসাধন, ও আত্মীয়স্বজনকে দান করার এবং নিষেধ করেন অশ্লীলতা, মন্দ কর্ম ও সীমালঙ্ঘন থেকে।’ (সূরা নাহ্ল-৯০) আয়াতে তিনটি বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক. মানুষের আকীদা-বিশ্বাস, কাম-কাজ, স্বভাব-চরিত্র, লেনদেন, আবেগ-অনুভূতি সবই ন্যায় ও ইনসাফের মানদন্ডে নির্নিত হতে হবে, বাড়াবাড়ি বা শিথিলতার কারণে কোন দিক ঝুঁকে বা উপরে ওঠে যেতে পারবে না। কঠিন থেকে কঠিন শত্রুর সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রেও ন্যায়ের পাল্লা ফেলে দেয়া যাবে না। মানুষ নিজেকে নেকি কল্যাণের প্রতীক বানিয়ে অন্যের মঙ্গল কামনা করবে। ইনসাফেরও উর্ধ্বে ওঠে দয়া ও ক্ষমা এবং সহানুভূতি ও সমবেদনার অভ্যাস গড়বে। তিন. আত্মীয়স্বজনের হক আদায় করা।
সূরা হুজরাতে বলা হয়েছে, ‘যদি মুসলমানদের দুদল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়ে , তবে তোমরা তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দাও। অত:পর যদি ওদের একদল অন্য দলের উপর চড়াও হয় তাহলে তোমরা সকলে সেই চড়াওকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর বিধানের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে, তবে উভয় দলের মাঝে ন্যায়ের সঙ্গে বিচার করে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন। (আয়াত নং-৯)
সহীহ বুখারীতে এসেছে নবী করিম (সা.) বলেন, সাত শ্রেণির লোক হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের ছায়া পাবে। প্রথম শ্রেণি হচ্ছেন ন্যায়পরায়ণ শাসক। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, যারা দুনিয়াতে ন্যায় বিচার করে হাশরের ময়দানে তারা আল্লাহর সামনে মনিমুক্তার মিম্বারের উপর বসবে।’ (সুনানে নাসায়ী)
ইনসাফ প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা
ইনসাফ যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলোও তেমন জটিল। কোরআনের ভাষায় মৌলিকভাবে দু’টি কারণে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা থেকে বিচ্যুত হয়-
স্বজনপ্রীতি ও ভালোবাসা
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ইনসাফের পূর্ণ প্রতিষ্ঠাকারী, আল্লাহর জন্য সাক্ষ্য প্রদানকারী হয়ে যাও, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা (তোমাদের) মাতাপিতা ও আত্মীয়স্বজনের বিপক্ষে হয়। অতএব তোমরা ইনসাফ করার বিষয়ে অন্তরের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না।’ (সূরা নিসা, ১৩৫) উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদানকারী ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যদি নিজেদের, পিতামাতা ও নিকটাত্মীয়র বিপক্ষে গিয়েও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাও করতে হবে। মুফাস্সিরগণ বলেন, একথা বলার কারণ হচ্ছে, মানুষকে সতর্ক করা। কারণ, এদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়েই মানুষ ইনসাফের পথ থেকে বিচ্যুত হয়। যদিও এখানে কিছু শ্রেণির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু এর মূল বিষয় হচ্ছে পারস্পরিক সম্পর্ক। অর্থাৎ সম্পর্কের কারণে মানুষ ইনসাফের পথ থেকে সরে আসে, যাকে স্বজনপ্রীতি বলা হয়।
বর্তমানে স্বজনপ্রীতি মহামারির রূপ নিয়েছে। আদালত, প্রশাসন, রাজনীতি ও সামাজিক সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে মানুষ নিজের লোকদেরকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে মানুষ ইনসাফ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হজরত আলী (রা.) এর ঘটনা ইতিহাসের গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। একজন ইহুদি হজরত আলী (রা.) এর তরবারি নিয়ে মামলা দায়ের করে। আলী (রা.) এর পক্ষে সাক্ষী ছিলেন নিজের দুই ছেলে। কাজি মামলা খারেজ করে ইহুদির পক্ষে রায় দেন। কারণ পিতার পক্ষে সন্তানের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ কাজি ও হজরত আলী (রা.) মাঝে ধর্মীয় দিক থেকে সম্পর্ক ছিল। কারণ দু’জনেই মুসলমান। তাছাড়া তিনি ছিলেন খলিফাতুল মুসলিমিন। ইহুদি এই ন্যায় বিচার দেখে মুসলমান হয়ে যায়।
বিদ্বেষ ও শত্রুতা
হিংসা বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে মানুষ সুবিচারের পথ থেকে সরে আসে। আল্লাহ তায়ালা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আর কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদের সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করো, এটাই তাকওয়ার বেশি নিকটবর্তী।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত নং-৮) তাকওয়া অর্জনের অনেক মাধ্যম রয়েছে। তবে শত্রু-মিত্র সকলের সঙ্গে ইনসাফ করা, এক্ষেত্রে শত্রুতা-মিত্রতার ভাবাবেগে পরাভূত না হওয়া এই স্বভাবই তাকওয়া হাসিলের সর্বাধিক শক্তিশালী ও নিকটতম উপায়। আল্লাহ তায়ালা সকলবে সুবিচার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
- সামুদ্রিক মাছের অবিশ্বাস্য পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- ছোট ঘরকে বড় দেখাতে সাজিয়ে ফেলুন এই পদ্ধতিতে
- কৃষিভিত্তিক সব উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার
- মুজিববর্ষে বৃক্ষরোপণের নামে ‘বনবন্ধু’ সেজে মহাপ্রতারণা
- বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ আমদানি করতে চায় ভুটান
- জিয়ার খেতাব প্রত্যাহার করাই উচিত: নৌ প্রতিমন্ত্রী
- ছাত্রলীগে বিশৃঙ্খলাকারীর স্থান নেই: জয়
- আন্দোলন প্রত্যাহার ববির শিক্ষার্থীদের
- আমেরিকা থেকে দেশে এসে টিকা নিয়েছেন অনেকে: শামীম ওসমান
- হালুয়া নানা স্বাদে
ছোলার ডালের বরফি - সাত কলেজের পরীক্ষা চলবে: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৫, শনাক্ত ৪২৮
- পুরোনো তথ্যচিত্র এডিট করে তৈরি হচ্ছে আলজাজিরার নতুন পর্ব!
- টিকা নিলেন শেখ রেহানা
- শখের ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল চাষে সাফল্য
- পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অধিদফতর করার সুপারিশ
- আল-জাজিরার প্রতিবেদন ভিত্তিহীন দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের
- কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে সাধারণ মানুষও চিকিৎসা পাবেন: আইজিপি
- রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মোমেন-ব্লিনকেন ফোনালাপ
- জনগণ ভালোবেসে আমাদের সরকার গঠনের সু্যোগ দিয়েছে: কাদের
- করোনা প্রতিরোধী টিকা নিলেন তাহসান
- দেশে টিকা নিলেন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ
- সাত কলেজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত সন্ধ্যায়
- কোপা আমেরিকা থেকে সরে দাঁড়ালো কাতার-অস্ট্রেলিয়া
- টিকায় অ্যান্টিবডির ভালো ফল মিলছে
- উত্তরবঙ্গে নির্বাচনি সফরে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা
- র্যাবের অভিযানে মাদারীপুরে একজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- ইকুয়েডরে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ৬২
- নতুন ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের বিমান দেশে আসছে আজ
- ইব্রাহিম খালেদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির শোক
- বিদ্রোহী প্রার্থীর পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা করছে আ’লীগ
- মঙ্গলগ্রহের যেসব স্থানে বাড়ি তৈরি করা যাবে
- বরগুনায় স্বামীকে হত্যার কথোপকথনের রেকর্ডিং পরকীয়া প্রেমিকের ফোনে
- উপবৃত্তি পাচ্ছে দেড় কোটি শিক্ষার্থী
- আল জাজিরার জ্বলুনি কোথায়?
- নুর বিএনপির দাবার গুটি
- বিদেশ যেতে ইচ্ছুক স্বল্প শিক্ষিতরাই ছিল তাদের টার্গেট
- ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন কৃমি
- লঞ্চে অসামাজিক কার্যকলাপ, ৯৬ নারী-পুরুষ গ্রেফতার
- আল-জাজিরায় সাক্ষাৎকারের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন মুন্না
- চলন্ত বাস হতে অস্ত্রসহ ডাকাত দলের ৭ জনকে আটক করেছে র্যাব-৮
- আল জাজিরার বিরুদ্ধে মামলা করবে সরকার
- ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান শুরু এ মাসেই: সেতুমন্ত্রী
- গদখালিতে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রির সম্ভাবনা
- এইচএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে রোববার
- ভারতে জলোচ্ছ্বাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪, নিখোঁজ ১৭০
- ‘গণমাধ্যমের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’
- ফের বেপরোয়া রিজভী
- বরগুনার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আলাদা নজর আছে: নানক
- বিতর্কিত সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান জামায়াতের নিয়োগকৃত লবিস্ট