• শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩০

  • || ০৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
মহামারী ঠেকাতে বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব শান্তিতে বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা জাতিসংঘে এখনও নারী মহাসচিব হননি, আক্ষেপ শেখ হাসিনার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইএইএ`র মহাপরিচালকের বৈঠক বাংলাদেশ কখনও ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি : প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে দ্রুত বৈশ্বিক পদক্ষেপের আহ্বান রাষ্ট্রপতির কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবায় বৈশ্বিক সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এবার বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফর ভোট দিলে এদিকে না দিলে ওদিকে দেশে কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না: শেখ হাসিনা মানুষ যেন ভোট দেয়, সেই পরিবেশ তৈরি করুন- প্রধানমন্ত্রী আবারও ক্ষমতায় এলে দেশে কাঁচা রাস্তা থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সংকটেও দেশে খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত : প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণকে আরো সম্পৃক্ত করতে হবে বাংলাদেশে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপির আমলে দেশের অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়েছিল: প্রধানমন্ত্রী বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়েছিল

লোগোতে বঙ্গবন্ধুর হাসিমুখ ফোটানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ- সব্যসাচী

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২০  

বঙ্গবন্ধু নামটি উচ্চারিত হলে একদিকে চোখের সামনে শত্রুকে হাত উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি, দৃপ্তকণ্ঠে ‘মাই পিপল’ কিংবা শক্ত চোয়ালে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো বিশালদেহী নেতার চেহারা মানসপটে ভেসে ওঠে, আরেকদিকে তার সহাস্য স্নেহময় মুখও আমাদের চিরচেনা। বঙ্গবন্ধুর এই চির আপন দুই ইমেজের মাঝে কোনটিকে বেছে নেওয়া হবে তার শতবর্ষ উদযাপনে, সেটাই ছিল প্রশ্ন। এরপর অনেক বিবেচনা শেষে ঠিক হয়, স্বাধীন সোনার বাংলার আপামর মানুষের অর্জন শতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর হাসিমুখটাই সবচেয়ে সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হবে। তাই বঙ্গবন্ধুর হাস্যোজ্জ্বল প্রতিকৃতিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আর লোগোর ছবিটি নির্বাচনে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা নিজেই।

কথাগুলো বলছিলেন শিল্পী সব্যসাচী হাজরা, যিনি এই ঐতিহাসিক উদযাপনে বছরজুড়ে যে লোগো ব্যবহার হবে সেটির শিল্পী। লোগো তৈরির সময়, ভাবনা এবং প্রক্রিয়া নিয়ে তার সাথে আলোচনা।

লোগোটি বানাতে গিয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল?

সব্যসাচী হাজরা: বঙ্গবন্ধুর হাসিমাখা মুখটা ফুটিয়ে তোলা। শুরুর গল্পটা বললে বুঝতে সুবিধা হবে। বঙ্গবন্ধুর হাসিমুখের উপস্থিতি সকলেই আশা করছিলেন। যে ছবিটি চূড়ান্ত করা হয় সেখানে কোনও এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার মাঝে বঙ্গবন্ধু একপাশে তাকিয়ে কারও সঙ্গে চোখাচোখি করে হাসছিলেন, স্বতঃস্ফূর্ত হাসি।  উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে হাসিমুখের এই ছবিটি নিয়েই আমাকে কাজ করতে বলা হয়। এই ছবিটি খুব সুন্দর হলেও ততটা পরিচিত নয়। রেজুলেশন কম থাকায় রূপান্তরিত করার জন্য একে লাইন ধরে ধরে কাজ করতে হয়েছে।

তারপর সেখান থেকেই এটি হলো?

সব্যসাচী হাজরা: না, এত সহজও ছিল না। আমি মিনিমাম লাইনে আঁকতে চেয়েছি। সঙ্গে কালার গ্রেডিয়েশনও আছে। আবার অক্ষর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৬০/৭০ দশকের সংবাদপত্রে ব্যবহৃত শিরোনামের ব্লকের যে ধরন সেখান থেকে ফন্ট তৈরি করা হয়েছে। অনেক ফন্ট দিয়ে ‘মুজিব’ লিখে দেখেছি, শেখ মুজিবকে অন্য কোনও ফন্ট দিয়ে ঠিক ধরা যায় না। হাতে লিখলে হয়তো নান্দনিক হবে কিন্তু শেখ মুজিবকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা যাবে না। কেবল হাসিটা আসছে না বলেই এক সপ্তাহ সময় নেওয়া হয়েছে। যে হাসিটা সেটা ভীষণ স্বতঃস্ফূর্ত, এই হাসিটাই প্রয়োজন। অনুজপ্রতিম শিল্পী আরাফাত যত্ন করে রেখার আঁচড়ে হাসিটি ফুটিয়ে তোলেন। এছাড়াও আরও কয়েকজন শ্রদ্ধাভাজন শিল্পী ও সংশ্লিষ্ট অনেকের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।

লোগো ব্যবহারে এত নিয়ম কেন?

সব্যসাচী হাজরা: নিয়মটা দরকার। লোগোর ব্যবহারে যেন নান্দনিক উপস্থাপন নিশ্চিত হয় সে কারণে কিছু নির্দেশনা জরুরি ছিল, যা আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে। যেকোনও লোগো তৈরির ক্ষেত্রে কতগুলো কারিগরি বিবেচনা মাথায় রাখতে হয়। উদযাপন কমিটির পরিকল্পনাটি ছিল এরকম—এই লোগোটি সবচেয়ে বড় আকারে বিমান ব্র্যান্ডিং থেকে শুরু করে কোটপিনের মতো ছোট পরিসরে পর্যন্ত ব্যবহার করা হবে। ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডে কিংবা বহুবার পুনর্মুদ্রণ করা হলেও লোগোর মূল ডিজাইন যেন অটুট থাকে, তেমন একটি কম্পোজিশনই আমাদের তৈরি করতে হয়েছে। রঙটাও আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা।

সব্যসাচী হাজরার হাতে তৈরি হলো মুজিব-শতবর্ষ লোগো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদনের পর এই লোগোটিই বছরজুড়ে ব্যবহার হবে উদযাপনে।

যখন কাজটা ধরলেন তখন কী ভাবছিলেন? প্রস্তুতির জন্য কী করছিলেন?

সব্যসাচী হাজরা: তখন অলরেডি পোস্টারের কাজ হচ্ছিলো। কেন্দ্র থেকে সারাদেশে পোস্টার যাবে। নামি শিল্পীরা কাজ করছেন। কিন্তু যখন কিনা লোগোটা করার ব্যাপার এলো তখন বেশ মুশকিল হয়ে দাঁড়ালো। বঙ্গবন্ধু বিতর্কের ঊর্ধ্বে একজন মানুষ এবং সকল বাঙালির মনে তার একটি স্বতন্ত্র ছবি তৈরি হয়ে আছে। সে ছবি অনেক আবেগের। আমি ’৭১ দেখিনি, ’৭৫ দেখিনি, এসব সময় পার করে আমার জন্ম। এই কাজটি আমার পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানোর একটি দুর্লভ সুযোগ বলে মনে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক শিল্পী কাজ করেছেন। এই কাজের আগে সবার কাজগুলোই আমি খুব যত্ন নিয়ে দেখছিলাম। অবচেতনে তাদের কাজের একটা প্রভাব আমার ওপর অবশ্যই ছিল।

রঙের ব্যবহারটার আলাদা অর্থ আছে কি?

সব্যসাচী হাজরা: নিশ্চয়ই। পোট্রেটের মধ্যে একটা গ্রেডিয়েন্ট আছে, অনেকগুলো কালার মিশিয়ে ছোপ ফেললে যেমনটা হয়। শুধু কালোর ব্যবহারে শোক মনে হয়, উদযাপনটা আসে না। আর অক্ষর বিন্যাসে ৬০-৭০-এর দশকে সংবাদপত্রে ব্যবহৃত অক্ষর, লাল কালোতে। লালটা আন্দোলন-সংগ্রামের চিহ্ন বহন করে। সোনালি দিয়ে হানড্রেড লেখা হয়েছে উদযাপনের আমেজ আনতে। এতদিন লোগো এঁকেছি নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের জন্য, কিন্তু এটাতো ১৬ কোটি মানুষের জন্য। এ কারণেই লোগোতে সর্বজনীন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্রত্যেক বাঙালির কাছে অনেক বেশি আপন, অনেক বেশি নিজের। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ ধরনের আইকনিক কাজ করা এ কারণেই অনেক বেশি সহজ, একইসঙ্গে অনেক বেশি কঠিন। কাজটি করতে গিয়ে আমি অনেকটাই আগেবপ্রবণ ছিলাম এবং আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাটি করেছি।

বরগুনার আলো