• বৃহস্পতিবার   ২৩ মার্চ ২০২৩ ||

  • চৈত্র ৮ ১৪২৯

  • || ২৮ শা'বান ১৪৪৪

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুই ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে গুচ্ছগ্রাম করেন ৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ে বিএনপি সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি: প্রধানমন্ত্রী দুঃখী মানুষের মুখের হাসিই বড় প্রাপ্তি: প্রধানমন্ত্রী ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় খালেদা জিয়া ঘুমিয়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর দেশে কোনো মানুষ ঠিকানাবিহীন থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী আমরা যুদ্ধ ও আগ্রাসন সমর্থন করি না: শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটির যাত্রা শুরু নতুন বাজার খুঁজে বের করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়াঙ্গনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি ভারতকে চট্টগ্রাম ও সিলেট বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব জনগণ বিএনপি-জামায়াতকে আর ক্ষমতায় আসতে দেবে না: প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জনগণের সুস্বাস্থ্য অপরিহার্য পূর্বশর্ত বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ধরতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব: প্রধানমন্ত্রী মৈত্রী পাইপলাইন জ্বালানি নিরাপত্তায় সহযোগিতা বাড়াবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ক্রস পার্টি সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ দেশীয় সংস্কৃতির উপাদান দেশবিদেশে ছড়িয়ে দিতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান শিশুদের মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠতে হবে: প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা রমজানে নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি গর্হিত কাজ: প্রধানমন্ত্রী

যে দোকানে ১০ টাকায় মেলে গরুর মাংস, ৪৫ টাকায় ইলিশ

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩  

মধ্য আর নিম্ন আয়ের মানুষের যখন চাল-ডাল কিনতেই হিমশিম অবস্থা, তখন গরুর মাংস আর ইলিশের কল্পনা করাও যেন বাতুলতা। মন চায়, স্বাধ জাগে, তবে কুলায় না সাধ্যে। বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক দুর্দশার এমন সময়ে একটি দোকানে মিলছে ২ টাকার চা পাতা, ১ টাকার লবণ, ৪৫ টাকায় ৩ পিস ইলিশ মাছ, ১০ টাকায় চাকের মধু।

এমনকি ওই দোকানে ১০ টাকায় মিলছে কয়েক পিস গরুর মাংস, ৫ টাকায় ছোট কাপে কোমল পানীয়।

মধ্য ও নিম্নবিত্তরা প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প টাকায় বাজার করতে পারবেন দোকানটিতে। পাটওয়ারী স্টোর নামের দোকানটির অবস্থান দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার ট্রান্সমিটার মোড় সংলগ্ন গলিতে। এটির মালিক শাহাদাত হোসেন জুয়েল।

জুয়েল জানান, শুধু ব্যবসা নয়, মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়ে কাজ করছেন। এর আগে ২০১৯ সালে করোনার আগে যখন পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বি হয়ে উঠেছিল, তখন হালিতে পেঁয়াজ বিক্রি করে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি।

দোকানের কোনো সাইনবোর্ড নেই। তবে ট্রান্সমিটার মোড় এলাকায় যে কাউকে জুয়েলের মুদি দোকান কোথায়, জানতে চাইলেই পাওয়া যায় পাটওয়ারি স্টোরের ঠিকানা। দোকানটি নিয়ে এলাকাবাসীও উচ্ছ্বসিত। নিঃসংকোচে দোকানটি থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য অল্প দামে কিনতে পেরে এলাকাবাসী তাদের আনন্দের কথা জানালেন।

কলেজ ছাত্র ইশতিয়াক জানান, বিগত তিন বছর ধরে গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করছে দোকানটি। এলাকায় নিম্ন আয়ের লোকজনের কাছে দোকানটি আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা কম টাকায় টিফিনের খাবার কিনতেও দোকানটিতে ভিড় করছে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে গিয়ে দেখা যায় মোহাম্মদ জুয়েলের কর্মযজ্ঞ। কোনো কর্মচারি নেই। নিজেই বিভিন্ন পণ্যের ছোট ছোট প্যাকেট করছেন। ওজন মেপে দাম বসিয়ে দোকানের সামনে ট্রেতে রাখছেন। একইভাবে মাংস ও মাছ কেটে ফ্রিজে রাখছেন। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ফ্রিজ থেকে বের করে দিচ্ছেন।

দোকানের বিভিন্ন স্থানে লেখা- ‘প্রয়োজন যতটুক, কিনুন ঠিক ততটুকুই, নো প্রবলেম।’ ‘চাহিদা অনুযায়ী সকল পণ্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বিনা সংকোচে বিক্রয় করা হয়। নো প্রবলেম’।

দোকানে প্যাকেট করে সাজানো রয়েছে ৫ টাকার শুকনা মরিচ, ৫ টাকার ডাল, ২ টাকার কাঁচামরিচ, ১০ টাকার সয়াবিন তেল, ৫ টাকায় দুই পদের ডাল। মোজো, সেভেন আপ থেকে শুরু করে সব ধরনের কোমল পানীয়, দুধ, জুস ও চা ৫ টাকায় পান করার ও সুযোগ আছে।

মোহাম্মদ জুয়েল জানান, ডিম আর সিগারেট ভেঙে বিক্রি করতে পারছি না। এটি সমস্যা। অনেকেই মজা করে বলছেন, ভাই ৫ টাকার ডিম দেন।

তিনি বলেন, হিসাব করে দেখেছি, চারজনের পরিবারের তিনদিনের খাবার খরচ বাবদ প্রতিদিন দেড় থেকে ২০০ টাকার পণ্য কিনতে হয়। কিন্তু অনেক দোকানে ১ লিটার সয়াবিন তেল বা প্যাকেট ছাড়া চিনি, লবণ দেয় না। যারা দিন এনে দিন খায় তাদের জন্য আসলে স্বল্প পরিমাণ বাজার করা অসম্ভব। অনেকেই টাকার অভাবে বড় মাছ বা মাংস কিনতে পারেন না। অথচ তাদের একবেলায় অল্প পরিমাণ মাছ, মাংস লাগে। এসব চিন্তা থেকে মূলত এভাবে ব্যবসা করছি। কর্মচারি না রেখে, দোকানে যখন ক্রেতার আনাগোনা কম থাকে তখনই পণ্যকে অল্প পরিমাণে প্যাকেট করি।

উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে ভাইয়ের মুদি দোকানে সময় দিতে থাকেন জুয়েল। ২০০৬ সালে চেষ্টা করেন অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার। তবে সেটা না হওয়ায় মুদি দোকানে মনোনিবেশ করেন এই ব্যবসায়ী।

প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য কিনলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও পরিবর্তন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে বেশি পণ্য কিনে অপচয় করেন। কিন্তু এভাবে পণ্য কিনলে অপচয় কমবে। মানুষ ও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে। এভাবে বাজার করা নিয়ে অনেকেই হয়তো টিটকিরি, হাসি মশকরা করে। প্রতিদিনের বাজার প্রতিদিন করার মধ্যে লজ্জার কিছু নেই।

বরগুনার আলো