• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

১৭ বছর পর বরগুনায় যুবলীগের সম্মেলন, শীর্ষ পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২১  

২১ ডিসেম্বর বরগুনা জেলা যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছে আওয়ামী যুবলীগ। সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণে বরগুনা সফর করছেন। প্রস্তুতি বৈঠকও করেছে জেলা যুবলীগ। দীর্ঘ ১৭ বছর পর অনুষ্ঠেয় সম্মেলনকে ঘিরে পদপ্রত্যাশী নেতারা ইতোমধ্যে কেন্দ্রে লবিং তদবির শুরু করেছেন। শহরজুড়ে সাঁটিয়েছেন শুভেচ্ছা পোস্টারও।

জেলা আওয়ামী যুবলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে সবশেষ জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে অ্যাডভোকেট কামরুল আসহান মহারাজকে সভাপতি ও সাহাবুদ্দিন সাবুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই কমিটি দীর্ঘ ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করে। ১৭ বছর ফের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর বরগুনার বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ২৬ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এক সপ্তাহ সময়সীমা নির্ধারণ করে বরগুনা জেলা যুবলীগের পদপ্রত্যাশীদের কেন্দ্রীয় দপ্তরে থেকে জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়। চার দিনে বরগুনা জেলা যুবলীগের পদপ্রত্যাশী ২৪০ জন জীবনবৃত্তান্ত কেন্দ্রে জমা দেন।

গত ১ ডিসেম্বর বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি সম্পাদকের কাছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২১ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ জানানো হয় এবং এ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরই শীর্ষ দুই পদের জন্য নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। কেন্দ্রে লবিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিশালাকৃতির ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটাতে শুরু করেছেন।

জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, এবার কমিটির শীর্ষ দুই পদপ্রত্যাশীদের অনেকেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

এদের মধ্যে সভাপতি পদপ্রত্যাশী বর্তমান জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, সহসভাপতি রেজাউল করিম এ্যাটম ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। সাহাবুদ্দিন সাবু পেশাদার রাজনীতিবিদ। তিনি ছাত্রজীবনে কলেজ ও জেলা ছাত্রলীগের পদস্থ নেতা ছিলেন। এরপর দীর্ঘ বছর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো ক্ষমতার চর্চা ও অনৈতিক কোনো কার্যক্রম অথবা সংগঠন পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ নেই।

২০০৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবুল কালাম আজাদ। ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই কমিটির তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর দীর্ঘ সময়ে জেলা যুবলীগের কমিটি না হওয়া কার্যত তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। রেজাউল কবির এ্যাটম ২০০৫ সালের কমিটিতে তিনি জেলা যুবলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সভা সমাবেশে জেলা যুবলীগে পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।

সভাপতি পদপ্রত্যাশী জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সাবু বলেন, আমি পেশাই রাজনীতি। এর বাইরে আমার আলাদা কোনো পেশা নেই। ১৯৮৮-৯০ সালে বরগুনা পৌর ছাত্রলীগের ৮নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষে আমি কলেজছাত্র সংসদের ছাত্রলীগ মনোনীত ভিপি ছিলাম। এ ছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সদস্য থেকে শুরু করে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২০০১ সালের জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছরে দলের পক্ষে লড়তে গিয়ে মামলা হামলার শিকার হয়ে জেল, ডিটেনশন ও ওয়ান ইলেভেনের সেনা শাসকদের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার গোটা পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি ব্যক্তি জীবনে দলের স্বার্থ ছাড়া ব্যক্তি স্বার্থে কোনো কিছুই করিনি। রাজনীতি করতে গিয়ে আমাদের তিন ভাইকে একসঙ্গে জেলে যেতে হয়েছে।

তিনি বলেন, যুবলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। আমার অস্তিত্ব মিশে আছে এখানে। আমি যেভাবে বিগত দিনে নেতৃত্ব দিয়েছি, আশা করি নতুন কমিটিতে যুবলীগ আমায় যোগ্য মূল্যায়ন করবে।

আরেক সভাপতি পদপ্রত্যাশী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষে যুব রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় কেটেছে। সম্মেলনে আমি যোগ্য পদ পাব বলে আশা রাখি।

রেজাউল করিম অ্যাটম বলেন, আমি দায়িত্ব চাই। পদ পেলে ঝিমিয়ে পড়া জেলা যুবলীগকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাব।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবলীগের সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুল আজাদ রিপন, বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরিষামুড়ি ইউপির চেয়ারম্যান ইমাম হাসান শিপন, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন মোল্লা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুনাইদ জুয়েল, সাবেক ছাত্রনেতা শাওন তালুকদার, মাহমুদুল বারী রনি, রানা তালুকদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন রাসেল, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান রকিব ও বর্তমান যুবায়ের আদনান অনিকসহ আরও অনেকে। সাধারণ পদপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা প্রায় প্রত্যেকেই রাজনীতিতে ক্লিন ইমেজে ধরে রেখেছেন। এদের মধ্যে ইমরান হোসেন রাসেলের পিতৃকুল আওয়ামী পরিবারের থাকলেও তিনি জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লার মেয়ে বিয়ে করে বিপাকে আছেন।

জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীরের ছেলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী যুবায়ের আদনান অনিক বলেন, দীর্ঘ সময় নেতৃত্বে থেকে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেছি। এখন যুব রাজনীতিতে নিজেকে যুক্ত করে এ ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করে যেতে চাই।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আকতারুজ্জামান রকিব বলেন, চার বছর জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছিলাম। এরপর দলীয় প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সক্রিয় থেকে রাজনীতিতে যুক্ত আছি। আমি দায়িত্ব পেলে জেলার আদর্শিক সংগঠন যুবলীগকে জেলায় আরও সংগঠিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করব।

সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সুবল তালুকদারের ছেলে শাওন তালুকদার বলেন, ২০১০ সালে জেলা ছাত্রলীগের তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করার পর ওই কমিটি দিয়ে পাঁচ বছর চলে গেছে। ওই সময়ে আমরা পদবঞ্চিত হয়েও হাল ছাড়িনি। দলের জন্য নিরন্তর কাজ করে আসছি।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট জুনাইদ জুয়েল বলেন, ক্ষমতা নয় দায়িত্ব নিতে চাই। কেন্দ্রীয় নেতারা দায়িত্ব দিলে প্রিয় মুজিবের আদর্শ বাস্তবায়ন করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাব।

জেলা আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান সভাপতি ও পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ ও পরামর্শে আওয়ামী যুবলীগের বরগুনা জেলা শাখার সম্মেলনকে ঘিরে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। যুবলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। আমি দীর্ঘ সময় এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছি। আমার আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যুবলীগ। আমি চাই এই সংগঠনে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তারাও একইভাবে সংগঠনকে ভালোবেসে এর সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখে দেশ জাতীর স্বার্থে রাজনীতি করবেন।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন, যুবলীগ একটি আদর্শিক সংগঠন। এখানে লবিং তদবির কোনো কাজে আসে না। যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতা নির্বাচিত করা হবে। হাইব্রিড ও বিতর্কিতদের এই দল করার কোনো সুযোগ নেই। ত্যাগী যোগ্য ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন নেতৃত্বই আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে।

বরগুনার আলো