• বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১২ ১৪৩০

  • || ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন কাল পর্যটন শিল্পের প্রসারে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ট্রেনে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের জনসভায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়ার ভেতর দিয়েই শিশুর সামাজিকীকরণ ঘটে: প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় ভাষণের ৪৯তম বার্ষিকী আজ তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগে জনগণকে সম্পৃক্ত করার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির বিশ্বের ৩৫তম অর্থনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ চুরি করা অর্থ দিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী বিএনপি কি আসলেই নির্বাচন চায়, তাদের নেতা কে: প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী আগামী প্রজন্মের জন্য সমুদ্রগুলো যেন সমৃদ্ধির উৎস হয়ে থাকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে বাংলাদেশ পুতুলের রাজনীতিতে আসার বিষয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, জনগণ সঠিকভাবে ভোট দেবে: শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণই তাদের ‘স্যাংশন’ দিয়ে দেবে: প্রধানমন্ত্রী কোরআন পোড়ানো নিয়ে শেখ হাসিনার নিন্দা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হলে বাংলাদেশও নিষেধাজ্ঞা দেবে: প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি ছাড়া দেশকে কিছুই দিতে পারেনি বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায় ভিয়েতনাম

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে বরগুনায়ই প্রথম উত্তাল হয়ে উঠে

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২৩  

বরগুনা প্রতিনিধিঃ কলংকিত, রক্তাক্ত ১৫ই আগস্ট সর্বকালের শ্রেষ্ঠসন্তান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠা সাগরপাড়ের বরগুনা জেলার বাজরের জ্ঞানরঞ্জন ঘোষের সেই বাড়িটি কালের স্বাক্ষি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে আজও।

বরগুনা শহরের বাজার রোডের বাবু জ্ঞানরঞ্জন ঘোষের ঐতিহ্যবাহী টিনশেড বাড়িটি কালের স্বাক্ষি হিসেবে আজো অনেকটা জরাজীর্ণ অবস্থায় টিকে আছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তৎকালিন এবাড়িটি ছিল স্বাধীনতাকামী মুক্তিপাগল সমমনাদের বিচরণের একমাত্র ঠিকানা। বিশেষ করে ১৯৬৯/৭০/৭১ এ প্রতিদিন সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা-রাত এক কথায় প্রতিটি মূহুর্তই এই বাড়িটি উন্মুক্ত ছিল আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপসহ সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সমাগম।

বাবু জ্ঞানরঞ্জন ঘোষ স্বাধীনচেতা গণমানুষের একান্ত আপনজন হওয়ায় তিনি কোনদিন কারো কাছে ঘরভাড়া দাবী করেননি। তিনি ছিলেন তৎকালীন বরগুনা মহকুমা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং দানশীল ব্যাক্তি যার অবদানে বরগুনা সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বছরের পর বছর বাবু জ্ঞানরঞ্জন ঘোষের এই বাড়িটিকে কেন্দ্র করেই দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আন্দোলন সংগ্রাম।

ঐদিনে বরগুনা শহর নিয়ন্ত্রন ও সর্বাক্ষনিক  যোগাযোগ রেখেছেন তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর কবীর। এছাড়াও হত্যার প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সুভাল কৃষ্ণ তালুকদার, নন্দন তালুকদার, প্রায়ত স্বপন কুমার সরকার, প্রায়ত মানিক মন্ডল, টিও জাহাঙ্গীর। ছাত্র ইউনিয়নের ছিলেন প্রায়ত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, এস এম নজরল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা পান্না, আবুল হোসেন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ গোলাম রব, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন শীল, বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মোতালেব, মালেক খানসহ আরো অনেকে।

সেদিন তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ অনেকেই ঢাকাতে ছিলেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে জেলে গেলেন প্রায়ত সিদ্দকুর রহমান, প্রায়ত এ্যাড. নুরুল ইসলাম সিকদার, এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, জাহাঙ্গীর কবীর, প্রায়ত ইউনুচ শরীফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম শরীফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব মৃধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুখ রঞ্জন শীল, বেতাগীতে প্রায়ত বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মন্নান মৃধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রায়ত নাজেম আলী, আমতলীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার, ঝন্টু তালুকদার, পাথরঘাটায় প্রায়ত মজিবুল হক এছাড়া আরো অনেকে।

সুভাল কৃষ্ণ তালুকদার জানান, বঙ্গবন্ধুর হত্যার খবর শুনে আমরা ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্যরা একত্র হই বাবু জ্ঞান রঞ্জন ঘোষের বাড়িতে এবং প্রতিবাদসভা ও বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহণ করি। আমাদের এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মনোয়ার ভাই ঢাকা বিশ^দ্যিালয় জহুরুল হক হলে ১৫৬ নং রুমে থাকতেন। এছাড়াও বরিশালের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা এনায়েত হোসেনের সাথেও যোগাযোগ রাখতেন, পটুয়াখালীতে ছিলেন খসরু, বরগুনায় আমার সাথে ও নন্দ তালুকদারের কাছে পোষ্টার দিয়েযেতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কর্মসুচি সফল করার জন্য আমাদের দিক নির্দেশনা দিতেন এবং আসতেন। জহুরুল হক হল এর ১৫৬ নং রুম-ই ছিলো দক্ষিণ অঞ্চলের ছাত্র রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের একটি অফিস।
স্বৈরসরকারের পতন ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বরগুনার কারাবরণ করলেন যারা, সাবেক সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি, নুরুল ইসলাম সিকদার, মোঃ জাহাঙ্গীর কবীর, এ্যাড. মোসলেম আলী শরীফ, ইউনুচ শরীফ, মোতালেব মৃধা, সুখ রঞ্জনশীল, বেতাগী উপজেলার মন্নান ভাই ও নাজেম ভাই, আমতলীর পাশা তালুকদার। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন নুরুল ইসলাম সিকদার, পাশা তালুকদার, নাজেম ভাই ও মন্নান ভাই ।

বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বরগুনার স্বাধীনচেতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ ছাত্রসমাজ। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে বিশেষ করে বাবু জ্ঞানরঞ্জন ঘোষের এই ঐতিহাসিক বাড়িতে সকাল ৭টায় ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। পরদিন সকালে বরগুনা কলেজে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে ঝটিকা মিছিল বের হয়।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে এ আন্দোলন কর্মসূচীতে সহযোগিতা করেছেন তৎকালিন মহাকুমা প্রশাসক সিরাজউদ্দিন আহমেদ। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সর্বাগ্রে ভুমিকা রাখে আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাপসহ ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়ন। ঐদিনে বরগুনা শহর নিয়ন্ত্রন ও সর্বাক্ষনিক যোগাযোগ রেকেছেন তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর কবীর। এছাড়াও হত্যার প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের নেতা সুভাল কৃষ্ণ তালুকদার, নন্দন তালুকদার, স্বপন কুমার সরকার, মানিক মন্ডল, টিও জাহাঙ্গীর। ছাত্র ইউনিয়নের ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, এস এম নজরুল ইসলাম,  গোলাম মোস্তফা পান্না, মালেক খান, আবুল হোসেন তালুকদার, সৈয়দ গোলাম রব, এ্যাড. শাহজাহান, মুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন শীল, গাজী মোতালেব।

বরগুনার আলো