রোজার শিক্ষা
রহমত ও মাগফিরাতের দিনগুলো অতিবাহিত হয়ে নাজাতের সময় শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মাহে রমজানের বিদায়ের করুণ সুর বেজে উঠেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পবিত্র রমজানুল মোবারক বিদায় নেবে। কিন্তু এই রমজান ও রোজা আমাদের জন্য বেশকিছু শিক্ষা রেখে যাবে। মুসলমানদের জন্য সমীচীন হলো, রোজার সেই শিক্ষাগুলো নিজেদের জীবনে ধারণ করা। রোজার শিক্ষামালা অনুযায়ী আগামী দিনে পথচলা। তাই এখানে আমরা রোজার কিছু শিক্ষা নিয়ে আলোকপাত করছি—
তাকওয়া অবলম্বন
মহাগ্রন্থ আল কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী রোজার প্রধান শিক্ষা হলো, তাকওয়া অবলম্বনে অভ্যস্ত করা। তাকওয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো, বিরত থাকা, নিবৃত্ত থাকা ও ভয় করা। ব্যবহারিক অর্থে আল্লাহর ভয়, আল্লাহভীতি, দ্বীনদারি ও ধার্মিকতা বোঝায়। আর ইসলামি পরিভাষায়—মহান আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় অন্যায়-অনাচার ও পাপাচার হতে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলা হয়। তাকওয়া অবলম্বন বা সর্বপ্রকার দুরাচার বর্জন করাই রোজার অন্যতম প্রধান শিক্ষা। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দুষ্টু জিন ও শয়তানদের শৃংখলাবদ্ধ করে রাখা হয়। ফলে তারা লোকদের পাপের কুমন্ত্রণা দিতে পারে না। এ কারণে মানুষের মধ্যে অন্যায়-অনাচার ও অপরাধের প্রবণতা কমে আসে। তাদের মধ্যে তাকওয়া অবলম্বন করার যোগ্যতা তৈরি হয়। তারা বহুলাংশে আল্লাহভীরু হয়ে ওঠে। রোজা মানুষকে তাকওয়া অবলম্বন করতে শেখায়। আর সিয়াম ফরজ করার উদ্দেশ্যও তাই। আল্লাহতায়ালা বলেন ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)।
সহমর্মিতা অর্জন
মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসকে ‘সহমর্মিতার মাস’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। একজন রোজাদার যখন সুবহে সাদেক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার বর্জন করে, তখন সে ক্ষুধার জ্বালা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করে। জঠর জ্বালায় তার গলা শুকিয়ে যায়। মুখে এক ধরনের দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। সে তৃষ্ণা ও পিপাসায় কাতর হয়। ফলে তার মধ্যে ক্ষুধা ও তৃষ্ণার বাস্তব উপলব্ধি জাগ্রত হয়। সে হাতে-কলমে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শেখে। তার মধ্যে সহমর্মিতাবোধ জাগ্রত হয়। সহমর্মিতা জ্ঞাপন করার জন্যই মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে অধিক পরিমাণে দান করতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। রমজান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমজানের প্রতি রাতেই জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে দেখা করতেন। তারা একে অপরকে কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বহমান বায়ু অপেক্ষা অধিক দানশীল ছিলেন।’ (বোখারি : ৬)।
ধৈর্যধারণ করা
হাদিসে রমজান মাসকে ‘ধৈর্যের মাস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। রোজা মানুষকে ধৈর্য ধারণ করতে শেখায়। ফলে যখন কোনো ব্যক্তি রোজা রাখে, তখন সে ধৈর্যের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে। তার সামনে বাহারি খাবার থাকা সত্ত্বেও আহার করে না। কোমল পানীয় হাতের নাগালে থাকা সত্ত্বেও পান করে না। অন্দরমহলে সুন্দরী রূপসী স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সহবাস করে না। এমনকি আচার-আচরণ এবং উচ্চারণেও ধৈর্য ধারণ করে। ক্ষুধার কষ্ট ও পিপাসার জ্বালা সহ্য করে। রোজা তাকে ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষা প্রদান করে। হাদিস শরিফেও রোজাদারকে ধৈর্যধারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন রোজা পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার।’ (বোখারি : ১৯০৪)।
ইখলাস তথা নিষ্ঠা
রোজা মানুষকে একমাত্র আল্লাহর জন্য আমল করার শিক্ষা দেয়। একজন রোজাদার যখন রোজা রাখে, তখন তার জন্য সুযোগ থাকে, সে সেহরির সময় পরিবারের সবার সঙ্গে সেহরি খাবে এবং ইফতারের সময় লোকদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে যোগ দেবে। সঙ্গে সঙ্গে তার জন্য এ সুযোগও থাকে যে, দিনের বেলা রেস্তোরা কিংবা ভোজনশালায় গিয়ে পানাহার করবে। লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজের ক্ষুধা ও তৃষ্ণা নিবারণ করে রোজার অভিনয় করবে। কিন্তু প্রকৃত রোজাদার এমনটি করে না। তার মধ্যে ইখলাস তথা আন্তরিকতা কাজ করে। আল্লাহতায়ালার জন্য রোজা রাখার বিষয়টি কাজ করে। সে মহান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যই কেবল রোজা রাখে। এ জন্যই হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘রোজা ছাড়া আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য। কিন্তু রোজা আমার জন্য। তাই আমি এর প্রতিদান দেব।’ (বোখারি : ১৯০৪)।
আল্লাহ সঙ্গে থাকার অনুভূতি
যখন কোনো ব্যক্তি রোজা রাখে, তখন তার জন্য দিনের বেলা পানাহার করার অনেক সুযোগ থাকে। সে ইচ্ছা করলে কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে পারে। লোকচক্ষুর অন্তরালে আহার করতে পারে। পানীয় পান করতে পারে। নিজের তৃষ্ণা নিবারণ করতে পারে। জঠরজ্বালা দূরীভূত করতে পারে। কিন্তু প্রকৃত রোজাদার এগুলো করে না। কারণ, তার মধ্যে এ বিশ্বাস জাগ্রত থাকে, যদিও কোনো ব্যক্তি দেখছে না, কিন্তু আল্লাহ ঠিকই আমাকে দেখছেন। তিনি আমার সঙ্গে আছেন। রোজা রোজাদারের মধ্যে আল্লাহতায়ালা সঙ্গে থাকার উপলব্ধি জাগ্রত করে এবং তিনি সর্বত্র বিরাজমান থাকার অনুভূতি সৃষ্টি করে। আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান থাকার বিষয়টি মহাগ্রন্থ আল কোরআনে এভাবে এসেছে, ‘তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যেখানেই থাকো। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা দেখেন।’ (সুরা হাদিদ : ৪)।
ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব
আল্লাহতায়ালা রাজা-প্রজা, ধনী-নির্ধন ও সাদা-কালো প্রাপ্তবয়স্ক সব মুসলমানের ওপর রোজা ফরজ করেছেন। তারা এক কাতারে দাঁড়িয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ তারাবির নামাজ আদায় করে। অনেক সময় একই দস্তরখানে সম্মিলিতভাবে ইফতার গ্রহণ করে। বহু মানুষ পবিত্র রমজানে জাকাত আদায় করে এবং সদকাতুল ফিতর প্রদান করে। এগুলো ধনী ও নির্ধনের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন তৈরি করে। এসব বিষয় রোজাদারদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে। তারা একে অপরকে ভাই ভাবতে শেখে। সামর্থ্যবান লোকদের ওপর সদকাতুল ফিতর প্রদান করা অপরিহার্য করার উদ্দেশ্যও তাই। ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘মহানবি (সা.) সদকাতুল ফিতর অবধারিত করেছেন অশ্লীল কথা ও অর্থহীন কাজ হতে মাহে রমজানের রোজাকে পবিত্র করার জন্য এবং গরিব-মিসকিনদের খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য।’ (সুনানে আবি দাউদ : ১৬০৯)।
রোজা বহুবিধ শিক্ষা ও তাৎপর্যময় এক অনন্য ইবাদত। মানব জীবনে এর উপকারী অনেক প্রভাব রয়েছে। রোজার শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনে ধারণ করা গেলে পবিত্র মানুষ হওয়া যাবে। সুন্দর জীবন গঠন করা সম্ভব হবে। তাই রোজার শিক্ষাগুলো নিজেদের জীবনে ধারণ করে পবিত্র ও আলোকিত মানুষ হই। মহান আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।
বরগুনার আলো- বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস ভাতা
- রুমা সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলি, আতঙ্ক
- শান্তিচুক্তির অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরল বাংলাদেশ
- আরও তিন দিন থাকবে তাপপ্রবাহ, কিছু জায়গায় বৃষ্টির আভাস
- বাংলাদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ ফি কমাতে ভুটানের প্রতি অনুরোধ
- মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা: জাতিসংঘ
- পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
- সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি
- হজের আগে ওমরাহকারীদের ফেরার তারিখ জানাল সৌদি
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেল বিজয়ী
- বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি
- শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী
- স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই হবে
- আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন মহাবিপদে: ওবায়দুল কাদের
- ড্রোন হামলার কথা অস্বীকার করলো ইরান, তদন্ত চলছে
- বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
- তীব্র তাপপ্রবাহ বিষয়ে যা বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সা.)
- সাধারণ জ্বর-সর্দি নাকি করোনা বুঝবেন যে লক্ষণে
- গরমে মুখে ও পিঠে ব্রণ হচ্ছে?
- ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজই
- বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে সঙ্গীত শিল্পী ‘পাগলা হাসান’সহ নিহত ২
- বিয়েবাড়ির মতো খাসির মাংস ভুনা করবেন যেভাবে
- বদলা নিতে ডেকে নিয়ে কোপানো হয় পাভেলকে
- নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার তাগিদ
- বিএনপির চিন্তাধারা ছিল দেশকে পরনির্ভরশীল করা: শেখ হাসিনা
- স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ
- জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো
- শপথ নিলেন পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমার
- মুজিব নগর সরকার গঠনের পরই বিশ্বের স্বীকৃতি পায়
- বরিশালে মোবাইল কোর্ট অভিযানে ৪টি মামলা, অর্থদণ্ড আদায়
- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- বাড়ির উঠানে গাঁজা চাষ, অবশেষে ধরা মধু ফকির
- সমরাস্ত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- জাতিসংঘের রোহিঙ্গা ডাটাবেজ ব্যবহার করতে চায় সরকার
- কমবয়সীদেরও কেন হয় হার্নিয়া, এর চিকিৎসা কী?
- বরগুনায় মা ও মেয়ে ধর্ষণের পলাতক আসামী গ্রেফতার
- কলাপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড
- ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন কি না বুঝে নিন লক্ষণে
- রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- আদালতের রায়ের ওপরে কিছু নেই: বুয়েট উপাচার্য
- উজিরপুরে চিহ্নিত তিন মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবাসহ গ্রেফতার
- মাত্র ১২০ টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকুরি পেল বরিশালের ৫৮ জন
- ফিতরার হকদার যারা
- ব্যর্থতায় বিএনপি নেতারা এখন ক্লান্ত: ওবায়দুল কাদের
- শবে কদরের নামাজের নিয়ত ও পড়ার নিয়ম
- বাতাসের চাপ থেকে বিদ্যুৎ: বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশি স্টার্টআপ
- হার্টে হলদেটে ছোপ কেন হয়, কীসের লক্ষণ?
- হিট স্ট্রোক এড়াতে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
- আইএমএফের ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ে বাধা নেই: গভর্নর