• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মুখ দেখে মানুষের নাম-পরিচয় বলে দিচ্ছে ‘নিকো’

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

যদি একটি মেশিন আপনার মুখ দেখে নাম-পরিচয় বলে দেয় তাহলে কেমন লাগবে ভাবুন তো! অথবা ওই মেশিন যদি ডাক্তারের পরিবর্তে নিজেই অপারেশন ও রোগ নির্ণয় করতে পারে, তাহলে তো সবারই অবাক হওয়ার কথা। শুধু পরিচয় শনাক্ত কিংবা চিকিৎসা নয়; যেকোনো কাজ করতে সক্ষম ‘নিকো’ নামের এই রোবট।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী রোবটটি তৈরি করেছেন। বিখ্যাত বিজ্ঞানী নিকোলাস টেসলারের নামের প্রথম অংশ থেকে এটির নাম দিয়েছেন নিকো। দীর্ঘ এক বছরের পরিশ্রম এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ ও অর্থায়নে এটি তৈরি করা হয়েছে। নিকো তৈরি করা দলের নাম কোয়ান্টা রোবটিক্স। এই দলের সদস্যরা হলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল, আইসিটি বিভাগের জুয়েল নাথ, অনিক চক্রবর্তী, তৌসিফ বিন পারভেজ ও মহিউদ্দিন খান মাহিন।

তাদের দাবি, নিকো দেশের সর্বাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট। এটি তাদের তৃতীয় রোবট। চার লাখ টাকা খরচে নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে আরও দুটি রোবট তৈরি করেছিলেন তারা।

কোয়ান্টা রোবটিক্স দলের সদস্যদের দেওয়া তথ্যমতে, কোনও ক্যাবল সংযোগ ছাড়াই কথা বলে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কোনও মানুষকে প্রথমবার দেখলে পরের বার দেখার সঙ্গে সঙ্গে নাম-পরিচয় বলে দিতে পারে। এটি দেশের প্রথম কোনও রোবট; যার প্রত্যেক অংশ নিজেদের তৈরি। রোবটটিতে ব্যবহার করা হয়েছে নিকো ভার্সন ১.০, স্পিড ১.৫ গিগাহার্জ, সিক্সটি ফোর বিট কোয়ার্ড কোর এআরএম প্রসেসর, ৮ গিগাবাইট র‌্যাম, ১২০ গিগাবাইট রম। ২৯টি শক্তিশালী সার্ভো মোটর ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকার বডি পার্টস মুভমেন্টের জন্য। চলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে হাই টর্কের ডিসি মোটর। এছাড়া পরিচালনা করার জন্য রয়েছে সেভেন ইঞ্চি রাসবেরি পাই টার্চ ডিসপ্লে। কোনও প্রকার তার সংযোগ ছাড়াই সরাসরি রোবটের সঙ্গে কথা বলে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

নিকোর আগে কেউ আমাদের দেশে এতো অত্যাধুনিক রোবট তৈরি করতে পারেননি বলে দাবি করেছেন কোয়ান্টা রোবটিক্স টিমের প্রধান সঞ্জিত মণ্ডল। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘এর আগে বাংলাদেশে ফুল থ্রিডি প্রিন্টেড রাসবেরিপাই বেইজড কোনও রোবট তৈরি হয়নি। এটি তার ঘাড়কে মানুষের মতো যেকোনোভাবে ঘোরাতে পারে। এর প্রত্যেক পার্টস আমাদের ল্যাবে তৈরি। রোবটটিকে কর্মক্ষেত্রে যেকোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে। মানুষের মতোই যেকোনো কাজ করতে সক্ষম। রোবটটিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহারের কারণে মানুষের মতোই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করতে পারবে। এক চার্জেই প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম।’

কীভাবে মানুষের নাম-পরিচয় বলে দিচ্ছে রোবটটি জানতে চাইলে সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘রোবটটির সামনে ক্যামেরা ও সেন্সর আছে। যে কারণে একবার কাউকে দেখলে পরেরবার নাম-পরিচয় বলে দিতে পারে। এটিকে চিকিৎসা, নিরাপত্তা অথবা যেকোনো কাজে লাগানো সম্ভব।’

বাংলাদেশে এ ধরনের রোবট সর্বপ্রথম উদ্ভাবন করা হয়েছে জানিয়ে সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্মিত ফ্যাব ল্যাবে এটি তৈরি। এর আগে আরও দুটি রোবট তৈরি করেছিল আমাদের টিম। নিকো আমাদের নির্মিত তৃতীয় রোবট, যেটি সবচেয়ে অ্যাডভান্স।’

এদিকে, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচতলার ফ্যাব ল্যাবে রাখা হয়েছে রোবটটি। এটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। ছেলেকে রোবট দেখাতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ফ্যাভ ল্যাবে এসেছেন কুমিল্লার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে সাজিদুল ইসলাম যখন কুমিল্লা জিলা স্কুলে চান্স পেয়েছিল, তখন থেকেই রোবটটি দেখতে আবদার করে বসেছিল। তাই দেখাতে নিয়ে এলাম। এসে দেখি ছেলেকে অভিনন্দন জানাচ্ছে রোবটটি। অভিনন্দন পেয়ে খুবই আনন্দিত ছেলে। আমারও বেশ ভালো লেগেছে।’

‘আগামীর দিন পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর। আমাদের প্রজন্ম রোবট তৈরি শিখুক। আমাদের এমনটাই প্রত্যাশা’ যোগ করেন সাজ্জাদ হোসেন।

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে রোবটটি অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক শামীম আলম। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে আমাদের আগামী প্রজন্মকে এগোতে হবে। তবেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘রোবটটি নিয়ে কাজ করতে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছি আমরা। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। এই জাতীয় কাজে আরও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতোমধ্যে প্রায় সব উপজেলায় রোবটিক্স স্কুল করা হয়েছে। আরও যা যা সুবিধা প্রয়োজন দেওয়া হবে।’

বরগুনার আলো