• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী লাইলাতুল কদর মানবজাতির অত্যন্ত বরকত ও পুণ্যময় রজনি শবে কদর রজনিতে দেশ ও মুসলিম জাহানের কল্যাণ কামনা প্রধানমন্ত্রীর সেবা দিলে ভবিষ্যতে ভোট নিয়ে চিন্তা থাকবে না

করুণার আঁধার হে মহান রব

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০১৯  

মহান আল্লাহ সুবানাহু তায়ালা হলেন সমস্ত ক্ষমতার অধিপতি। যার সৃষ্টির আদিপত্য আরশে আজীম থেকে জমিনের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র প্রানের স্পন্দন। মহান স্রষ্টার নিয়ন্ত্রনে ভূ-গর্ভস্থ হতে আরশে আজীম পর্যন্ত। তিনি পবিত্র, সুন্দর ও করুনাময়। যার দৃষ্টিতে নিবন্ধন তাঁর সমস্ত মাখলুকাত। তিনিই সেই মহান নিয়ন্ত্রনকারী। যার নিয়ন্ত্রনে প্রতিদিন সূর্য তাঁর নিদিষ্ট নিয়মে উদিত হয় আবার নিদিষ্ট নিয়মে অস্ত যায়। তিনিই সেই মহান সত্ত্বা যিনি সকল সৃষ্টির অভিভাবক। মহান সেই সত্ত্বার কসম, যিনি তার ক্ষমা ও করুনার পরশে বেষ্টন করে রেখেছেন আমাদের।

সৃষ্টির শুরু থেকে এক নিদিষ্ট নিয়মে বহমান এ ধরণী। এ নিয়মের বিন্দু মাত্র এদিক ওদিক হয় না। একবার চিন্তা করে দেখুন তো, আমার রব ব্যতিত অন্য কোনো সত্ত্বা আছে কি?

প্রত্যেক স্রষ্টা তার শ্রেষ্টত্বের প্রমাণ দিতে চাইতেন। প্রত্যেক স্রষ্টা চাইতেন যার যার অস্তিত্বের অনুভূতি বোঝাতে। এ প্রসঙ্গে আমাদের প্রতিপালক সূরা মুমিনে বর্ণনা করেন,

مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِن وَلَدٍ وَمَا كَانَ مَعَهُ مِنْ إِلَهٍ إِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ إِلَهٍ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ
‘আল্লাহ কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সঙ্গে কোনো মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের ওপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।’ (সূরা: আল মু’মিনূন, আয়াত: ৯১)।

একটু চিন্তা করার বিষয়; যদি একাধিক স্রষ্টা থাকতো তবে এ পৃথিবী কি নিদিষ্ট নিয়মে চলতে পারতো? কখনোই না ...।  মাঝে মাঝে নিজের অজান্তে রবের সৃষ্টির অপুরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ভাবি, যার সৃষ্টি  এত সুন্দর!!! সে মহান আল্লাহ কতই না সুন্দর, সেই মহান রব কতই না পবিত্র!!!

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ
‘তারা কী লক্ষ্য করে না, তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি পাখা বিস্তারকারী ও পাখা সংকোচনকারী? রহমান আল্লাহ-ই তাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব-বিষয় দেখেন।’ (সূরা: আল মুলক, আয়াত: ১৯)।

পাখি যখন ডানায় ভর দিয়ে আকাশে উড়ে যায়, ফুল যখন বাতাসের সঙ্গে আলিঙ্গন করে প্রস্ফুটিত হয়, মেঘ মালা যখন বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে, আকাশ যখন খুটিহীন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে,পাহাড় যখন না দুলায়ে জমিন রাখে স্থির। মৃত্তিকার শক্ত বক্ষকে বিদীর্ণ করে ফসল রাজির নরম কুসুম কোমল কান্ড যখন পৃথিবীর বুকে আলিঙ্গন করে তখন বুঝি আমার রব কত বড় কারিগর!! যার কুদরতি কারিগরিতে মানব দেহের মতো এক আশ্চর্য সৃষ্টি  নিদর্শন বানিয়ে রেখেছেন পৃথিবীর বুকে। কত বড় সৃষ্টিকর্তা আপনার আমার রব! (আল্লাহু আকবর)।
আল্লাহর করুণা সম্পর্কে কোরআন মজিদে কী অসাধারণ ভাবে বর্ণনা করেছেন, 

الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ
‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।’

الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِن تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِن فُطُورٍ
‘তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিতে কোনো তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোনো ফাটল দেখতে পাও কি?’

ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِأً وَهُوَ حَسِيرٌ
‘অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ-তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।’ (সূরা: মূলক, আয়াত: ২-৪)।

আল্লাহ তায়ালা সূরা মুমিনে তাঁর অপার করুনার আধার এরশাদ করেন, 

اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا وَالسَّمَاء بِنَاء وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَتَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
‘আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিজিক। তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়।’

هُوَ الْحَيُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকে ডাক তাঁর খাঁটি এবাদতের মাধ্যমে। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহর।’ (সূরা: মুমিন, আয়াত: ৬৪-৬৫)। 

আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজস্ব অস্তিত্ব বর্ণনা করতে সূরা ইখলাসে ইরশাদ করেন, 

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,

اللَّهُ الصَّمَدُ
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,

لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি

وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
এবং তার সমতুল্য কেউ নেই। (সূরা: ইখলাস, আয়াত: আয়াত: ১-৪)।

সুপষ্ট কোরআনের দলিল থাকার পরও কোথায় বিভ্রান্ত হে মানব জাতি, স্বীয় রবের একত্ববাধের স্বীকৃতিতে। যার রাজ্যত্ব স্বার্বভৌমত্ব নিয়ন্ত্রণ একচ্ছত্র ক্ষমতাধর আমার রব। কীভাবে রবের আদেশ, নিষেদ অমান্য করে তাঁর রাজ্যত্বে বসবাস ……। কিসে  তোমা এত অহংকার, সামান্য এক ফোটা নাপাক বীর্য থেকে যার সৃষ্টি আর মাটিতে যার বিলীন হয়ে যাওয়া। যার অনুমতি ব্যতীত একটি নিঃশ্বাস নেয়ার  ক্ষমতা আমাদের নেই।

জানি না কী ভাষায় রবের মহিমা বর্ণনা করবো। কলমের পর কলম শেষ হয়ে যাবে, পৃষ্টার পর পৃষ্টা শেষ হয়ে যাবে, তবুও প্রতিপালকের করুনা, ক্ষমা ও অপার মহিমা বর্ণনা শেষ করা যাবে না……।  শুধুমাত্র মহান রবের নিকট ক্ষমা মার্জনা চাহি আর শুকরিয়া করি প্রাপ্ত সকল নেয়ামতের (আলহামদুলিল্লাহ)!   মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করে জানাই, একজন মুসলিম হিসেবে এ পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য, শুকরিয়া জানাই হেদায়াতের পথে পরিচালিত করার জন্য। শুকরিয়া জানাই বিশ্বের জন্য রহমত হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর উম্মতের মর্যাদা প্রদানের জন্য।

ইয়া রব! সমস্ত প্রশংসা তোমার, আমরা পাপী গোনাগার, তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, তুমি আমাদের ক্ষমা  করে দিয়ে তোমার রহমতের কোলে টেনে নাও।

ইয়া রব! হে আরশের অধিপতি! তোমার এই পাপী বান্দার অন্তরে তাকওয়া বৃদ্ধি করে এ দুনিয়া থেকে প্রকৃত মুসলমান হিসেবে বিদায় নেয়ার তাওফিক দান করো। ( আমিন)।

বরগুনার আলো