• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

কোরআন নাজিলের তাৎপর্য ও পদ্ধতি

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৪ মে ২০২০  

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন পরীক্ষার জন্য। মুসলমান এটাই বিশ্বাস করে। আল্লাহ তায়ালা তার সব সৃষ্টিকে নিয়োজিত করে রেখেছেন মানুষের খেদমতে। এর বিনিময়ে তিনি মানুষকে কিছু দায়-দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।

তাই দুনিয়াতে আসার পর মানুষের করণীয় দু’টি। দুনিয়া ও দুনিয়ার বুকে যা রয়েছে সেগুলোকে ঠিকঠাকভাবে কাজে লাগানো। দ্বিতীয়ত কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধিবিধানকে পূর্ণরূপে মেনে চলা। আল্লাহর মর্জির খেলাপ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা। করণীয় দু’টি পালনের জন্য ইলেম বা ধর্মীয় জ্ঞানের প্রয়োজন। দুনিয়ার হাকিকত, এতে বিদ্যমাণ বস্তুগুলোর বৈশিষ্ট্য জানতে হলে ও সেগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে উপকৃত হতে হলে ধর্মীয় জ্ঞানের প্রয়োজন। অন্যদিকে আল্লাহর মর্জি মোতাবেক এগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য, তার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আল্লাহ কোন বিষয়কে পছন্দ করেন আর কোনটিকে অপছন্দ করেন তা জানা না থাকলে কখনো তার মর্জি মোতাবেক চলা সম্ভব নয়।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জন্য তিনি তিনটি ব্যবস্থা রেখে দিয়েছেন, যেগুলো দ্বারা মানুষ পূর্বোক্ত বিষয়ের ইলম বা অর্জন করতে পারে। অর্থাৎ দুনিয়া ও দুনিয়ার মাঝে বিদ্যমাণ বস্তুগুলো ব্যবহারের পদ্ধতি এবং কোন পদ্ধতিতে ব্যবহার আল্লাহর মর্জি মোতাবেক হবে, তা এই তিন বিষয়ের মাধ্যমে জানা যাবে। প্রথম ব্যবস্থা হচ্ছে, পঞ্চইন্দ্রিয়- হাত, মুখ, নাক, হাত ও পা। দ্বিতীয় ব্যবস্থা হচ্ছে আকল বা বুদ্ধি। তৃতীয় ব্যবস্থা হলো ওহী। অনেক বিষয়ের জ্ঞান, মানুষ পঞ্চইন্দ্রিয়ের সাহায্যে হাসিল করতে পারে। আকল দ্বারাও মানুষ অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। পঞ্চইন্দ্রিয় ও আকলের বাইরের যেসব বিষয় রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা ওইসব বিষয়ের ইলম ওহীর মাধ্যমে দান করেন।

ইলমের এই তিন মাধ্যমের মাঝে একটা বিন্যাস আছে। অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যবস্থার কার্যক্ষমতা একটা পরিধিতে সীমাবদ্ধ। তার বাইরে কাজ করার ক্ষমতা ওই মাধ্যমগুলোর নেই। তাই অনেক বিষয় ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে জানা গেলেও, আকল বা বুদ্ধি দিয়ে তা জানা সম্ভব নয়। যেমন মানুষ চোখে দেখে বুঝতে পারে দেয়ালের রং সাদা বা কালো। কিন্তু পূর্ব থেকে না দেখে, শুধু আকল বা বুদ্ধি দ্বারা যদি কেউ জানতে চায়, দেয়ালের রং সাদা না কালো তাহলে তা কখনো সম্ভব নয়। তেমনিভাবে আকল বা বুদ্ধি দ্বারা যা জানা যাবে, শুধু ইন্দ্রিয় ব্যবহার করে তা জানা সম্ভব নয়। দেয়ালের উদাহরণই এখানে দেয়া যায়। 
একটা বানানো দেয়াল দেখে বা হাতে স্পর্শ করে কেউ বলতে পারবে না এর নির্মাতা কে। কে বানিয়েছে, তা জানার জন্য বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে।

সারকথা হচ্ছে, ইন্দ্রিয়ের কার্যক্ষমতা যতটুকু পর্যন্ত আছে, সেখানে বুদ্ধির কাজ নেই। বুদ্ধির ব্যবহার শুরু হয়, যেখানে ইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা শেষ। তবে আকলের ক্ষমতাও অসীম নয়। সেও এক পর্যায়ে থেমে যায়। দুনিয়াতে বহু বিষয় আছে, যার জ্ঞান ইন্দ্রিয় বা আকলের সাহায্যে লাভ করা সম্ভব নয়। যেমন দেয়ালের বিবরণ ও নির্মাতা সম্পর্কে জানার পর, এর ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। জানতে হবে, কোন কাজে ব্যবহার সৃষ্টিকর্তার মর্জি মোতাবেক হবে আর তিনি নারাজ হবেন কীভাবে ব্যবহার করলে। ইন্দ্রিয় বা আকল দ্বারা এই প্রশ্নের উত্তর জানা কখনো সম্ভব নয়। এ রকম প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন একটা ব্যবস্থা রেখেছেন। ওই ব্যবস্থার নাম হলো ওহী। ওহীর পদ্ধতি হলো, আল্লাহ তায়ালা, মানুষ থেকে কিছু বান্দাকে নির্বাচন করে তাদেরকে পয়গম্বর বানান এবং তাদের উপর নিজের কালাম নাজিল করেন। ওই কালামকে ওহী বলা হয়। এতক্ষণ ইলমের মাধ্যমগুলো আলোচনা হলো। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়েছে, ওহী ইলমের সর্বোচ্চ মাধ্যম। এর দ্বারা ওই প্রশ্নের সমাধান আসে, ইন্দ্রিয় ও আকল-বুদ্ধি দ্বারা যা সমাধান করা আদৌ সম্ভব নয়। অথচ এর সমাধান জানা মানুষের জন্য জরুরি। আরো প্রতীয়মান হয়, জীবন চলার জন্যে ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞান বা বুদ্ধির ওপর ভরসা যথেষ্ট নয় বরং মানুষের জন্য অত্যাবশকীয় হচ্ছে ওহীর জ্ঞান থাকা। জেনে এসেছি ওহর ইলম সেখানেই প্রয়োজন, আকল ও ইন্দ্রিয় যেখানে অকার্যকর। এ জন্য, ওহর প্রতিটি বিষয় আকল দ্বারা বোধগম্য হওয়াও জরুরি নয়। চোখ বন্ধ করার পর, রংয়ের কালার জানতে আকল ব্যর্থ হলে, দ্বীনের নিগূঢ় বিষয় ও আকীদা-বিশ্বাসের তথ্য ও তত্ত জানতে ব্যর্থ হতে পারে না?

যে নাস্তিক, আল্লাহর অস্তিত্যের বিশ্বাসী নয়, ওহীর প্রসঙ্গ নিয়ে ওর সঙ্গে আলোচনার কোনো মানে হয় না। কিন্তু যারা আস্তিক, আল্লাহর কুদরতের বিশ্বাসী, তাদের জন্য ওহীর যৌক্তিক প্রয়োজনীয়তা, হাকিকত ও অস্তিত্যকে মেনে নেয়া মুশকিল নয়। সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করে, সুদৃঢ় ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালনা করে যাচ্ছেন মানুষের সুবিধার জন্য। অন্যদিকে তিনি মানব জাতিকে সুনির্দিষ্ট একটা উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নের জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কোনো মানুষ এগুলো মানার পর, এটা কীভাবে হতে পারে যে, তিনি মানুষকে সৃষ্টির পর, সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাকে অন্ধকারে রেখে দেবেন; কোনো গাইডলাইন দেবেন না? তাকে বলে দেয়া হবে না, কোন উদ্দেশ্যে এই দুনিয়াতে সে এসেছে? দুনিয়াতে এসে তার ওপর কি কি জিম্মাদারি থাকবে? তার মানজিলে মাকসাদ কি এবং তা সে কিভাবে হাসিল করবে? কোনো ব্যক্তি তার কর্মচারীকে সুনির্ধারিত একটা কাজ দিয়ে কোথাও পাঠাচ্ছেন। কিন্তু রওয়ানা দেয়ার সময় বা পরে, বার্তাবাহক বা অন্য কোনো মাধ্যমে তার সঙ্গে  যোগাযোগ করে বলে দেননি তাকে কোন কাজের জন্য পাঠাচ্ছেন তাহলে প্রেরককে কেউ বুদ্ধিমান বলবে? এটা যদি কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে না পারে তাহলে আহকামুল হাকিমীন মহাপ্রজ্ঞাবান আল্লাহর পক্ষ থেকে কিভাবে সম্ভব যে, তিনি মানুষকে সুনির্দিষ্ট কাজ দিয়ে দুনিয়াতে পাঠাচ্ছেন আর তিনি কোনো বার্তবাহকের মাধ্যমে মানুষকে সে কাজ সম্পর্কে বলে দেবেন না? আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বেখবর রেখে দেননি এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে অন্ধকারেও রাখেননি। মানুষ যেন আল্লাহর উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে মানজিলে মাকসাদে পৌঁছতে পারে, তিনি সে জন্য নিয়মতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। ওই ব্যবস্থার নাম হচ্ছে, ওহী ও রিসালাত। সেই ব্যবস্থার মাধ্যমে নাজিলকৃত সর্বশেষ কিতাবের নাম হলো আল কোরআন। যা মানুষকে নির্দেশনা দেবে, দুনিয়াতে জীবন যাপনের পদ্ধতি। জানাবে, দুনিয়া ও দুনিয়াতে বিদ্যমাণ বস্তুগুলো ব্যবহারের পদ্ধতি। মানুষ সে অনুযায়ী চললে, সে হবে সফলকাম।

যেভাবে ওহী নাজিল হতো :

ওহী ও রেসালাতের ধারা রাসূল (সা.) এর মাধ্যমে শেষ হয়েছে। তাঁর পর কারো ওপর ওহী নাজিল হবে না এবং প্রয়োজনও নেই। রাসূল (সা.) এর ওপর কয়েকভাবে ওহী নাজিল হতো। বুখারীর এক হাদিসে এসেছে, হজরত হারিছ ইবনে হিশাম একবার রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, আপনার উপর ওহী নাজিল হতো কিভাবে? তিনি বলেন, কখনো কখনো ওহী নাজিলের সময় ঘণ্টাধ্বনির মতো আওয়াজ হতো। আমার কাছে ওহী নাজিলের এই পদ্ধতিটা সবচেয়ে কঠিন ছিলো। আওয়াজ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাজিলকৃত আয়াত আমার মুখস্থ হয়ে যেতো। ফেরেশতা মানুষের আকৃতি ধারন করে কখনো কখনো ওহী নিয়ে আসতো। (সহিহ বুখারী-২)।

বর্ণিত হাদিসে, ওহীর আওয়াজকে ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় শায়খ মুহিউদ্দীন ইবনে আরাবি (রাহ.) বলেন, ‘ঘণ্টার আওয়াজ অবিরাম বাজতে থাকে, মাঝে কোনো ছেদ পড়ে না। ওহী নাজিলের আওয়াজও অবিরাম বাজতো, মাঝে আওয়াজ কখনো বন্ধ হতো না। তাই রাসূল (সা.) ওহীর আওয়াজকে ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে তুলনা করেছেন। তুলনা দেয়ার আরেকটি কারণ থাকতে পারে। ঘণ্টা বাজতে থাকলে আওয়াজ কোন দিক থেকে আসছে বুঝা মুশকিল হয়ে পড়ে। উক্ত পদ্ধতিতে ওহী নাজিলের সময় আওয়াজ কোন দিক থেকে আসছে, অনুমান করা মুশকিল ছিলো। তাই রাসূল (সা.) ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে ওহী নাজিলের আওয়াজকে তুলনা করেছেন। তিনি আরো বলেন, মূলত ওহী নাজিল কীভাবে হতো তা সরাসরি প্রত্যক্ষ্য করা ছাড়া বুঝা অসম্ভব। তারপরও মোটামোটি একটা ধারণা দেয়ার জন্য ঘণ্টার আওয়াজের সঙ্গে তুলনা দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। (ফয়জুল বারী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৯-২০)।

এভাবে ওহী নাজিল হলে রাসূল (সা.) এর সবচেয়ে বেশি কষ্ট হতো। এ প্রসঙ্গে পূর্বোক্ত হাদিসের শেষাংশে হজরত আয়েশা (রা.) এর বিবরণ এসেছে। তিনি বলেন, কখনো প্রবচণ্ড শীতে ওহী নাজিল হয়ে যখন শেষ হতো, রাসূল (সা.) এর কপাল থেকে ঘাম ঝড়তো। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ওহী নাজিলের সময় রাসূল (সা.) এর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতো। চেহারার রং পাল্টে খেজুর গাছের ডালের ন্যায় হলুদবর্ণ হয়ে যেতো এবং ঠাণ্ডায় দাঁতগুলো কাঁপতে থাকতো। কখনো প্রচণ্ড ঘেমে, ঘামের ফোটাগুলো শরীর থেকে মতির মতো ঝড়তে থাকতো। (আল ইতকান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৬)। এভাবে ওহী নাজিলের সময় রাসুল (সা.) কখনো বাহনের ওপর থাকলে, ভারে বাহন বসে যেতো। একবার রাসূল (সা.) হজরত যায়েদ ইবনে সাবেত (রা.) এর রানের ওপর মাথা রেখে শুয়েছিলেন। ওহী নাজিল হলো। তখন হজরত যায়েদের রানের ওপর এত ভার পড়লো যে, তার রান ভেঙ্গে যায় যায়। (যাদুল মা’আদ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৮-১৯)। 

এভাবে ওহী নাজিলের হালকা আওয়াজ কখনো অন্যদের কাছেও অনুভূত হতো। হজরত ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ওহী নাজিলের সময় রাসূল (সা.) এর চেহারার কাছে গেলে মৌমাছির আওয়াজের ন্যায় গুনগুন আওয়াজ শুনা যেতো। ওহি নাজিলের দ্বিতীয় পদ্ধতি ছিলো, ফেরেশতা মানুষের আকৃতি ধারন করে ওহি নিয়ে আসা। এক্ষেত্রে হজরত জিবরাইল (আ.) প্রখ্যাত সাহাবি হজরত দিহয়া কালবি (রা.) এর সুরতে আসতেন। কখনো ব্যতিক্রমও হতো। ফেরেশতা মানুষের আকৃতিতে ওহী নিয়ে আসলে রাসীল (সা.) এর জন্য অনেক সহজ হতো। বলা যায়, ওহী নাজিলের পদ্ধতিগুলোর মাঝে এটাই ছিলো সবচেয়ে সহজ। (আল ইতকান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৬)।

ওহী নাজিলের তৃতীয় পদ্ধতি ছিলো, হজরত জিবরাইল (আ.) নিজ আকৃতিতে ওহি নিয়ে আসা। ওহী নাজিলের পুরো সময়ে মাত্র তিনবার এ রকম হয়েছিলো। একবার হয়েছিলো, হুজুর (সা.) হজরত জিবরাইল (আ.)-কে আসল আকৃতিতে দেখার আগ্রহের পরিপ্রেক্ষীতে। দ্বিতীয় বার মেরাজের সময়। তৃতীয়বার ছিলো ওহীর সূচনালগ্নে মক্কা মুকাররমায়। প্রথম দু’টির বিবরণ সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে। শেষেরটি দুর্বল সনদে বর্ণিত হওয়াও সংশয়যুক্ত। (ফাতহুল বারী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৮-১৯)।

ওহী নাজিলের চতুর্থ পদ্ধতি ছিলো, সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন। একবার রাসূল (সা.) এর জন্য এই নেয়ামত হাসিল হয়েছিলো অর্থাৎ মেরাজের রাতে। তবে স্বপ্নযোগেও তিনি একবার আল্লাহ পাকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছিলেন। (ইতকান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৬)।

আরেকভাবে ওহী নাজিল হতো। এটা ওহী নাজিলের পঞ্চম পদ্ধতি। হজরত জিবরাইল (আ.) নিজ আকৃতি বা অন্যকোনো আকৃতিতে না এসে, রাসূল (সা.) এর অন্তরে বিষয় ঢেলে দিতেন। 

বরগুনার আলো