• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলে যুদ্ধটা করলো কে? প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের সংবর্ধনায় ভুটানের রাজার যোগদান বাংলাদেশ-ভুটান তিন সমঝোতা স্মারক সই ইফতার পার্টি না করে নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করুন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বাংলাদেশ মিশনগুলোর ভূমিকা রাখার আহ্বান সমরাস্ত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস উপজেলা নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর জনগণের সঠিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া উন্নয়ন হয় না প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক কারিগরি ও প্রযুক্তি সন্নিবেশ করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তি ব্যবহারে জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে চায় ডব্লিউএইচও পুতিনকে অভিনন্দন জানালেন শেখ হাসিনা এ বছর ফিতরার হার নির্ধারণ ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউতে জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী জনসমর্থন থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব

গত বছরের চেয়ে এবার প্রবৃদ্ধি ২.১০ শতাংশ

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২১  

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম ছয় মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) রাজস্ব আয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে। যা টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৩৩ হাজার কোটি। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ২ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আলোচ্য সময়ে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ২২৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

চলমান করোনা মহামারীর কারণে রাজস্ব আদায়ে এ ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনবিআর’র কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বছরের শুরুতে এমনিতেই রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি থাকে। এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা পরিস্থিতি। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। অন্যদিকে মহামারী সামাল দিতে খাদ্যসহ ভোগ্যপণ্য, সুরক্ষাপণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভ্যাট-ট্যাক্সে ছাড় দেয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করায় সামনের দিনগুলোতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছেন তারা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার এই সময়ে ব্যবসা বাণিজ্যের গতি টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত অর্থবছর যেখানে ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধি দিয়ে শেষ হয়েছে, সেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পজিটিভ প্রবৃদ্ধি নিঃসন্দেহে অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। এই ধারা অব্যাহত রাখতে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ভ‚মিকা রাখতে হবে।

অন্যদিকে সরকার নিজস্ব খেয়ালমতো বাজেট করায় রাজস্ব আদায়ে মোটা অংকের ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এ বছর রাজস্ব আহরণে বিশাল একটা ঘাটতি হবে এটা আমরা জানতাম। তার পরও সরকার নিজস্ব খেয়ালমতো বাজেট করে। সবাই বলেছিল এটা অর্জন সম্ভব নয়। এখন সেটাই প্রমাণ হচ্ছে। আমাদের হিসাবে অর্থবছর শেষে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হবে। রাজস্বে গতি আনতে বর্তমানে নতুন করে কিছু করার নেই। এ সময়ে অর্থনীতি খুব দুর্বল অবস্থায় রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
 

এনবিআরের রাজস্ব আহরণের সাময়িক বিবরণীর তথ্য বলছে, ছয় মাসে আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে রাজস্ব খাতে ৪৬ হাজার ১৯৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ৬০৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ দশমিক ২৫ শতাংশ কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূসক খাতে ৫২ হাজার ৮৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪০ হাজার ৬২৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। এমনকি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও এক্ষেত্রে রাজস্ব কমেছে ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আয়কর ও ভ্রমণ কর বাবদ ৪২ হাজার ১৮৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৪ হাজার ২৩৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছি। তবে করোনাজনিত পরিস্থিতিতে অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে গত বছরের চেয়ে এগিয়ে আছি, সেটা আশাব্যঞ্জক। আশা করছি ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি আরো ভালো হবে।

অন্যদিকে অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ার কারণেই রাজস্ব আহরণ কমেছে বলে মনে করেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, করোনার মধ্যেই চলতি বাজেট দেয়া হলেও রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বৈশ্বিক মহামারীকে বিবেচনায় নিয়ে একটা অন্তবরর্তীকালীন বাজেট দেয়ার কথা উঠলেই শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক বাজেটই দেয়া হয়। সরকার মনে করেছিল অল্প দিনেই করোনা চলে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি, এখনো করোনা বিদ্যমান। করোনায় মানুষের আয় কমেছে, একেবারে যেটুকু না কিনলেই নয় সেটুকু কিনছে। ফলে অর্থনীতিতে কোনো গতি নেই। তাই রাজস্বও কম আদায় হচ্ছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। কিন্তু সে প্রণোদনা শুধু বড় ব্যবসায়ীরাই পাচ্ছেন। ব্যাংকগুলো প্রান্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার ঋণ দিচ্ছে না। প্রণোদনার আওতায় সিএমএসএমই খাতে চলতি মূলধন দেয়ার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সেগুলো ঠিকমতো বিতরণ হচ্ছে না। ফলে অর্থনীতিতে গতি আসছে না বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে সরকারের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। এখান থেকে এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

বরগুনার আলো