• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা

তালতলিতে পিটিয়ে মারা বিরল প্রজাতির নেকড়েটি ‘ইন্ডিয়ান গ্রে উলফ’

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০১৯  

পিটিয়ে মেরে ফেলা বিরল প্রজাতির ধূসর নেকড়েটি ঘূর্ণিঝড় ফণীর সময় ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের মতে, দলছুট নেকড়েটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে গৃহস্থবাড়ি থেকে গবাদিপশু টেনে নিয়ে খেয়ে ফেলছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ইতিমধ্যে মৃত নেকড়েটির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে।

৪ জুন বরগুনার তালতলি উপজেলার বেহেলা এলাকায় নেকড়েটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন গ্রামবাসী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেকড়েটি ভারতের বিরল প্রজাতির ধূসর নেকড়ে (ইন্ডিয়ান গ্রে উলফ)। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) তথ্য অনুসারে, ধূসর প্রজাতির নেকড়ে বাংলাদেশে সবশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৪৯ সালে।

গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, প্রায়ই ওই নেকড়ে গ্রামে ঢুকে তাদের গরু-ছাগল খেয়ে ফেলছিল। নিজেদের গবাদিপশু রক্ষা করতেই নেকড়েটিকে মারতে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে রাতে গরু–ছাগল খেয়ে ফেলছিল নেকড়েটি। প্রথমে বাঘ হানা দিচ্ছে ভেবে ভয়ে রাতে ঘর থেকে লোকজন প্রয়োজন ছাড়া বের হতেন না। পরে ৪ জুন সকালে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে খালে ফেলে প্রাণীটিকে মেরে ফেলেন। এই নেকড়েই তাঁদের গবাদিপশু খেয়ে ফেলেছে বলে তাঁদের ধারণা।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯৪০ সালে নেকড়ে–জাতীয় প্রাণী বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই নেকড়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ভারতের বন থেকে বাংলাদেশের উপকূল ভেসে আসতে পারে।

এ বিষয় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নয়ন মিস্ত্রি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর পর থেকেই এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গোয়ালঘর থেকে গরু-ছাগল কোনো একটি প্রাণী খেয়ে ফেলছে বলে অভিযোগ ওঠে। ৪ জুন সকালে স্থানীয় লোকজন প্রাণীটি পিটিয়ে মেরে ফেলেন। এরপর থেকে আর কোনো গরু–ছাগল ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, এ ধরনের নেকড়ে–জাতীয় প্রাণী ভারতের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ধূসর নেকড়েটির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তিনি জানান, এই অঞ্চলে আরও ধূসর নেকড়ে থাকার বিষয়ে অনুসন্ধান করছে তাঁর দল। তিনি বলেন, এটা খুব দুঃখজনক যে নেকড়েটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ঘটনাটি বিষয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।

অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এই এলাকায় নেকড়ে দেখা যায় না। এটি বিরল প্রজাতির ধূসর নেকড়ে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ধারণা করা যায়, নেকড়েটি ভারত থেকে এসেছে। ফণীর প্রভাবেও এটি দলছুট হয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে। খাবারের সন্ধানেই হয়তো সেটি লোকালয়ে ঢুকেছিল।

এদিকে বিরল প্রজাতির নেকড়েটিকে মেরে ফেলার ঘটনাটি নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে গত রোববার সংবাদ প্রকাশ করে ভারতের এনডিটিভি অনলাইন। এতে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুর দিকে নেকড়েটিকে মেরে ফেলেন বাংলাদেশের কৃষকেরা। তবে বিশেষজ্ঞদের কাছে মৃত নেকড়ের ছবি পাঠানোর পর নেকড়েটি ধূসর প্রজাতির বলে শনাক্ত হয়।

ধূসর নেকড়ের মতোই বাংলাদেশে অবলুপ্তির পথে ডোরাকাটা হায়না, বারশিঙ্গা (সোয়াম্প ডিয়ার) ও কৃষ্ণসার হরিণ।

ভারতের বন্য প্রাণী ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা ওয়াই ভি ঝালা এএফপিকে বলেছেন, ‘ছবি দেখার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এটা ভারতীয় ধূসর নেকড়ে। ভারতের তিন হাজার প্রাণীর মধ্যে বেশ কিছু বন্দী অবস্থায় আছে। ১৯৪০ সালের পর থেকে এরা তাদের আবাস বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।’

বরগুনার আলো