• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

দেশের সব স্কুল-মাদ্রাসায় চালু হচ্ছে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০১৯  

দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও মাদ্রাসা) ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা’ কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মাধ্যমে পরিচালিত ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পের আওতায় এই কার্যক্রম চালু করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক ও মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা বিষয়ে ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পটি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। প্রকল্পটির মেয়াদ সফলভাবে শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও নিজ উদ্যোগে ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা’ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পটির সফলতার কারণে এবার সারাদেশের সব প্রতিষ্ঠানকে এর আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’

ড. হোসেন আরও বলেন, ‘‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হচ্ছে এ বছর থেকে। এবার নতুন করে যুক্ত হচ্ছে দেশের পাঁচটি জেলার ২৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই লাখ সাত হাজার ৫২ জন শিক্ষার্থী। আর  ২০২১ ও ২০২২ সালে চালু হবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভগের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে দেশের অন্য ছয়টি বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্ধেকে চালু করা হবে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা কার্যক্রম।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এবং সরেজমিনে জানা গেছে, ধর্মভিত্তিক একটি মহলের বিরোধিতার পরও শেষ পর্যন্ত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠা ‘সবার জন্য জেন্ডার সমতা (জেমস) কর্নার’ বা ‘কিশোর-কিশোরী কর্নার’-এ খেলাধুলার মাধ্যমে স্কুল ও মাদ্রাসায় এই শিক্ষা নিচ্ছে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীরা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মাধ্যমে পরিচালিত ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের উদ্যোগেই এই কার্যক্রম এখনও চলছে। তাই শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই শিক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে।

মাউশি ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যসূচিতে ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা’ অন্তর্ভুক্ত করা হলেও শুরুতে স্কুল ও মাদ্রাসায় তা ঠিকমতো পড়ানো যাচ্ছিল না। শিক্ষকারই ছিলেন অস্বস্তিতে। এ অবস্থায়  ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’  নামে একটি প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়।২০১৪ সালে মাউশি এ প্রকল্প চালু করে। শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখে দেশের ৬০টি মাদ্রাসাসহ ৩৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এর অর্থায়ন করে। বেসরকারি সংস্থা কনসার্ন উইমেন ফর ডেভেলপমেন্ট (সিডব্লিউএফডি) এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে মাউশি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবছর শুরু হওয়া ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’   প্রকল্পের দ্বিতীয় পধাপ শেষ হবে ২০২২ সালে। এ পর্যায়ে জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, পটুয়াখালী ও রাঙ্গামাটি জেলায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের যৌন, প্রজনন-স্বাস্থ্যশিক্ষা দেওয়া হবে।  প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের অর্থায়ন করবে ক্যানাডা।
প্রকল্পের প্রথম ধাপ ঢাকা মহানগরের ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পটুয়াখালী, বরগুনা, বরিশাল শহরের মোট ৩৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কার্যযক্রম পরিচালিত হয়েছে সফলভাবে। এর মধ্যে ৫০টি মাদ্রাসাও ছিল। এ বছরই প্রকল্পের প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ হয়। এ ধাপে প্রকল্পভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার জন করে মোট এক হাজার ৪০০ শিক্ষককে ৫ দিনের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।আর প্রধান শিক্ষকরা অর্ধদিবস প্রশিক্ষণ নেন।

এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর থেকে থেকে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হচ্ছে। প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ থেকে ১৯ বছরের সব শিক্ষার্থীর জন্য এই শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। বয়ঃসন্ধিকালে শিক্ষার্থীরা যাতে ভুল পথে পরিচালিত না হয়, কুসংস্কারে বিশ্বাস না করে। তাই এটা জরুরি।

মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বলেন, ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ ছিল। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই আবারও এটি চালু করা প্রয়োজন।’

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মনি দ্বীপা রায় চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যেমন আগ্রহ বেড়েছে। অভিভাবকদের আগ্রহও অনেক বেশি। এই প্রকল্প যেন চলে (বন্ধ না হয়),আরও শিক্ষার্থীদের যেন এতে যুক্ত করতে পারি।’

যাত্রাবাড়ী থানার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভুল ধারণা এবং শিক্ষকদের অস্বস্তি দূর হয়েছে। ছেলেমেয়ের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি হচ্ছে। নারী-পুরুষের মধ্যে সমতার যে উপলদ্ধি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেটাও তৈরি হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা’  চালু করা প্রয়োজন।’

অভিভাবক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিজ্ঞান সম্মতভাবে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা পাওয়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার। বয়ঃসন্ধিকালেই তাদের এই শিক্ষা দিতে হবে। দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটা বাধ্যতামূলক করা উচিত।’

বরগুনার আলো