• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

যেভাবে এলো ইংরেজি ক্যালেন্ডার

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০২০  

২০১৯ শেষে চলে এলো ২০২০। ১ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় ইংরেজি নববর্ষ। কিন্তু সব সময়ই কি ১ জানুয়ারিতেই উদযাপিত হয়েছে নতুন বছর? নাকি এর ব্যতিক্রম ছিল?

সব সময় নতুন বছর ১ জানুয়ারি উদযাপিত হয়নি, এমনকী এখনো অনেক দেশেই ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে উদযাপিত হয় না। এছাড়া, দেশ ও জাতিভেদে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ক্যালেন্ডার ও সে অনুযায়ী আলাদা নববর্ষ। আধুনিক ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ইতিবৃত্ত জানতে যেতে হবে অনেক অনেক বছর আগের সময়ে।

অতি প্রাচীনকালে চাঁদের গতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হতো ক্যালেন্ডার। এতে ছিল ১২টি চন্দ্রমাস। তখন ২৯.৫ দিনে এক চন্দ্রমাস আর প্রায় ৩৬৫.২৪ দিনে হতো এক বছর। নির্দিষ্ট সময় পর পর অতিরিক্ত দিন যোগ করার জন্য যুক্ত হতো ১৩ নম্বর অধিমাস বা একটি অতিরিক্ত মাস।

মিশরীয়রাই প্রথম সৌর ক্যালেন্ডার ব্যবহার করেন। তারাই প্রথম বছরের দৈর্ঘ্য নির্ভুলভাবে পরিমাপ করতে পেরেছিলেন। সেটি প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৪২০০ সালের কথা। প্রতিবছর প্রায় একই সময় নীলনদের কূল ছাপিয়ে বয়ে যেত পানি। মিশরের পুরোহিতরা দেখলেন, বন্যার সময় সূর্য ওঠার আগে লুব্ধক তারা পূর্ব আকাশে ওঠে। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় কি-না দেখা জন্য তারা দিন গুনেছিলেন। দেখা গেলো, ঠিক ৩৬৫ দিন পর এটি আবার ঘটেছে। মিশরীয়রা তখন তাদের বছরকে ১২ মাসে ভাগ করলেন, প্রতিটি মাসে থাকতো ৩০ দিন। বছর শেষে পাঁচটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে হিসাব মেলানো হতো। মিশরীয় ক্যালেন্ডার ছিল প্রাচীনতম সৌর ক্যালেন্ডার।

রোমান শব্দ ‘ক্যালেন্ডস’ থেকে ক্যালেন্ডার শব্দটি এসেছে। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৭৩৮ সালে রোমান ক্যালেন্ডার চালু করেছিলেন রোমের প্রথম সম্রাট রমুলার। এ ক্যালেন্ডারের শেষ চার মাসের নাম রাখা হয়েছিল ল্যাটিন সেপ্টেম (সাত) থেকে সেপ্টেম্বর, অক্টেম (আট) থেকে অক্টোবর, নভেম (নয়) থেকে নভেম্বর এবং ডিসেম (দশ) থেকে ডিসেম্বর। তখন বছর গণনা করা হতো ১০ মাসে, তাতে থাকতো ৩০৪ দিন। 

সেসময় ফসল ফলনের সঠিক সময় নির্দিষ্ট করার জন্য ক্যালেন্ডারের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। শীতকালে ফসল হতো না বলে, শীতের দুই মাস তারা বছর গণনার সময় ধরতেন না। তাদের বছর শুরু হতো মার্চ মাস থেকে। তাই তারা বর্ষবরণ করতেন ১ মার্চ। দুই মাস যে তাদের বছর থেকে উধাও হয়ে যেতো, তা নিয়ে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপই ছিল না!

পরে খ্রিস্টপূর্ব ৭১৩ সালে রোমান শাসক ন্যুমা পম্পিলিয়াস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস দু’টি যুক্ত করেন। সে সময় ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের শেষ মাস। 

খ্রিস্টপূর্বে ৪৬ সালে বিখ্যাত রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার চালু করলেন নতুন ক্যালেন্ডার। এতে মিশরীয়দের আদলে সৌরবর্ষ ব্যবহার করা হলো, নাম দেওয়া হলো ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার’। এ ক্যালেন্ডারের বছর হতো ৩৬৫.২৫ দিনে। এবং প্রতি তিন বছরে একদিন বেড়ে হতো ৩৬৬ দিন। এ ক্যালেন্ডারেই প্রথম সপ্তাহের সাত দিনের নাম দেওয়া হলো। 

জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি চলে এলো বছরের প্রথমে। এছাড়া, সপ্তম মাস কুইনটিলিসের নাম পরিবর্তন করে জুলিয়াস সিজারের নাম অনুসারে রাখা হলো জুলাই। পরে অগাস্টাস সিজার নিজের নাম অনুসারে অষ্টম মাস সেক্সটিলিসের নাম বদলে রাখেন আগস্ট। তিনিই লিপইয়ার বা অধিবর্ষ চার বছরে করেন। অর্থাৎ, ফ্রেব্রুয়ারি মাসে প্রতি চার বছর অন্তর যুক্ত হয় একটি অতিরিক্ত দিন। ২০২০ সালও অধিবর্ষ, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ দিনে।

আমরা যে খ্রিস্ট বছর বা খ্রিস্টাব্দ বলি, তার সূচনা হয় আরও পরে। যিশুখ্রিস্ট যে বছর জন্মগ্রহণ করেন অর্থাৎ ৫৩২ সাল থেকে বছর গণনা শুরু করেন ডাইওনিসিয়াম এক্সিগুয়াম নামে এক পাদ্রি। এভাবেই সূচনা হয় খ্রিস্টাব্দের। 

১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে রোমের পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি জ্যোতির্বিদদের পরামর্শে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার পরিমার্জন করেন তৈরি করেন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। সেসময় পোপ গ্রেগরি ঘোষণা করেন, যেসব শতবর্ষীয় সাল ৪০০ দিয়ে বিভক্ত হবে, সেসব শতবর্ষ অধিবর্ষ হিসেবে গণ্য হবে। এ ক্যালেন্ডারের হিসাব বেশ নিখুঁত, তাই সব জায়গায় এটিই প্রচলিত হতে থাকে। 

আমরা যে ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলি সেটি তৈরি হয়েছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে। তার আগে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপিত হতো ২৫ মার্চ। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করেই আমরা ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করি প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি। ইংরেজরা ১৭৫২ সাল থেকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার শুরু করেন। পরবর্তীকালে আরও অনেক দেশই এ ক্যালেন্ডার ব্যবহার শুরু করে। তাই ১ জানুয়ারি ঠিক ইংরেজি নববর্ষ নয়, বরং রোমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ। 

বরগুনার আলো