• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

শপথ পাঠ করে ডাকাতি!

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২০  

ডাকাতি করার আগে একসঙ্গে মিলিত হতো ওরা। গোল হয়ে একসঙ্গে মাটিতে হাত রেখে শপথ করতো। দল নেতা শপথ পড়াতো সবাইকে। ডাকাতি করতে গিয়ে যা-ই ঘটুক না কেন, তারা সবাই এক সঙ্গেই থাকবে। কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে, একে অপরের নাম প্রকাশ করবে না— এই প্রতিজ্ঞা করে ডাকাতি শুরু করে ওরা। ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি ডাকাতিতে ব্যবহার করে ককটেলও। ডাকাতি করতে গিয়ে ঝুঁকিতে পড়লে  ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এই ডাকাত দলের এক সদস্য নিজেই তৈরি করে ককটেল। রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকার একটি ডাকাতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে একদল ডাকাত গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

এই ডাকাত চক্রটি গ্রেফতারে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কামরুজ্জামান সরদার বলেন, ‘এই ডাকাত দলের সদস্যরা শপথ পাঠ করে ডাকাতি করে। ডাকাতির কাজে ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি ককটেলও ব্যবহার করে। তাদের গ্রুপে আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

তুরাগ  থানার পুলিশ জানায়, গত ১৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় নৌবাহিনীর সিভিল স্টাফ সাজ্জাদুর রহমানের বাসার নিচতলা ও দোতলার বাসায় গ্রিল কেটে একদল মুখোশধারী ডাকাত ভেতরে প্রবেশ করে। তারা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ প্রায় চার লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে তারা একটি ককটেল ফাটিয়ে যায়। এঘটনায় সাজ্জাদুর রহমান বাদী হয়ে ডাকাতির মামলা দায়ের করেন।

ডাকাত দলের দুই সদস্য

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা কোনও কূল-কিনারা পাচ্ছিলেন না। গত বছরের জুলাই মাসে সংগঠিত অপর একটি ডাকাতির ঘটনায় সম্পৃক্ত একজন ডাকাত সর্দারের  খোঁজ করতে শুরু করেন। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন, মাদারীপুরের কালকিনি থানা ও ময়মনসিংহের ত্রিশালে দুটি ডাকাতির ঘটনায় মনির নামে ওই ডাকাত সর্দার ছয় মাস ধরে জেলে রয়েছে। পরে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনিরের ছয় মাস আগের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে তার কয়েকজন সহযোগীকে চিহ্নিত করা হয়। প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন, ডাকাত সর্দার মনির  জেলখানায় থাকলেও তার সহযোগীরা নিয়মিত ডাকাতি করে আসছে।

ওই তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ভোলার চরফ্যাশন থানা এলাকা থেকে মাসুদ ওরফে ভোলা মাসুদ (৩৭), যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ফজলে সরদার (৪২), ভাটারা থেকে হান্নান সরদার (৩৫), পশ্চিম আগারগাঁও এলাকা থেকে খায়রুল (৩৫), তুরাগের বাউনিয়া এলাকা থেকে সোহরাব হোসেন কামাল (৪২) নামে পাঁচ ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাদের সহযোগী মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকার মা জুয়েলার্সের মালিক মামুনকেও গ্রেফতার করা হয়। ছয় ডাকাতের মধ্যে পাঁচ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

পুলিশ হেফাজতে এক ডাকাত

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতার ডাকাতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা সবাই ডাকাত সর্দার মনিরের সহযোগী হিসেবে ডাকাতি করতো। তাদের অন্যতম আরেক সদস্য সোহেল জমাদ্দার (৩৫) মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একটি ডাকাতি মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। মনির সর্দারের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা ডাকাতি করতো। মনিরের অবর্তমানে সোহরাব নামে আরেকজন ডাকাত দলটিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। তাদের গ্রুপে একজন সদস্য রয়েছে— যে নিজেই ককটেল তৈরি করতে পারে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করতে চাননি পুলিশ কর্মকর্তারা।

ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা স্বর্ণালঙ্কারপুলিশ জানায়, ডাকাত দলের এই চক্রটি রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। গত ২৫ জানুয়ারি মধ্যরাতে পল্লবীর আলোবদিরটেক এলাকায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোহাম্মদ আতাউর রহমানের বাসায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ প্রায় ১৮ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া তারা গত বছরের জুলাই মাসে তুরাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বাসায়ও ডাকাতির চেষ্টা করে। তবে বাধার মুখে একাধিক ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। এর বাইরে মাদারীপুর সদরে, কালকিনি, ডাসার এলাকা, শিবচর , ময়মনসিংহের ত্রিশাল, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুরের শ্রীপুর, যশোরের নিউমার্কেট থানা, বরিশাল শহরের বন্দর এলাকায় ডাকাতি করার কথা স্বীকার করেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডাকাতি করার একদিন আগে এই দলের সদস্যরা টার্গেট করা বাসাটি রেকি করে আসে। ওই বাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বাসায় কী পরিমাণ মালামাল পাওয়া যেতে পারে, পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে। পরে প্রস্তুতি নিয়ে মধ্যরাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটায়।

বরগুনার আলো