• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

শীতে প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে নিপা ভাইরাসের

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০১৮  

শীতে প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে নিপা ভাইরাসের


নিপা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশ এ খুব বেশি দিন ধরে নয়।তবে হঠাত প্রাদুর্ভাবে এটি ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়

**আসলে কী এই নিপা ভাইরাস?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO এর মতে নিপা ভাইরাস (NiV) সংক্রমণ এক নতুন ধরনের zoonosis  প্রকৃতির ভাইরাস সংক্রমণ  যা  মানব শরীরে নানান গুরুতর  শ্বাসজনিত মারন রোগ থেকে ক্ষতিকর এনসেফাইলাইটিস  রোগের সৃষ্টি করছে । Zoonosis হল এমন ধরনের রোগ  যা পশু থেকে মানুষের শরীরে সংক্রামিত হতে পারে।

WHO, এই ভাইরাসের  প্রাথমিক বাহক হিসাবে শুকরকে চিহ্নিত করেছে। তবে  ফল ভক্ষনকারী অনেক পশু-পাখিও এই ভাইরাস বহন করতে পারে। নিপা বা নিভ প্রধানত বাদুর জাতীয় পশুর থেকেই ছড়ায়।  নিপা অপেক্ষাকৃত নতুন ভাইরাস যা অতি সহজেই বাদুর জাতীয় তৃণভোজী প্রাণীর থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। শুধুমাত্র বাদুর নয়, নিপা শূকরের বর্জ থেকেও ছড়ায়।

১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার নিপাতে প্রথম এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। সেখানে বাড়ির পোষ্য কুকুর, বেড়াল, ঘোড়া, ছাগলের দেহে এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ওই অঞ্চলে প্রতিটি বাড়িতেই শূকর প্রতিপালন হয়। গবেষণার পর দেখা যায়, ওই শূকরদের থেকেই নিপার প্রভাব ছড়িয়েছে পোষ্যদের দেহে। এরপর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

অভিজ্ঞ ভাইরোলজির  অধ্যাপক দের মতে , বাতাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমণ সম্ভব নয়। যদি কোন ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসে বা এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোন পাখির খাওয়া ফল খায়, তখনই এই ভাইরাসের সংক্রমণ সম্ভব।

এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাস আক্রান্ত মানুষ বা পশুর জন্য কোন প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। আর তাই একমাত্র প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে উপযুক্ত চিকিৎসা তত্ত্বাবধানে রোগীদের বাঁচানো সম্ভব।

**নিপা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ কী?

চিকিৎসকদের মতে, নিপা ভাইসারের আক্রমণে মৃত্যুর আশঙ্কা শতকরা ৭০ শতাংশ।   সাধারণভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথমে আপনার যেসমস্ত শারীরিহেল্‌থহেল্ক‌থ অসুস্থতা  দেখা যাবে সেগুলি হল শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা বমি করা,  জ্বর এবং মাথা যন্ত্রণা ও ঝিমুনি। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ৩–১৪ দিনের মধ্যে এই উপসর্গ শুরু হয়ে,  যা হেল্‌থএক থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের ,  প্রাথমিক পর্যায়ে  এনকেফেলাইটিসের শিকার হতে হয়।   পরবর্তী পর্যায়ে জ্বর বাড়ে ও সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন রোগী। এরপর ধীরে ধীরে কোমাতে চলে যায় সে। আর এরপর মৃত্যু অনিবার্য।

যদি কোন ব্যক্তির এইসব শারীরিক অসুস্থতা দেখা যাচ্ছে তাহলে তাদের খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং বাড়াবাড়ি হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাওয়া উচিত। কারণ নিপা ভাইরাস খুব তাড়াতাড়ি সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং খুবই মারণ তার সংক্রমণ। এখনও পর্যন্ত এই রোগ নিরুপায়ের উপায় বাজারে আসেনি। ফলে, এর প্রকোপ সেভাবে আটকানো সম্ভব হয় না।

**রোগ নির্ণয়

সাধারণ পরীক্ষায় এ রোগ ধরা পড়ে না৷ থ্রোট সোয়াব, অর্থাৎ গলা থেকে তরল নিয়ে রিয়েল টাইম পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন নামের পরীক্ষা করা হয়৷ শিরদাঁড়ার তরল, ইউরিন ও রক্ত পরীক্ষাও করতে হয়৷ সেরে ওঠার পর রোগটা নিপা ভাইরাস থেকেই হয়েছিল কিনা জানতে আইজিজি ও আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখা হয়৷

**নিপা ভাইরাস প্রতিরোধে যা যা করণীয় 

চিকিৎসক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “যেসব ফল আমরা খাই তা গাছে থাকাকালীন অনেক সময়েই বাদুর বা অন্য প্রাণীরা খেয়ে থাকে। ফলে ভাইরাস ওই ফলে থাকতে পারে। তাই ফল ও কাঁচা শাকসবজি না খাওয়াই শ্রেয়। সম্ভব হলে গরম জলে ধুয়ে শাকসবজি রান্না করা উচিত। খেজুর বা গুড় দিয়ে তৈরি খাপার সাময়িক এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।”  যেহেতু বাদুড় এই ভাইরাসের প্রধান বাহক এবং বাদুড়ের প্রিয় পানিয় খেজুরের রস  তাই দেখা গেছে খেজুরের রস পান করাই এই রোগ সংক্রমণের মুল কারন।

এছাড়া ও এই ভাইরাসে  আক্রান্ত রোগীদের দেহের তরলের মাধ্যমে  এই রোগ  চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত গতিতে। ঠিক এই কারনেই কেরালাতে কর্মরত এক নার্সের প্রান গেছে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা করতে গিয়ে।  তাই এই রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে গেলে রোগীদের সংস্পর্শে একদম আসা যাবে না। আর যদি আসেন তাহলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং জীবাণুনাশক  সাবান বা তরল দিয়ে নিজেকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে প্রতিবার।

**সাবধানতা

অসুস্থ বা রোগগ্রস্ত শূকর, বাদুরের মতো প্রাণী থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভালো। গাছ থেকে পড়ে যাওয়া ফল না খেলেই ভালো হয়। বিশেষ করে যে ফল পাখি বা বাদুরে খেয়েছে এমন

আমাদের গ্রাম গঞ্জে বাদুরের মাধ্যমে রোগ ছড়ানোর অন্যতম কারন হচ্ছে শীতকালে খেজুরের রস। কাচা খেজুর রস খেলে এবং বাদুরে খাওয়া আম, ডুমুর ইত্যাদি ফল খেলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা  থাকে। 


নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহ হলে চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হয়ে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।

বরগুনার আলো