• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা

‘ষড়যন্ত্রকারীদের উৎখাত করা হবে’

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০  

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে সত্যিকার অর্থে সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য আবারও দেশবাসীকে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানান। তিনি ১৯৭২ সালের ৪ জুন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের উদ্যোগে ব্রিটেনের শ্রমিক দলীয় সংসদ সদস্য, স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির অক্লান্ত কর্মী জন স্টোনহাউসকে সংবর্ধনা এবং জাতীয় গণমুক্তি দলের আওয়ামী লীগে যোগদান উপলক্ষে প্রীতি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান। এসময় তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক করে দেন। এর আগেও একাধিক বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করেছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি শ্রেণি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের ধরিয়ে দিতে জনগণকে আহ্বানও জানান বঙ্গবন্ধু।

১৯৭২ সালের ৫ জুনের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর৪ জুনের সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যেসব ষড়যন্ত্রকারী ভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের উৎখাত করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার জন্য জনগণ অনেক আত্মত্যাগ করেছে। তাদের মুখে এখন হাসি ফুটিয়ে তুলতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। তেমনই শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন হওয়ায় এর পক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজয়ী হওয়া সম্ভব হয়েছে।’

জাতীয় গণমুক্তি দলের আওয়ামী লীগে যোগদান বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় চার নীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া হবে।’

যশোরে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা

১৯৭২ সালের ৪ জুন যশোরে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০ জন যাত্রী নিহত এবং শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। ৫ জুনের দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় এটি ছিল প্রধান খবর। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। মৃতদেহগুলো অধিকাংশই বিকৃত এবং ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়—আহত বাকিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যশোরে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। মৃত ও আহতদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, পুলিশ এবং দমকল বাহিনী জরুরি উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।

১৯৭২ সালের ৫ জুনের দৈনিক পূর্বদেশরাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে শ্রমিক প্রতিনিধিত্বশীল

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৪ জুন শ্রমমন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী এ তথ্য প্রকাশ করেন। কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাকালে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা বোর্ডে পাঁচ জন সদস্য থাকবেন। এই পাঁচ জনের মধ্যে দুই জন শ্রমিক সদস্য থাকবেন।’ ধর্মঘটের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করা একশ্রেণির ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের কর্মসূচি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের এই পদক্ষেপ সফল হবে না। কারণ, তাদের পেছনে জনসমর্থন নেই।’ এখানে উল্লেখযোগ্য যে, নতুন রাষ্ট্রের দ্রুত পুনর্গঠন নিশ্চিত করতে ও উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ছয় মাসের জন্য ধর্মঘট নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জন স্টোনহাউস, দৈনিক পূর্বদেশ ৫ জুন ১৯৭২

৭ জুন নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি

আগামী ৭ জুন সফল করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনগুলো বিভিন্ন পোস্টার ও লিফলেটসহ নানাবিধ শোভাযাত্রা বের করার মধ্যদিয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাল বাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করার কথা। সেদিন তিনি সেখানে বক্তৃতা করবেন। ৪ জুন এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন— দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ ও আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় অন্যান্য নেতা। এই শোভাযাত্রা আওয়ামী লীগ অফিস থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। ৭ জুন রমনা রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠেয় ওই সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনার জন্য এবং কর্মসূচিতে যোগদানে ইচ্ছুক জনগণের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। দিনটির প্রস্তুতি হিসেবে  ৩ জুন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে রমনা থানার সব ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজী গোলাম মোস্তফা। এ সময় পত্রিকাগুলোতে বিভিন্ন লিফলেট ও পোস্টার ছাপা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা ছেষট্টির গণবিপ্লবের মাধ্যমে দাবি করে আগামী ৭ জুন গৌরবময় দিনে দৈনিক পূর্বদেশের বিশেষ সংখ্যা বের হবে বলেও ঘোষণা করা হয়।

বরগুনার আলো