• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সাপের তেল বিক্রি করেই রাখাল থেকে কোটিপতি!

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২০  

ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকেই প্রতারণা করে থাকে! কেউ হয়ত বা মাপে কম দেয় আবার কেউ ভালো বলে মানহীন পণ্য বিক্রি করে! যুগ যুগ ধরেই এমন হয়ে আসছে। আর স্বাভাবিকভাবেই এসব প্রতারণার পাশেও ভালো ব্যবসায়ীরাও মুহূর্তেই নাম তৈরি করেন। কোনো ব্যবসায়ী যদি ভালো পণ্য বিক্রি করে তবে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। 

এ কারণেই অনেক ক্রেতার সেই বিক্রেতার উপর আস্থা ও ইতিবাচক ধারণা জন্মাবে। আর যে কোনো বস্তুর সঙ্গে খাঁটি তকমা থাকলে প্রয়োজন এবং সাধ্য অনুযায়ী তা সংগ্রহ করে অনেকেই। তবে এর বিপরীত ঘটনাও রয়েছে। ২০ শতকের দ্বিতীয় দশক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্নেক ওয়েল সেলসম্যান’ দ্বারা প্রতারণামূলক ভেজাল দ্রব্য বিক্রি শুরু হয়। এর পেছনে অবশ্য যৌক্তিক কারণ ছিল। সেই কাহিনী নিয়েই এই লেখা।   

স্নেক ওয়েল সেলসম্যানের নাম ছিল ক্লার্ক স্ট্যানলি। ১৮৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অ্যাবিলিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৮৭০ এর দশকে তিনি রাখাল হিসেবে কাজ করেছেন। প্রায় ১১ বছর রাখাল হিসেবে কাজ করার পর হোপি ইন্ডিয়ানদের সঙ্গে কাজ করতে থাকেন তিনি। হোপি ইন্ডিয়ান মূলত একটি উপজাতি গোষ্ঠী। যারা সাপের নাচ দেখানোর জন্য বিখ্যাত ছিল। 

 

এভাবেই সে দোকান দিয়ে তেল ফেরি করত

এভাবেই সে দোকান দিয়ে তেল ফেরি করত

ক্লার্ক স্ট্যানলি দাবি করেন তিনি হোপি ইন্ডিয়ানদের কাছ থেকে সাপের তেল উৎপাদনের কৌশল সম্পর্কে জ্ঞাত। তার মতে, সাপের তেলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, প্রদাহ, আর্থ্রাইটিস, পশুর কামড় এবং স্ক্র্যাচ এর মতো জটিল রোগের নিরাময় ঘটে। 

স্ট্যানলি একজন খুব ভালো অভিনয়শিল্পীও ছিলেন। প্রথম দিকে তিনি নিজের উৎপাদিত সাপের তেল গাড়িতে ফেরি করে বিক্রি করতেন। এজন্য বিভিন্ন স্থানে শো করতেন। তার নিখুঁত অভিনয় এবং উপস্থাপনাভঙ্গীর জন্য তার শো’গুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। সেগুলো দেখতে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাত। 

মঞ্চে উপবিষ্ট স্ট্যানলি বিশেষ ধরণের পোশাক পরে একটি বস্তা থেকে জীবন্ত রেটল স্নেক বের করে আনতেন। দর্শক এটা দেখে ভয় এবং আনন্দ দুটোই পেত। তিনি সাপটি চিরে ফুটন্ত পানিতে দিতেন। কিছুক্ষণ পর সাপের চর্বি ফুটন্ত পানির পাত্রের উপরে উঠে আসত। এরপর স্ট্যানলি সাপের চর্বি বোতলে ভরে বিক্রি করতেন। যা ‘স্ট্যানলি স্নেক ওয়েল’ নামে পরিচিত ছিল। 

স্ট্যানলির শো দেখতে আসা জনগণ ৫০ সেন্ট দিয়ে প্রতি বোতল সাপের তেল সংগ্রহ করত। বোতলগুলোর বেশিরভাগ অবশ্য আগেই ভরা থাকত। কয়েক বছর ফেরি করে বিক্রির পর স্ট্যানলি এবার ঠিক করলেন তার ওষুধ বাজারজাত করবেন। এজন্য বোস্টনের একজন ওষুধ বিক্রেতার সহায়তায় তার সাপের তেল বাজারজাত শুরু করেন স্ট্যানলি। 

 

দীর্ঘদিন পর স্ট্যালিনের প্রতারণা ধরা পড়ে

দীর্ঘদিন পর স্ট্যালিনের প্রতারণা ধরা পড়ে

তার এই সাপের তেলের বিক্রি ও চাহিদা দিনকে দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৮৯৩ সালে ইলিনয়ের একটি প্রদর্শনীতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হন স্ট্যানলি। ফলে বেভারলি, ম্যাসাসুসেটস এবং রোড আইল্যান্ডে স্ট্যানলি সাপের তেল উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। স্ট্যানলির ব্যবসা ক্রমাগত বড় হতে থাকে।  

১৯০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পিওর ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাক্ট পাশ হয়। এই আইনে খাদ্য এবং ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কঠোর নতুন মান নির্ধারণ করা হয়। ১৯১৬ সালে এই আইন কার্যকর করা হয়। কর্তৃপক্ষ সেসময় ক্লার্ক স্ট্যানলির সাপের তেলের বিষয়ে জানতে পারে। 

এরপর সেগুলোর মান পরীক্ষার জন্য একটি চালান জব্দ করে তারা। স্ট্যানলির উৎপাদিত পণ্য পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাতে সাপের কোনো উপাদান নেই। খনিজ তেল, পশুর চর্বি, কর্পূর, গোল মরিচ এবং তার্পিনের সংমিশ্রণে ওই তেল তৈরি করা হত। 

স্ট্যানলির প্রতারণা সবাই জানতে পারে। তার লাভজনক ও প্রতারণামূলক ব্যবসা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। প্রতারণার জন্য মোটা অংকের জরিমানাও গুণতে হয় তাকে। এরপর থেকে জালিয়াতিযুক্ত পণ্যের ক্ষেত্রে ‘স্নেক ওয়েল সেলসম্যান’ কথাটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

বরগুনার আলো