সেদিন ছিল পবিত্র শবে বরাত
১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর। পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর তনয়া শেখ হাসিনার যখন বিয়ে হয় বঙ্গবন্ধু তখন জেলে। সেদিন ছিল পবিত্র শবে বরাত। নবদম্পতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আশীর্বাদ নিতে কারাগারে যান। বড় মেয়ের জামাই মেধাবী ছাত্রনেতা ওয়াজেদ মিয়াকে নিজের হাতের রোলেক্স ঘড়িটি উপহার দেন বঙ্গবন্ধু। সহজ, সরল, সদা সত্যভাষী ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় অনন্য ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত। রংপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমানের প্রস্তাবে তাঁকে শেখ হাসিনার স্বামী হিসাবে পছন্দ করেন বঙ্গবন্ধু। এই বিশ্বাস ও ভালোবাসার মর্যাদা আমৃত্যু দিয়ে গেছেন ড. ওয়াজেদ। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের হাল ধরেন তিনি। আর ১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের পর খ্যাতিমান এই বিজ্ঞানী হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার একমাত্র অভিভাবক। বিশাল মহীরুহের মতো ছায়া দিয়ে আগলে রাখেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। প্রচারের আলো এড়িয়ে নীরবেই পালন করে যান কর্তব্য। রাজনীতিক পরিবারের সদস্য হয়েও নিজের পরিচয়ে ভাস্বর হয়েছিলেন দেশের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া। রাজনৈতিক বলয়ে থেকেও বিজ্ঞানী হিসাবে নিজের গবেষণা নিয়ে আলাদা জগৎ তৈরি করেছিলেন তিনি। নির্লোভ, নিরহঙ্কার, সৎ এ খ্যাতনামা বিজ্ঞানীর জন্ম ১৯৪২ সালে ১৬ ফেব্রয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। মরহুম আবদুল কাদের মিয়া ও মরহুমা ময়জুন নেছা বিবির সন্তান ওয়াজেদ মিয়াকে সবাই 'সুধা মিয়া' নামেই চিনতেন। রংপুরের পিছিয়ে পড়া এক গ্রামে জন্ম, সেখানেই বেড়ে ওঠা। তারপরেও কিন্তু নিভৃতচারী মেধাবী এ মানুষটি নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন শিক্ষার মাধ্যমে। মেধাবী হিসাবে ছোটবেলাতেই শিক্ষকদের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। ওয়াজেদ মিয়ার শিক্ষাজীবন শুরু হয় স্থানীয় চক করিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারপর পীরগঞ্জ হাইস্কুলে। ১৯৫৬ সালে রংপুর জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন রাজশাহী সরকারী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্মাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবছরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের 'ডিপেস্নামা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স' সম্পন্ন শেষে ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন মেধাবী ছাত্র ওয়াজেদ মিয়া। পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। ১৯৬১ সালের প্রথম দিকে ছাত্রলীগে যোগ দেন তিনি। ১৯৬১-১৯৬২ শিক্ষা বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬২ সালের ২ ফেব্রম্নয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর প্রথম সাৰাত ঘটে এবং ওই বছরেই জেনারেল আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেফতারও হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারারুদ্ধ, তখন তার ঘনিষ্ঠ সহকারী পীরগঞ্জের সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমানের অভিভাবকত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ড. ওয়াজেদ মিয়ার বিয়ে হয়। যেভাবে হলো বিয়ে: লন্ডন থেকে পিএইচডি শেষ করে ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ফিরে আসেন এবং ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদে যোগ দেন আণবিক শক্তি কেন্দ্রে। কিছুদিন পরে রংপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান তার গুলশানের বাসায় তাকে ডেকে নিয়ে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলেন। জানতে চান, অতি তাড়াতাড়ি তিনি বিয়ে করবেন কিনা। ওয়াজেদ মিয়া বলেন, তিন মাসের মধ্যে বিয়ে করতে চাই। মতিউর রহমান জানতে চান, কেমন পাত্রী তার পছন্দ। ওয়াজেদ মিয়া বলেন, কোটিপতির কন্যা কিংবা আপস্টার্ট মেয়ে হওয়া চলবে না। মেয়েকে অবশ্য সুরুচিসম্পন্ন, অমায়িক ও সদাচার স্বভাবের হতে হবে। এর ১০ দিন পর মতিউর রহমান আবার তাকে বাসায় ডেকে নেন। জিজ্ঞেস করেন, তুমি মুজিব ভাইয়ের মেয়ে হাসিনাকে দেখেছো? আমার মনে হয়, ওর সঙ্গে তোমাকে খুব মানাবে। ওয়াজেদ মিয়া বলেন, সে কি করে সম্ভব? শেখ সাহেবকে তো আমি ভাই বলে ডাকি। মতিউর রহমান বলেন, সেটা রাজনৈতিক সম্পর্ক। দু’দিন পর ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মতিউর রহমানের বাসায় আসেন বেগম মুজিব, শেখ কামাল, শেখ শহীদ ও একজন মুরব্বি। এর অল্প কিছুক্ষন পরে হাসিনা সেখানে আসেন। তাকে ওয়াজেদ মিয়া জিজ্ঞেস করেন, তুমি হাসিনা না? হাসিনা বলেন, হ্যাঁ, আমি হাসিনা। তারপর সেখান থেকে চলে যান। এরপর বিয়ের প্রস্তাবে ওয়াজেদ মিয়া সম্মতি জানান। বেগম মুজিব জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলগেটে শেখ সাহেবের সঙ্গে আলাপ করেছেন। তিনি ওইদিনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা বিশেষভাবে বলেছেন। তার পরামর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেদিনই বিয়ের কথা পাকা করতে সম্মত হন ওয়াজেদ মিয়া। এরপর হাসিনার হাতে আংটি পরিয়ে দেন তিনি। ওই আংটি সেদিন দুপুরে বায়তুল মোকাররম থেকে কিনেছিলেন ওয়াজেদ মিয়া। পরিয়ে দেয়ার সময় দেখা যায়, আংটিটি হাসিনার আঙুলের মাপের চেয়ে বেশ বড়। এরপর ওয়াজেদ মিয়ার আঙুলে আংটি পরিয়ে দিয়ে দোয়া করেন বেগম মুজিব। পরদিন ১৭ নভেম্বর বিয়ের আক্ত (রুসমত) সম্পন্ন হয়। সেদিন ওয়াজেদ মিয়া স্টেডিয়াম মার্কেট থেকে একটি লাল-গোলাপি শাড়ি, মাঝারি আকারের ক্রিম রঙের নতুন ডিজাইনের একটি স্যুটকেস ও এক জোড়া স্যান্ডেল কিনেছিলেন। তার সঙ্গে কোন টাকা ছিল না। দাম পরিশোধ করেছিলেন বেগম মতিউর রহমান। সেদিন রাত সাড়ে ৮টায় জনাব ও বেগম মতিউর রহমান ওয়াজেদ মিয়াকে নিয়ে যান ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসায়। সেখানে উপস্খিত ছিলেন শেখ সাহেবের ছোট বোন জামাই তৎকালীন সরকারের সিনিয়র সেকশন অফিসার এটিএম সৈয়দ হোসেন ও অন্যান্য মুরব্বি। সেদিনেই বিয়ে পড়ানো ও কাবিননামা স্বাক্ষর করা হবে বলে ওয়াজেদ মিয়াকে জানানো হয়। সে রাতটি ছিল শবে বরাত। কাবিনপত্রে ২৫ হাজার টাকা বিয়ের দেনমোহরানা সাব্যস্ত করা হয়। বউ দেখার জন্য উপর তলায় যাওয়ার মুখে শেখ শহীদ একটি বড় তাজা লাল গোলাপ দেন ওয়াজেদ মিয়াকে। বাসরঘরে বসেছিলেন বউ বেশে হাসিনা, এটিএম সৈয়দ হোসেনের বড় মেয়ে শেলী ও ছোট বোন রেহানা। ওয়াজেদ মিয়াকে দেখেই রেহানা বলেন, দুলাভাই খালি হাতে এসেছেন বউ দেখতে। বউ দেখতে দেবো না। এর কিছুক্ষণ পর ওয়াজেদ মিয়া নিচে চলে আসেন। পরদিন বিকালে জেলগেটের কাছে একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ওয়াজেদ মিয়ার দেখা হয়। তিনি জড়িয়ে ধরে দোয়া করেন, তার হাতে একটি রোলেক্স ঘড়ি পরিয়ে দেন। ওই ঘড়ি ও বিয়েতে হাসিনাকে দেয়া শাড়ি এবং স্যুটকেস ড. ওয়াজেদ সযতেœ নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। সেদিন বাসায় ফিরে বেগম মুজিব তাকে বলেন, তুমি আমার বড় ছেলের মতো শেখ সাহেব অনুমতি দিয়েছেন। যথাসম্ভব তুমি আমাদের সঙ্গে থাকবে। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যান তিনি। ওয়াজেদ-হাসিনা দম্পত্তির বড় সন্তান কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই। একমাত্র মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একজন মনোবিজ্ঞানী। তিনি কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে।
বরগুনার আলো- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- পাকা বেদানা খুঁজে কিনবেন যে কৌশলে
- ইফতারে রাখুন স্বাস্থ্যকর চিকেন স্যান্ডউইচ
- মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছে এআই!
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- স্থলভাগে গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম, যুক্ত হচ্ছে তিন বিদেশী কোম্পানি
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে যত পরিকল্পনা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার
- ফার্স্টলুকে পূর্বাভাস, গ্যাংস্টার রূপে আসছেন শাকিব খান
- থামছে না অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়ে ঘরে ফিরলেন আরও ১০ জন
- দুস্থ নারীদের সরকারি চাল পাচার, ২ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
- দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের খাবার
- সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে ভেসে আসছে বিকট শব্দ, সীমান্তে আতঙ্ক
- লিচু বাগানে মিললো ১৮ কেজি গাঁজা
- বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের মায়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- মঠবাড়িয়ায় ৮‘শ ৯৬ টি সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রয়
- মাদারীপুরে সাজ্জাপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
- বরিশালে রমজান উপলক্ষ্যে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমান ডিম বিক্রয়
- বরিশালে বিপুল পরিমান কারেন্ট জাল ও মাছ সহ আটক ৮০
- উজিরপুরে এক কেজি গাঁজাসহ মাদক সম্রাট গ্রেফতার
- কথা না শোনায় স্বামীকে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করেন রুনা
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৩ নির্দেশনা
- প্রধানমন্ত্রীর গাড়ীবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
- কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
- কুড়িগ্রাম হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে
- আমতলী পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা দিলেন নান্নু
- সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা: দুইজনের যাবজ্জীবন, তিনজন খালাস
- আবাসিক হোটেলে ধারাবাহিক অভিযান, গ্রেপ্তার ২৫
- মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, উন্নত ও আধুনিক বরিশাল গড়ার আহ্বান
- ভুয়া ডিজিএফআই সদস্য ইমাম হাসান আটক
- বরিশালে যৌথ অভিযানে ৪৩ মণ জাটকা জব্দ, আটক ৪
- স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গবেষণায় গুরুত্বারোপ ইউজিসির
- আমতলীতে আবারো মেয়র হলেন মতিয়ার রহমান
- পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে ধূমপান
- বাড়ির উঠানে গাঁজা চাষ, অবশেষে ধরা মধু ফকির
- সমরাস্ত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
- নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল রাখতে কাজ করতে হবে : বিভাগীয় কমিশনার
- জাতিসংঘের রোহিঙ্গা ডাটাবেজ ব্যবহার করতে চায় সরকার
- বেইলি রোডে অগ্নিকান্ড কবলিত ভবনে ফায়ার এক্সিট না থাকায় হতাশ
- পাহাড়ের বুকে সড়ক, যোগাযোগের নতুন মাইলফলক
- দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্বের পরীক্ষায় বারবার উত্তীর্ণ হয়েছে পুলিশ
- শরীয়তপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত
- নতুন নতুন অপরাধ দমনে পুলিশকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
- ছাব্বিশে পাতাল রেল যুগে বাংলাদেশ