• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান

‘পদ্মা সেতু ১২০ বছর টিকবে’

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২২  

সব ষড়যন্ত্র আর প্রতিকূলতা ঠেলে প্রমত্তা পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের স্বপ্নের সেতু। প্রস্তুত যান চলাচলের জন্য। আগামী ২৫ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাহস আর সক্ষমতার স্মারক এই সেতু। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হলে ১২০ বছরেও কিছু হবে না এ সেতুর।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সময় সংবাদকে জানিয়েছেন, রক্ষণাবেক্ষণের একটি গাইডলাইন করে দেবেন তারা। সেই অনুসারে পরিচালনা করলে একশ’ বছরের বেশি টিকে থাকবে এই স্বপ্নের ইমারত।

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি রক্ষণাবেক্ষণের গাইডলাইন দেবো। কোন কাজ কখন করতে হবে, কোন কাজ প্রতিদিন করতে হবে, কোন কাজ সপ্তাহে একবার করতে হবে, কোন কাজ মাসে একবার করতে হবে, কোন কাজ বছরে একবার করতে হবে, কোন কাজ ৫ বছর পরপর করতে হবে- এই গাইডলাইন যদি তারা ঠিক মতো প্রতিপালন করেন, তবে এই সেতুর আয়ু শত বছরের বেশি না হওয়ার কোনো কারণ নেই।‘

১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়। এরপর ২০০১ সালে জাপানিদের সহায়তায় সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। ২০০৪ সালের জুলাই মাসে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকার সুপারিশ মেনে মাওয়া-জাজিরার মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে। মহাজোট সরকার শপথ নিয়েই তাদের নিয়োগ দেয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু করার চূড়ান্ত নকশা করা হয়।

স্বপ্নের এ সেতু তিনটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। চল্লিশ তলার সমান পাইলিং, দশ হাজার টনের বেশি ধারণ ক্ষমতার বেয়ারিং আর নদী শাসনে এ মেগা স্ট্রাকচার গড়েছে বিশ্ব রেকর্ড।

খরস্রোতার দিক দিয়ে আমাজনের পরেই পদ্মার অবস্থান। পানি প্রবাহের দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে। তেমন একটি নদীকে বশে এনে নিজের টাকায় এমন ইমারত। উদ্‌যাপনের এর চেয়ে বড় উপলক্ষ কিই বা হতে পারে ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের একটি দেশের! সেই উৎসবের প্রস্তুতি এখন পদ্মার দুই পাড়ে।

একেকটি পিলারের নীচের মাটি ছিল একেক রকম। শেষ পর্যন্ত ১২০ থেকে ১২৮ মিটার পাইলিং করতে হয়েছে। পিলারের ওপর দশ হাজার ৫০০ টন সহনশীল বেয়ারিং বসানো হয়েছে, যা একটি বিশ্ব রকের্ড। আবার রেকর্ড পরিমাণ নদী শাসন করেই বাগে আনতে হয়েছে পদ্মাকে।

এদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর স্ট্রিট লাইটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সাত দিনে পর্যায়ক্রমে ৪১৫টি লাইট জ্বালানো হয়। সেতু উদ্বোধনের দুই সপ্তাহ আগেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় স্বস্তিতে কর্তৃপক্ষ। তবে চোখ ধাঁধানো পদ্মা সেতুর আর্কিটেকচারাল লাইটি স্থাপন হবে উদ্বোধনের পর।

সড়কপথের লাইটিং রাতের বেলায় সেতুকে দিনের মতো আলোকিত রাখবে। শুক্রবার (১০ জুন) ৬২টি লাইট পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সংযোগসহ পুরো সেতুর লাইটিং কার্যক্রম সম্পন্ন হলো।

গত ৪ জুন প্রথম বাতি জ্বলে ২৪ ল্যাম্প পোস্টে। এরপর প্রতিদিনই বিভিন্ন মডিউলে এবং ভায়াডাক্টে পরীক্ষা চলানো হয় লাইটের। কর্তৃপক্ষ জানায়, রাত ছাড়াও ঘন কুয়াশা বা মেঘলা আকাশে আলো স্বল্পতায় অটো জ্বলে উঠবে বাতিগুলো।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘প্রকৃতিতে ঘন কুয়াশা বা আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে অর্থাৎ আলোস্বল্পতা থাকলে বাতিগুলো অটোমেটিকলি জ্বলে উঠবে।’

১৭৫ ওয়াটের প্রতিটি এলইডি লাইটের একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব সাড়ে ৩৭ মিটার। সহ্য করতে পারবে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বাতাসের গতি। মূল সেতুতে ৩২৮টি এবং দুই প্রান্তের সংযোগ সেতুতে ৮৭টি লাইট রয়েছে। পদ্মার বুকে এই আলোর ঝিলিক দারুণ উপভোগ করছেন পদ্মাপারের মানুষ।

এদিকে পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার দিন যতই এগিয়ে আসছে, সম্ভাবনা আর প্রত্যাশার নতুন দিকও উন্মোচিত হচ্ছে। কুয়াশা, বড় কোনো ঝড় কিংবা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে পদ্মা সেতুতে তাৎক্ষণিক মিলবে পূর্বাভাস। এ জন্য মাওয়া প্রান্তে থাকছে আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র। দুর্যোগের দুই ঘণ্টা আগেই জানা যাবে তথ্য।

প্রকল্প পরিচালক জানালেন, সেতুর মাওয়া প্রান্তেই থাকছে আবহাওয়া পূর্বাভাসের এই সাব স্টেশন। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের বেশ আগেই মিলবে সতর্কবার্তা। সে অনুসরে প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সেতুতে যান চলাচল।

তিনি বলেন, কুয়াশার কারণে যদি কিছুই দেখা না যায়, তখন কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। এজন্য এখানে আবহাওয়া কেন্দ্র থাকবে। আবহাওয়া বুঝে তারা সংকেত দেবেন। তখন পরিস্থিতি অনুযায়ী এক থেকে দেড় ঘণ্টা হয়তো বন্ধ রাখা হবে।  

একটি স্বপ্ন সংযোগ দেশে ২১ জেলার সঙ্গে তৈরি করবে কেন্দ্রের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ। সে লক্ষ্যে দুই প্রান্তেই এক্সপ্রেসওয়ে দিচ্ছে নতুন দিনের হাতছানি।  

সেতু চালু না হলেও এরই মধ্যে এই এক্সপ্রেসওয়ের কিছুটা হলেও সুফল পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে অপার সম্ভাবনাময় স্বপ্নের পদ্মাযাত্রা শুরু হলে এই অঞ্চলের মানুষের কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থাই না, আর্থসামাজিক অবস্থারও আমূল পরিবর্তন ঘটবে- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। 

বরগুনার আলো