• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী

রহস্যময় মুভিল গুহায় কোটি বছরের দৃষ্টিহীন জীবন

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

কোটি বছরের পুরাতন পোকামাকড়ের রহস্যময় স্থান মুভিল গুহা। অন্ধকার ও রহস্যময় এই গুহার সবচেয়ে বড় বিস্ময় হলো দৃষ্টিহীন প্রাণী। যারা দৃষ্টিহীনভাবেই কাটিয়ে দিতে পারে কোটি কোটি বছর। চলুন জেনে নেয়া যাক গুহার সেই রহস্যময় প্রাণীদের সর্ম্পকে।

গুহাটি রোমানিয়ার সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে ১৯৮৬ সালে আবিষ্কার হয়েছিল। যেখানে জীবনের বিবর্তন ঘটেছিল বিশ্বের অন্যান্য স্থানের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে।

মুভিল গুহা রোমানিয়ায় পেস্তেরা মুভিল নামে পরিচিত। গুহাটি দক্ষিণ-পূর্ব রোমানিয়ার কনস্টানিয়া কাউন্টিতে অবস্থিত, যার অবস্থান সমুদ্র উপকূল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে। 

 

 

১৯৮৬ সালে ক্রিশ্চিয়ান লাস্কু ভূতাত্ত্বিক তদন্তের জন্য খনন করা কৃত্রিম খাদের নীচে জায়গাটিকে আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর থেকে রোমানিয়ান কর্তৃপক্ষ গুহাটিকে সিল করে রেখেছেন।

তবে অনুসন্ধানের জন্য মুভিলের ভেতরে একশ’ জনেরও কম লোককে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কারণ গুহার প্রবেশপথটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।
২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের কভেনট্রির ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী রিচ বোডেন গুহায় প্রবেশকারী ২৯তম ব্যক্তি ছিলেন।

তিনি বলেন, গুহাটি বেশ উষ্ণ এবং আর্দ্র। তাই সেখানে নিজেকে উষ্ণ রাখার জন্য কোনো বয়লার স্যুট ও মাথার রক্ষার্থে কোনো টুপির প্রয়োজন হয় না ।


গুহাটি কেন অন্য গুহার চেয়ে ভিন্ন?

আমরা জানি কোনো প্রাণী অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারে না। সেক্ষেত্রে আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, মুভিলের বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা খুব কম।

এই গুহার জীবগুলো কেমোসাইটিসিস সিস্টেমের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে থাকে। কেমোসাইটিসিস সিস্টেম হলো, এটি খনিজ পদার্থের জারণ দ্বারা অক্সিজেনের অভাবে কাজ করে। 

প্রায়শই নাসার বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে গুহার পরিবেশের তুলনা করেন। জীবগুলোর এই বিচিত্র্য জীবনধারার জন্য গুহাটি অন্য গুহার চেয়ে ভিন্ন বলা হয়।

 

 


গুহায় কেন দর্শনার্থীরা র্দীঘসময় থাকতে পারে না?

মুভিলে অক্সিজেনের পরিমাণ মাত্র ১০%। কিন্তু একজন মানুষের সেই স্থানে টিকে থাকতে হলে অক্সিজেনের প্রয়োজন ২০%। গুহায় অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া আপনি প্রবেশের পর খুব দ্রুত মাথা ব্যথা অনুভব করবেন। এ কারণে দর্শনার্থীরা সেখানে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টার বেশি থাকতে পারে না।

মুভিল অনুসন্ধানের জন্য আপনাকে হ্রদে ডুব দিতে হবে। যেতে হবে ডুবে থাকা পাথরের ছোট ছোট ফাঁকা দিয়ে বায়ু বেল নামক আকাশসীমাগুলিতে। যেটি উত্থিত হবার আগেই আপনাকে পৌছাতে হবে। তাই মুভিলের বাকি রহস্যভেদ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই দিতে হবে হ্রদে ডুব।  

 

 


আকর্ষণীয় প্রাণী

মুভিল গবেষণায় অন্ধকার ও রুক্ষ পরিবেশে বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত ৪৮ টি প্রজাতি প্রাণী চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এ সব প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে মাকড়সা, জলের বিচ্ছু, সিউডোস্কোর্পিয়ানস, সেন্টিপিডস, লীচস এবং আইসোপডের নামে অ্যারে । তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই ৪৮ টি প্রজাতির মধ্যে ৩৩ টি সম্পূর্ণ বিচিত্র্য ও অনন্য। তাদের বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্বের অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। 


দৃষ্টিহীন প্রাণী

এ গুহার সবচেয়ে বিস্ময়কর ও আকর্ষণীয় প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি হলো দৃষ্টিহীন প্রাণী। 

রঙ্গকের অভাবের কারণে এরা দৃষ্টিহীন। কিন্তু প্রশ্ন হলো যদি দৃষ্টি না থাকে, তাহলে তারা প্রাণের সঞ্চার কিভাবে করে? 

উত্তর হলো এই প্রাণীগুলো অন্ধকারে চলাচল করতে অতিরিক্ত দীর্ঘ অঙ্গ, অ্যান্টেনা ব্যবহার করে। এটা দিয়ে তারা খুব সহজেই অন্ধকারে বাস করে।

গুহায় বসবাসরত প্রাণীদের খাদ্য

গুহায় বসবাসরত প্রাণীরা তাদের খাদ্যের জন্য সম্পূর্ণভাবে র্নিভর করে বাস্তুতন্ত্রের ওপর। আবার বাস্তুতন্ত্র নির্ভর করে কেমোসিন্থেটিক ব্যাকটেরিয়ার ওপর। কারণ এটি আলোর সহায়তা ছাড়াই বাতাস থেকে কার্বন আহরণ করে।

অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়াই কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করে। অন্যরা মিথেন থেকে কার্বন গ্রহণ করে। এছাড়া জলের ও দেয়ালের ব্যাকটিরিয়ার ফিল্ম হলের সব পুষ্টিই এই বাস্তুতন্ত্রে প্রবেশ করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেতরের বাতাস যতই ভারি কীটপতঙ্গের উপস্থিতি সেখানে ততই বৃদ্ধি পায়। 

রহস্যময় এই গুহায় ১৯৮৬ সাল থেকে এখন পযর্ন্ত ৩০ বিজ্ঞানী প্রবেশ করেছেন।

গুহাটির নানা জাতের কীটপতঙ্গ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এছাড়া বহু বছর পূর্বে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব কেমন ছিলো সে সম্পর্কেও এই কীট পতঙ্গগুলো ধারণা দিতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের, কারণ সেখানকার পরিবেশ অনেকটা লাখো বছর আগের পৃথিবীর মতো। 

গুহার প্রাণীগুলো এতদিন বেঁচে থাকার যথাযথ কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন পরীক্ষায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে গুহাটির ভেতর দিয়ে প্রবাহিত জলেও কোনো খাদ্যকণার উপস্থিতি নেই।

আবিষ্কৃত হওয়ার ৩৪ বছর পরও এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিচ্ছিন্ন বাস্তুতন্ত্র। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে এর আরো অনেক অনাবিষ্কৃত রহস্য রয়ে গেছে যা বিজ্ঞানকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

বরগুনার আলো