• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী

কালিমায়ে তাইয়েবা’র ফজিলত ও আহ্বান

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

ইসলামের কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এর অগণিত ফজিলত রয়েছে। দুনিয়ার সকল কিছুর মধ্যে এই কালিমার মর্যাদা সর্বোৎকৃষ্ট এবং সকল কালিমা ও কালাম থেকে একক।

সকল সৃষ্টজীব এই কালিমার মুখাপেক্ষী। এর প্রচার ও প্রসারের জন্য হাজারো নবী-রাসূলের দীর্ঘ ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। এই কালিমার মর্মবাণী মানুষদেরকে বুঝানোর জন্য অসংখ্য আসমানি কিতাবও অবতীর্ণ হয়েছে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত দাউদ (আ.) এর সহিফা হোক বা হজরত ইসা (আ.) ও হজরত মুসা (আ.) এর ইনজিল ও তাওরাত হোক কিংবা সরকারে কায়েনাত হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর ওপর অবতীর্ণ পবিত্র কোরআন হোক সকল যুগের সকল আসমানি কিতাবই এই কালিমা জ্বীন ও মানুষের নিকট প্রচার-প্রসারের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে।

এই কালিমা গ্রহণ করা না করা হিসেবে সকল মানুষকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যারা এই কালিমা গ্রহণ করবে তারা হলো মুসলিম এবং যারা গ্রহণ করবে না তারা হলো কাফের। কালিমার বিশেষত্ব হলো, যারা একে মেনে চলবে তারা সর্বোত্তম মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে, আর যারা মেনে চলবে না তারা সর্ব নিকৃষ্ট মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। আখেরাতের সর্বশেষ মানজিল জান্নাত-জাহান্নাম এই কালিমা দ্বারাই নির্ণয় হবে। তারাই জান্নাতবাসি হবে যারা এই কালিমাকে গ্রহণ করে ঈমানের হালতে মারা যাবে, আর জাহান্নামে তারাই যাবে যারা একে অস্বীকার করে মৃত্যু বরণ করবে।

 

কালিমায়ে তাইয়েবা: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ 

এই কালিমা দীন ও ইসলামের মূল ভিত্তি এবং ঈমানের মূল স্তম্ভ। এই কালিমাকে কালিমায়ে শাহাদাত (সাক্ষ্যের কালিমা) ও দারুস সাআদাত (সাফল্যের ঘর) বলা হয়। এটি এমন একটি কালিমা যার ফজিলত বর্ণনা করতে দুনিয়া অক্ষম। স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা এই কালিমার ব্যাপারে বলেছেন, এই কালিমার সাক্ষ্য ছাড়া কোনো মানুষ বা জীন দুনিয়াতে ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম না। 

সূরা আলে ইমরানে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, এ কথার সাক্ষ্য দেন ফেরেশতাগণ এবং জ্ঞানী ব্যক্তিগণ যারা ন্যায়বিচারের ওপর অটল রয়েছেন। তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ এই কালিমার কথা সকল নবী ও রাসূল বলেছেন এবং তাদের নিকট ওহি অবতীর্ণ করে বলা হয়েছে, ‘আমি যে নবীই প্রেরণ করেছি, তার নিকট এ ওহি প্রেরণ করেছি যে, আমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, সুতরাং আমারই ইবাদত করো।’ (সূরা আম্বিয়া)

সৃষ্টিজীবের ওপর মহান আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য ও অগণিত নেয়ামত রয়েছে। এ সকল নেয়ামতের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট নেয়ামত হলো মহিমান্বিত এই কালিমা গ্রহণের তৌফিক হওয়া। হজরত সুফিয়ান ইবনে ওয়াইনা (রহ.) থেকে এ ব্যাপারে কতই না উত্তম কথা বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ তায়ালার বান্দাদের মধ্যে কোনো বান্দার ওপর এর থেকে বড় কোনো নেয়ামত নেই যে, তার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর পরিচয় অর্জন হয়েছে।’

‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এর অর্থ ও মর্ম: 
পবিত্র কালিমায় দুটো অংশ রয়েছে। (এক) তাওহিদের স্বীকারোক্তি এবং (দুই) রিসালাতের স্বীকারোক্তি। এখানে ‘মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ’ এর সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করা হবে।

‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এর অর্থ হলো, হজরত মোহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার রাসূল। এর মধ্যে এই কথার স্বীকারোক্তি রয়েছে যে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দা হজরত মোহাম্মাদ (সা.)-কে মানব ও জ্বীন জাতির নিকট নবী ও রাসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে এই কথারও স্বীকারোক্তি রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আনুগত্য করা সকলের ওপর ওয়াজিব। তিনি যে কথা বলবেন, সকল কথাই অকাট্য সত্য। কালিমার মধ্যে এই কথারও স্বীকারোক্তি রয়েছে যে, হজরত মোহাম্মাদ (সা.) সর্বশেষ নবী এবং রাসূল। কেয়ামত পর্যন্ত আর কোনো নবী আগমন করবেন না। তাঁর নবুওত ও রিসালাত কেয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। 

হজরত মোহাম্মাদ (সা.) কর্তৃক আনীত শরিয়ত সর্বশেষ শরিয়ত, তার পরে আর কোনো নতুন শরিয়ত আসবে না। তাঁর আনীত এই শরিয়ত কেয়ামত পর্যন্ত সকল স্থানে আমল উপযোগী হবে। এর মধ্যে কোনো প্রকার কম-বেশিও হবে না। এ সকল দোষ থেকে তাঁর শরিয়ত পবিত্র। তাঁকে সর্বশেষ নবী মানার পর দু’জাহানের সকল কল্যাণ ও সৌভাগ্য আসবে তাঁর পথ ও মতকে অনুসরণ করা। কালিমায়ে তৈয়্যেবার দ্বিতীয় অংশ মানার মধ্যে এই কথারও স্বীকারোক্তি রয়েছে যে, হজরত মোহাম্মাদ (সা.) সকল নবী ও রাসূল থেকে শ্রেষ্ঠ। তাঁর মর্যাদা এতই মহান যে, সকল মানুষ, বরং সকল সৃষ্টিজীবের মধ্যে সর্বোত্তম এবং সর্বগুণে গুণান্বিত তিনিই। তাঁকে মানার নাম হলো ইসলাম এবং তাঁকে অমান্য করার নাম হলো কুফুর। 

এ ব্যাপার তিনি ইরশাদ করেন, ‘ওই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, আজ যদি মুসা জীবিত থাকত, তাহলে আমার আনুগত্য করা ছাড়া কোনো উপায় থাকত না।’ (মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা; ২৬৯৪৯)

আবু ইয়ালার রেওয়ায়েতে এসেছে, ‘আল্লাহর কসম, যদি তোমাদের মধ্যে আজ হজরত মুসাও জীবিত থাকতেন, তাহলে আমি ব্যতীত অন্য কারোর আনুগত্য করা তার জন্য হালাল হত না। (মুসনাদে আবু ইয়ালা: ৩৫২১)

এ সকল হাদিস ছাড়াও অসংখ্য হাদিসে বলা হয়েছে যে, হজরত মোহাম্মাদ (সা.) এর ওপর ঈমান আনা এবং তার অনুসরণ করা ব্যতীত কোনো উপায় নেই। পবিত্র কোরআনেও ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ওপর ঈমান আনো।’ (সূরা নিসা: ৫৯)

আরবি জানা প্রত্যেকেই বুঝতে পারবেন যে, আয়াতে কারিমায় ‘ইতায়াত’ শব্দের ওপর আতফ না করে শব্দটাকে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলেরও আনুগত্য করো। এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মর্যাদা কত মহান আমরা বুঝতে পারি। সূরা নিসার ৮০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এ কথাও বলে দিয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আনুগত্য মূলত আল্লাহরই আনুগত্য। এর দ্বারা বুঝা গেল, আল্লাহর আনুগত্য ততক্ষণ পর্যন্ত হবে না যতক্ষণ না রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আনুগত্য করা হবে।

এটাই কালিমার দ্বিতীয় আহ্বান। নবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে মনে প্রাণে বিশ্বাস ও আনুগত্য করা। তাঁর আনুগত্য ব্যতিত কোনো মানুষ প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না।

বরগুনার আলো