• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

কেউ স্বীকৃতি দিক বা না দিক, বাংলাদেশ টিকে থাকবে: বঙ্গবন্ধু

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ও তার স্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসেন। একটি পাবলিক বক্তৃতার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ৭০ মিনিটের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে আলোচনা নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘কেউ স্বীকৃতি দিক বা না-দিক, বাংলাদেশ টিকে থাকবে।’ ১৯৭২ সালের  (১৪ ফেব্রুয়ারি) বসন্তের আগমন ঘটেছিল স্বাধীন দেশে। আর যেকোনও সময়েরে বসন্তের চেয়ে সেই বসন্তটি ছিল অন্যরকম ভালো লাগার। মন্ত্রিসভার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, সরকারি অফিসের সময় পরিবর্তন, মস্কো সফরের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও ছিল পত্রিকার পাতাজুড়ে।

দৈনিক বাংলায় মুজিব-কেনেডির বৈঠকের খবর

কেনেডি-বঙ্গবন্ধু বৈঠক

মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি বাংলাদেশ সফরে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ স্বীকৃতি দিলো বা না দিলো, বাংলাদেশ টিকে থাকার জন্য সৃষ্টি হয়েছে।’ বৈঠক শেষে চলে যাওয়ার মুহূর্তে কেনেডি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে আর বিলম্ব করবে না।’ ৭০ মিনিটের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এই বৈঠকের মাধ্যমে তিনি উপকৃত হয়েছেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিলম্ব বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আলাপ হয়েছে। এ বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের আরও আগে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত ছিল। বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আমরা সিনেটে একটি প্রস্তাব পেশ করেছি। আশা করি, স্বীকৃতি দিতে আর বেশি বিলম্ব হবে না।’ পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের কথা শুনে এবং চাক্ষুষ প্রমাণ দেখে দুঃখ পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ঢাকায় কেনেডি দম্পতিকে সংবর্ধনা

কেনেডির রেকর্ড করা বক্তৃতা শুনেছেন বঙ্গবন্ধু

কেনেডি ও তার স্ত্রী সরকারি বাসভবনে এলে বঙ্গবন্ধু তাঁর দুই পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল এবং কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় তিনি তার রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে মিসেস কেনেডিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তিনি সিনেটর কেনেডির বক্তৃতা শুনেছেন, খুব ভালো বক্তৃতা।’ সেদিন তিনি (কেনেডি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বক্তৃতা করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই কথায় কিঞ্চিত বিস্ময়ের সঙ্গে মিসেস কেনেডি বলেন, ‘তা কী করে হয়, আপনি তো আর বটতলায় ছিলেন না।’ জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার সময় ছিল না। কিন্তু আমার খুব ইচ্ছে ছিল। আমার লোকেরা বক্তৃতা রেকর্ড করে নিয়ে এসেছে। সেটাই বাজিয়ে শুনেছি।’

ঢাকায় কেনিডে দম্পতি

কেনেডির সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়ে কথা হয়েছে কিনা প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘কে স্বীকৃতি দিলো বা না দিলো, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।’

সেদিনও বসন্ত ছিল

 ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল পহেলা ফাল্গুন। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বসন্ত এসেছিল সেদিন। পত্রিকার খবর বলছে, সেই রাতের আকাশটা ছিল মেঘে ঢাকা। উত্তর থেকে আসা বাতাসে শেষ হিমেল স্পর্শও ছিল। রাতের অন্ধকারে প্রকৃতি যেন প্রহর গুনছিল অনন্য এক নতুন সকালের, যে সকাল ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। বসন্ত এলো বাংলার বুকে, ঘরে ফিরে আসা শ্রান্ত মানুষের মিছিলে। বসন্ত এলো বাংলার সবুজ অঙ্গনে পাতা ঝরার গান নিয়ে, বসন্ত এসেছিল এই পোড়া দেশটাকে পুনর্গঠনের বার্তা নিয়ে।

বাংলাদেশি না বাঙালি?

বাংলাদেশে নাগরিকদের নাগরিকত্বের নাম হবে বাঙালি। মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে বলা হয়— কোনও কোনও বাংলাদেশি নাগরিকত্বের নাম লেখার সময় বাঙালি ও বাংলাদেশি লেখে। সেটা বন্ধ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে সাদা শাপলাকে জাতীয় ফুল হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এনার খবরে বলা হয়।

বীরত্বের জন্য উপাধি মিললো

বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়মিত বাহিনী ও গণবাহিনীর জন্য চার ধরনের উপাধি ঘোষণা করা হয়। বাসসের খবরে এই তথ্য দেওয়া হয়। বীরত্বের মাপকাঠি অনুসারে সবচেয়ে বড় উপাধি হবে বীরশ্রেষ্ঠ, উচ্চ মর্যাদার উপাধি বীরোত্তম, প্রশংসনীয় মর্যাদার উপাধি বীর বিক্রম এবং বীরত্বের সার্টিফিকেট বীর প্রতীক দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে শিল্পী সাইফুল ইসলাম

কুষ্টিয়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম নামের এক শিল্পী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার আঁকা বঙ্গবন্ধুর একটি তৈলচিত্র তাঁকে উপহার দেন। এটি আঁকতে ১৫ দিন সময় লেগেছে। তিনি যেকোনও মানুষের তৈলচিত্র আঁকতে পারদর্শী। এদিকে মস্কো সফর সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন ঢাকায় কর্মরত সোভিয়েত চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স। পিবিআই এর খবর বলছে, তিনি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবনে সাক্ষাৎ করে প্রায় আধঘণ্টা আলোচনা করেন।

শরণার্থীরা ফিরছেন বসন্ত রোগ নিয়ে

শরণার্থীদের শিবিরে কমপক্ষে ৭০ জন শরণার্থী মারা গেছে বলে এইদিনের সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন বলছে, এদের মধ্যে অধিকাংশ বসন্ত এবং পুষ্টিহীনতা ও অন্যান্য রোগে মারা গেছে। প্রতিদিন বহুসংখ্যক শরণার্থী বসন্ত রোগ নিয়ে দেশে ফিরছে উল্লেখ করে বলা হয়, ভারতের শরণার্থী শিবির থেকে যারা আসছেন, তাদের বেশিরভাগই বসন্ত আক্রান্ত রোগী।

স্বাধীন দেশে প্রথম সাহিত্য পুরস্কার পেলেন যারা

সাহিত্য পুরস্কার পেলেন যারা

বাংলা একাডেমি ১৯৭১ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালের পত্রিকার প্রতিবেদন বলছে, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ কবিতার জন্য হাসান হাফিজুর রহমান, উপন্যাসের জন্য জহির রায়হান, ছোটগল্পের জন্য জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, প্রবন্ধ ও গবেষণার জন্য আনোয়ার পাশা চৌধুরী ও শিশু সাহিত্যের জন্য এখলাস উদ্দিন আহমেদ পুরস্কার পান। ১৯৬০ সাল থেকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দিয়ে আসছে।

বরগুনার আলো