• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওসি মোয়াজ্জেমই প্রথম!

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৯  

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন বাতিল করে ২০১৮ সালে করা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। পরে ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয় বিলটি। এরপর ৮ অক্টোবর সেই বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে তা আইনে পরিণত হয়। 
প্রায় একবছরের মাথায় এই আইনে হতে যাচ্ছে প্রথম কোনো মামলার রায়। আর যেই মামলার আসামি হলেন- পুলিশেরই একজন সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। তিনি মোয়াজ্জেম হোসেন; যিনি ফেনীর সোনাগাজী থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। 
এই মামলার বিচারকাজ শেষ হয় বুধবার (২০ নভেম্বর)। এরপর বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামস জগলুল হোসেন মামলার রায়ের জন্য ২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিন ধার্য করেন।
মামলার শুনানি শেষে বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাংলানিউজকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এটি প্রথম রায়। আমরা আশা করছি এতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।
ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। 
ওই আইন অনুযায়ী, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮’ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী, অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড, ২৯ ধারা অনুযায়ী অনধিক তিনবছর কারাদণ্ড অথবা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ড আর ৩১ ধারা অনুযায়ী অনধিক সাত বছর কারাদণ্ড অথবা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, এই আইনের তিনটি ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৫ বছর সাজা হতে পারে। আমরা আদালতে যে সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেছি, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তিই আসামি মোয়াজ্জেম পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনকালে ওসি মোয়াজ্জেম দাবি করেছিলেন, মামলার বাদী (ব্যারিস্টার সুমন) সামাজিক, রাজনৈতিক  ও অর্থনৈতিক কারণে তার নামে মামলা করেছেন। সে যুক্তিও শেষদিনে আদালতে খণ্ডনের চেষ্টা করেন ব্যারিস্টার সুমন। 
তিনি আদালতে বলেন, এই মামলায় যিনি ওসি সাহেবকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন সেই আওয়ামী লীগের সভাপতির (উপজেলা সভাপতি) ফাঁসি হয়েছে। (ওসি মোয়াজ্জেম) উনি ভাগ্যবান যে উনি সেই মামলার আসামি হলেন না। আমি এর মাধ্যমে ৪৮০ জন থানার কর্মকর্তাকে একটা মেসেজ দিতেই এই মামলা করেছি। অন্য কোনো উদ্দেশ্য আমার নেই।
অপরদিকে এই মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ আশা করেছেন, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পাবেন। আর ন্যায়বিচার পেলে এই অভিযোগ থেকে তিনি খালাস পাবেন।       
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় ও তার জবানবন্দি ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। 
ওইদিনই আদালত এ মামলার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। গত ২৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানার পক্ষে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। 
একই দিনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। পরে ১৭ জুলাই আসামি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
এই মামলায় বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, নুসরাতের মা, ভাই ও দুই বান্ধবী, দুই পুলিশ সদস্য ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ১২ জন রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন। গত ১২ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হওয়ার মাধ্যমে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। 
পরে ওসি মোয়াজ্জেম ১৪ নভেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা অনুযায়ী আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখেন। ওইদিনই আদালত যুক্তিতর্কের জন্য বুধবার দিন রেখেছিলেন। এদিন উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিরাজ-উদ দৌলাকে পরে গ্রেফতার করা হয়। 
তবে অভিযোগ দেওয়ার সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্নের পাশাপাশি তার বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় ভিডিওতে দু’জন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগমুহূর্তে বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে সেই মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
ওইদিন নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।
নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলায় এরই মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ফেনীর একটি আদালত।

বরগুনার আলো