• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল চান অ্যাটর্নি জেনারেল

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

 


মানবতাবিরোধী অপরাধে জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এ মামলায় আপিল বিভাগে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিল শুনানি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
নিজ কার্যালয়ে মাহবুবে আলম বলেন, সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মামলার দীর্ঘদিন শুনানির পর আজ শুনানি শেষ হয়েছে। রায়ের জন্য আগামী ১৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। আমি আশাবাদী তার বিরুদ্ধে যে ১৬টি অভিযোগ আনা হয়েছিল তার দু’টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল তাকে খালাস দিয়েছেন। বাকি ১৪ অভিযোগের মধ্যে সাতটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। চারটি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। একটি অভিযোগে ১০ বছর, একটিতে সাত বছর, একটি পাঁচ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে।
মাহবুবে আলম বলেন, আমি আজ আদালতে জোরালোভাবে আবেদন জানিয়েছি, যে দু’টি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে একটি হলো হিরামণি সাঁওতালকে ধর্ষণের জন্য পাকিস্তানি আর্মিকে ইশারা দিয়ে ভিতরে দেওয়া এবং পরে তাকে ধর্ষণ করা। এরফলে তার গর্ভে একটি সন্তান জন্ম নিয়েছিল। সেই সন্তানটিকে দেখতে সাঁওতালদের মতো না। এ কারণে অনবরত ধিক্কার পাচ্ছিল। যে কারণে সে কোনো এক সময় আত্মহত্যা করে।
‘আরেকজন ছিল মাজেদা। যাকে আসামি কায়সার পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। সেও ধর্ষিত হয়েছিল। তারও একটি মেয়ে সন্তান হয়। সে মেয়েটিও সারাটি জীবন ধিকৃত হয়ে জীবনযাপন করেছে।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ মামলায় আমি আবেদন করেছি, একজন মানুষকে হত্যা করলে তখনই শেষ হয়ে যায়, কিন্তু ধর্ষিতা যে তার জন্য প্রতিদিনই মৃত্যু। এটা তার জন্য মৃত্যু, পরিবারের জন্য মৃত্যু। মুক্তিযুদ্ধের সময় কেউ মারা গেলে ওই পরিবারের সদস্যরা গর্ব করে বলে তার পরিবারের লোক শহীদ হয়েছে। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে সেটি কেউ বলতে পারে না, তার পরিবারের কেউ ধর্ষিত হয়েছে। এই যুক্তি দেখিয়ে আমি বলেছি, এই দু’টি অভিযোগে যাতে মৃত্যুদণ্ড রাখা হয়।
গত ১০ জুলাই এ আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারী হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে সর্বোচ্চ সাজাসহ ২২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
একাত্তরে ১৫২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ২ নারীকে ধর্ষণ, ৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় এবং দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ষড়যন্ত্রের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনার দায়ে ফাঁসির আদেশ পান কায়সার। সাঁওতাল নারী হীরামণি ও অপর নারী মাজেদাকে ধর্ষণের অপরাধ দু’টি প্রমাণিত হয় রায়ে। ওই দুই বীরাঙ্গনা নারী ও ধর্ষণের ফলে বীরাঙ্গনা মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া যুদ্ধশিশু শামসুন্নাহার প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্যও দেন কায়সারের বিরুদ্ধে।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফাঁসির সাজা বাতিল ও বেকসুর খালাসের আরজি জানিয়ে আপিল করেন (নম্বর: ০৪/২০১৫) কায়সার। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিলের পক্ষে মোট ৫৬টি যুক্তি দেখিয়েছেন তিনি।
কায়সারের বিরুদ্ধে ৪৮৪ পৃষ্ঠার ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, একাত্তরে সৈয়দ কায়সার প্রথমে হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ৫০০/৭০০ স্বাধীনতাবিরোধী লোক নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করতে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ নামে বাহিনী গঠন করেন। তিনি নিজে ছিলেন ওই বাহিনীর প্রধান। 
এমনকি ‘কায়সার বাহিনী’ নামাঙ্কিত এ বাহিনীর নিজস্ব ইউনিফর্মও ছিল।
কায়সার এ বাহিনীর মাধ্যমে হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বৃহত্তর কুমিল্লায় হত্যা, গণহত্যা, মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, ধর্ষণ, হামলা, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালান। তিনি পাকিস্তানি সেনাদের পথ দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রামে নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের লোক এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ চালান।
রায়ের পর্যবেক্ষণে কায়সার বাহিনীকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী বাহিনী বা অক্সিলারি ফোর্স না বললেও ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ বাহিনী ও সৈয়দ কায়সার ভিক্টিম ও অপরাধ সংঘটনস্থল এলাকাগুলোর মানুষের কাছে ঘৃণিত হয়ে থাকবেন।
ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্য দেওয়ায় যুদ্ধশিশু শামসুন্নাহারকে সাহসিকতার জন্য এবং সব নির্যাতিত নারী ও বীরাঙ্গনাদের স্যালুট জানান ট্রাইব্যুনাল।

বরগুনার আলো