১০ বছরে ৪০০ বাংলাদেশিকে লিবিয়া পাঠান হাজী কামাল
মো. কামাল উদ্দিন ওরফে হাজী কামাল (৫৫) একজন টাইলস ব্যবসায়ী। এর আড়ালে গত ১০ বছর ধরে তিনি অবৈধ পন্থায় মানবপাচার করে আসছেন। টাইলস-শ্রমিকের অধিক চাহিদা, দিনে ৫/৬ হাজার করে টাকা ইনকামের সুযোগ আছে— এমন প্রলোভন দেখিয়ে গত ১০ বছরে লিবিয়ায় ৪০০ বাংলাদেশিকে পাচার করেছেন তিনি।
শুধু তা-ই নয়, তিনি লিবিয়াতে যাওয়ার পূর্বে মাত্র এক লাখ টাকা নিতেন, সেখানে পৌঁছানোর পর বাকি চার লাখ টাকা পরিবারের কাছ থেকে শর্ত মতো আদায় করতেন। বিদেশে পাঠানোর পর টাকা— এমন ফাঁদে ফেলে শুধু লিবিয়া নয়, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের পাঠাতেন।
অবৈধভাবে ইউরোপে পাঠানোর সময় সম্প্রতি লিবিয়ার মিজদাহ শহরে গত ২৮ মে নৃশংসভাবে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় ১১ বাংলাদেশি মারাত্মক আহত হন। অবৈধভাবে বিদেশে পাঠানোর ঘটনাটি দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তদন্তে উঠে আসে হাজী কামালের নাম। সোমবার (১ জুন) ভোরে র্যাব-৩ এর একটি দল গুলশান থানাধীন শাহজাদপুরের বরইতলা বাজার খিলবাড়িরটেক এলাকা থেকে হাজী কামালকে গ্রেফতার করে। তিনি কুষ্টিয়া জেলা সদরের জামাত আলী মন্ডলের ছেলে।
সোমবার দুপুর ২টায় রাজধানীর টিকাটুলি র্যাব-৩ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রকিবুল হাসান। তিনি বলেন, গত ২৮ মে লিবিয়ায় মিজদাহ শহরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ২৬ বাংলাদেশি নিহত এবং ১১ বাংলাদেশি মারাত্মকভাব আহত হন। ওই বর্বরোচিত ঘটনায় মূল উৎঘাটন করতে গিয়ে দেখা যায় যে, অবৈধভাবে ইউরোপে গমনের জন্য বিভিন্ন দালালচক্র ইউরোপে উন্নত জীবনের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিনিয়ত অসহায় বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে নৌ-পথ ও দুর্গম মরুপথ দিয়ে প্রেরণ করে আসছে। এই অবৈধ অভিবাসীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জিম্মি করে প্রতিনিয়ত মুক্তিপণদাবি এবং শারীরিক নির্যাতন করে আসছে।
ওই ঘটনায় বাংলাদেশে ভিকটিমদের আত্মীয়-স্বজন মাদারীপুর রাজৈর থানা, কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় মানবপাচার বিরোধী আইনে দুটি মামলা হয়।
এরপর র্যাব-৩ ছায়া তদন্ত করে নিশ্চিত হবার পর মানবপাচারের সাথে জড়িত চক্রটির অন্যতম হোতা কামালকে রাজধানীর গুলশান শাহজাদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তিনি মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করে বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবত এই অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত আছে মর্মে স্বীকার করেন। এই সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশি চক্রের যোগসাজসে অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করে আসছে।
চক্রটি তিনটি ধাপে মানবপাচারের কাজ সম্পন্ন করত। ১. বিদেশে গমনেচ্ছুক নির্বাচন, ২. বাংলাদেশ হতে লিবিয়ায় প্রেরণ এবং ৩. লিবিয়া হতে ইউরোপ প্রেরণ।
প্রথমে তারা বিদেশে গমনেচ্ছুদের নির্বাচন করত। চক্রের দেশীয় এজেন্টরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বল্প আয়ের মানুষদের অল্প খরচে উন্নত দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে আকৃষ্ট করে থাকে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় অনেকেই তাদের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। ইচ্ছুকদের বিদেশে গমনের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট তৈরি, ভিসা সংগ্রহ, টিকেট ক্রয়- প্রভৃতি কার্যাবলী এই সিন্ডিকেটের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়ে থাকে। পরবর্তীতে তাদের এককালীন বা ধাপে ধাপে কিস্তি নির্ধারণ করে ইউরোপের পথে পাড়ি দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রার্থীদের সামর্থ অনুযায়ী ধাপ নির্বাচন করে থাকে। ইউরোপ গমনের ক্ষেত্রে তারা ৭/৮ লাখ টাকার বেশি টাকা নিয়ে থাকে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লিবিয়ায় যাওয়ার আগে এবং বাকি আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা লিবিয়ায় যাওয়ার পর ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজনের নিকট থেকে নেয়।
বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় প্রেরণের ক্ষেত্রে চক্রটির সদস্যরা বেশ কয়েকটি রুট ব্যবহার করে থাকে। আবার রুটগুলো তারা সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী মাঝেমধ্যে পরিবর্তন অথবা নতুন রুট নির্ধারণ করে থাকে। সম্প্রতি লিবিয়াতে প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-কলকাতা-মুম্বাই-দুবাই-মিশর-বেনগাজী-ত্রিপলি (লিবিয়া) রুট ব্যবহার করা হচ্ছিল।
দুবাইয়ে পৌঁছে তাদের বিদেশি এজেন্টদের তত্ত্বাবধানে ৭/৮ দিন অবস্থান করানো হয়। বেনগাজীতে প্রেরণের লক্ষ্যে বেনগাজী হতে এজেন্টরা কথিত ‘মরাকাপা’ নামক একটি ডকুমেন্ট দুবাইতে প্রেরণ করে থাকে। যা দুবাইয়ে অবস্থানরত বিদেশি এজেন্টদের মাধ্যমে ভিকটিমদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। অতঃপর ওই ডকুমেন্টসহ বিদেশি এজেন্ট তাদের মিশর ট্রানজিট দিয়ে বেনগাজী লিবিয়ায় প্রেরণ করে। বেনগাজীতে বাংলাদেশি এজেন্ট তাদের বেনগাজী হতে ত্রিপলীতে স্থানান্তর করে।
ভিকটিমরা ত্রিপলিতে পৌঁছানোর পর ত্রিপলিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি কথিত কয়েকজন এজেন্ট তাদের গ্রহণ করে। পরে তাদের ত্রিপলিতে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করানো হয়। অতঃপর ত্রিপলিতে অবস্থানকালীন সময়ে দেশীয় প্রতিনিধির দ্বারা ভিকটিমদের আত্মীয়-স্বজন হতে অর্থ আদায় করা হয়।
অতঃপর ভিকটিমদের ত্রিপলির বন্দর এলাকায় একটি সিন্ডিকেটের নিকট অর্থের বিনিময়ে ইউরোপে পাচারের উদ্দেশ্যে তাদের হস্তান্তর করা হয়। সিন্ডিকেট সমুদ্রপথে অতিক্রম করার জন্য নৌ-যান চালনা এবং দিক নির্ণয়যন্ত্র পরিচালনাসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়। একটি নির্দিষ্ট দিনের ভোররাতে একসঙ্গে কয়েকটি নৌ-যান লিবিয়া হয়ে তিউনেশিয়া উপকূলীয় চ্যানেল হয়ে ইউরোপের পথে রওনা দেয়। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পথে গমনকালে ভিকটিমরা ভূমধ্যসাগরের মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং জীবনাবসানের ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতার কামাল উদ্দিন দালাল চক্রটির অন্যতম মূলহোতা। তিনি গত প্রায় এক যুগ ধরে অবৈধভাবে লিবিয়াতে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশিকে পাঠিয়েছেন। লিবিয়া ছাড়াও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবৈধ প্রক্রিয়ায় মানবপাচার করেছেন।
তিনি পেশায় একজন টাইলস কনট্রাক্টর। প্রচুর পরিমাণে টাইলস শ্রমিক তার সংস্পর্শে আসে। এ সুযোগে তিনি তাদের প্রলুব্ধ করেন যে, লিবিয়াতে টাইলস মিস্ত্রিদের অনেক চাহিদা। সেখানে গেলে দিনে ৫/৬ হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
ইচ্ছুকদের কাছ থেকে মাত্র এক লাখ টাকা নিতেন, লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর বাকি ৪/৫ লাখ টাকা পরিবারের কাছ থেকে শর্ত মতো আদায় করতেন।
শ্রমিকরা লিবিয়াতে পৌঁছানোর পরে সেখানে অবস্থান করা অন্যান্য পাচারকারী দলের সদস্যরা ভিকটিমদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা দাবি, এমনকি শারীরিক নির্যাতন করত। সেই নির্যাতনের ভিডিও ভিকটিমদের পরিবারের নিকট প্রেরণ করা হতো। এমনকি সরাসরি মোবাইলফোনে যোগাযোগ করত, যার কারণে ভিকটিমদের পরিবার জীবন বাচাঁনোর জন্য পাচারকারী দলের চাহিদা মোতাবেক টাকা প্রেরণ করতে বাধ্য হতেন।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে অন্যদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে র্যাব-৩ এর সদস্যরা।
বরগুনার আলো- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অবহেলা করলে হতে পারে যে গুরুতর রোগ
- সাদা পোশাক ঘেমে হলদেটে হয়ে গেলে কী করবেন?
- বানিয়ে ফেলুন ৪ স্বাদের লাচ্ছি
- সরকারি ক্রয় আইন পরিবর্তনের সুপারিশ
- সব ধরনের ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি রোধে ব্যবস্থা নিন
- প্লাস্টিক বর্জ্যে ঢাকায় সড়ক নির্মাণ
- সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে
- শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীরা পড়বেন ব্ল্যাকলিস্টে
- বিএনপি দিন দিন সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের
- আইফোন ১৬-তে যেসব নতুন ফিচার থাকছে
- শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতের শিক্ষক পাবে প্রাথমিক স্কুল
- সাত দিনে হিট স্ট্রোকে ১০ জনের মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদফতর
- হজ ভিসা আবেদনের সময় বাড়ল ৭ মে পর্যন্ত
- চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী
- শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ সৎবাবার বিরুদ্ধে
- বরিশালে বেহুন্দি জালসহ ২ জেলে আটক
- উজিরপুরে সর্বজনীন পেনশন স্কীম বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়
- পটুয়াখালীর মুগডাল যাচ্ছে জাপানে
- তৃতীয় বিয়ে করছেন শাকিব, এর মাঝেই আইনি ব্যবস্থার কথা বললেন বুবলী
- বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উন্নতিতে বড় সুবিধাভোগী উত্তর-পূর্ব ভারত
- জি কে শামীমের জামিন ঘিরে ফের প্রতারণা
- ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ১
- উপজেলা নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠনের নির্দেশ ইসির
- প্রথম ধাপের ভোটে ১৪১ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
- দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা ভোটে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন আজ
- এএসপি পদে পদোন্নতি পেলেন ৪৫ পুলিশ পরিদর্শক
- যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৪ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত
- সামাজিক বিমা প্রবর্তনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে
- ছদ্মবেশে গাজীপুর ও নীলফামারীর হাসপাতালে দুদকের অভিযান
- প্রতিভা বিকাশে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না : টুকু
- বরগুনায় মা ও মেয়ে ধর্ষণের পলাতক আসামী গ্রেফতার
- কলাপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড
- গরমে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া কি বিপদের লক্ষণ?
- কমবয়সীদেরও কেন হয় হার্নিয়া, এর চিকিৎসা কী?
- এই গরমে দিনে কয়বার গোসল করা উচিত?
- আদালতের রায়ের ওপরে কিছু নেই: বুয়েট উপাচার্য
- রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- চালের বিকল্প হিসেবে গম আমদানি করছে সরকার
- শবে কদরের নামাজের নিয়ত ও পড়ার নিয়ম
- মাত্র ১২০ টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকুরি পেল বরিশালের ৫৮ জন
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- বোরোর বাম্পার ফলনে হাওড়ে উৎসবের আমেজ
- প্রথম ধাপে বরিশালের ২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান ১২ জন
- হার্টে হলদেটে ছোপ কেন হয়, কীসের লক্ষণ?
- বেশিক্ষণ রোদে থাকলে যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে
- হিট স্ট্রোক এড়াতে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
- ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে ঈদ মার্কেট
- আইএমএফের ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ে বাধা নেই: গভর্নর
- যমুনার বুকে দৃশ্যমান হলো দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু রেলসেতু
- শুধু হিট স্ট্রোক নয়, তাপপ্রবাহে কঠিন যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে