• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

গার্মেন্টকর্মীর আড়ালে ওরা ছিনতাইকারী

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

গার্মেন্টকর্মীর আড়ালে ছিনতাই করতো ওরা। এই চক্রের সদস্য হৃদয়কে চাকরিচ্যুত করায় আদাবরের ‘সাইনেস্ট গার্মেন্টসের’ সুপারভাইজার নাজমুল হককে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা।

এই হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুরের জোনাল টিম। গ্রেফতার দুজন হলো- মাসুদ হাসান (২২) ও মো. সাগর (১৮)। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ভিকটিম নাজমুলের ব্যবহৃত বাইসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এই দুই আসামি।

আসামিদের গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আনিচ উদ্দীন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর চক্রটি গা-ঢাকা দিয়েছিল। আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের শনাক্ত করে ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর আশপাশের এলাকা থেকে তাদের দুজনকে গ্রেফতার করেছি। এই দুই জন আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হত্যায় অংশ নেওয়া অপর আসামিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’

পুলিশ জানায়, আদাবর থানা এলাকার ঢাকা উদ্যানের সাইনেস্ট গার্মেন্টসে কাজ করতো মাসুদ হাসান, হৃদয় ও আরজু। এই গার্মেন্টসের সুপারভাইজার ছিলেন নাজমুল হক। হৃদয় গার্মেন্টসের ভেতরে ছোট্ট চাইনিজ কুড়াল নিয়ে প্রবেশ করতো। বিষয়টি নাজমুলের নজরে আসে। এ কারণে হৃদয়কে ভয় পেতেন নাজমুল। তাকে কাজ করতে বলারও সাহস পেতেন না তিনি। নাজমুল বিষয়টি কারখানার জিএমকে জানান। এরপর জিএমের নির্দেশে হৃদয়কে চাকরিচ্যুত করা হয়। এতে নাজমুলের ওপরে চরম ক্ষিপ্ত হয় হৃদয়। কয়েকজন মিলে নাজমুলকে শিক্ষা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে সে।

এদিকে পোশাক শ্রমিক মাসুদের সঙ্গে একই কারখানার এক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই ঘটনা জানতে পারেন সুপারভাইজার নাজমুল হক। তিনি বিষয়টি মাসুদের স্ত্রীকে জানান। এই তথ্য জানতে পেরে মাসুদের স্ত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ফলে মাসুদ সুপারভাইজার নাজমুলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এরপর হৃদয় ও মাসুদ মিলে পরিকল্পনা করে যে, তারা নাজমুলকে মারধর করবে।

পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, হৃদয় ও মাসুদ পরিকল্পনা করে যে, ৩০ জানুয়ারি রাতে গার্মেন্টস ছুটি পর নাজমুলের ওপরে হামলা করা হবে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় হৃদয়ের ভাগিনা সাগর ও তাদের বন্ধু সাব্বির। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই দিন রাত ৯টার দিকে গার্মেন্টস ছুটি হওয়ার আগেই নাজমুলের বাই-সাইকেলের হাওয়া ছেড়ে দেয় চক্রটি। এরপর গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে একশ’ গজ দূরে যাওয়ার পরই নাজমুলের ওপর হামলা চালায় মাসুদ ও হৃদয়সহ ৪/৫ জন। একের পর এক ছুরিকাঘাতের পর নাজমুলের সাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পথচারীরা নাজমুলকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান ডিবি তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম। তদন্তকালে অভিযুক্তদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা যায়, দুই শিশু সন্তানের বাবা নাজমুল। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রায়েরবাজার কবরস্থানের পাশে মিনা হাইজিং এলাকায় ভাড়া থাকতেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর খোলা কাঞ্চনপাড়ায়।

গোয়েন্দা পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ঢাকা উদ্যানের বেড়িবাঁধ এলাকায় হৃদয়সহ কয়েকজনের একটি চক্র ছিনতাই কাজে জড়িত। খুব ভোরে এবং গার্মেন্টস ছুটির পর এই চক্রটি ছিনতাই করতো। তারা মূলত নামেমাত্র গার্মেন্টসে চাকরি করতো। এমনকি সুপারভাইজারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা গার্মেন্টসে ঠিক মতো ডিউটিও করতো না। সবসময় তাদের কাছে চাকু, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র থাকতো। পোশাক কারখানার ভেতরেও এসব অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতো।

পুলিশ জানায়, হত্যার সঙ্গে জড়িত একজনেরও অতীত রেকর্ড ভালো না। তারা ছিনতাই ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। চক্রের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতার মাসুদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। সে থাকতো মোহাম্মদপুরের তুরাগ হাউজিংয়ে। অপর আসামি সাগরের বাড়ি কেরানীগঞ্জের আটিবাজার এলাকায়।

 

বরগুনার আলো