• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী আইইবির ৬১তম কনভেনশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু টানেলে থাকছে অত্যাধুনিক অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২২  

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দুপ্রান্তে থাকছে বিশ্বমানের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্মাণাধীন টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার। টানেলের দুটি টিউব দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন।  

অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা, প্রবেশপথ, কোন পদ্ধতিতে আগুন নেভানো হবে- সেজন্য থাকছে দুইটি ফায়ার স্টেশন। পাশাপাশি অগ্নিপ্রতিরোধ সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য থাকবে উন্মুক্ত। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী, আগামী চার বছর প্রকল্প এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা দিবেন বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর সদস্যরা।  

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগর চট্টগ্রাম শহরকে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে নগরের পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) এই প্রকল্প অনুমোদিত হয়।  ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।  

তবে ২০২০ সালের শুরুতে করোনা মহামারীর কারণে প্রকল্পের নির্মাণকাজ বিঘ্নিত হয়। এ কারণে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। বাড়ানো হয় নির্মাণ ব্যয়ও। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। ২ হাজার ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম টানেল টিউবের রিং প্রতিস্থাপনসহ বোরিংয়ের কাজ ২০২০ সালের ২ আগস্ট শেষ হয়। এরপর ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর ২ হাজার ৪৫৯ মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যা ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর শেষ হয়। বর্তমানে দ্বিতীয় টিউবের ইন্টারনাল স্ট্রাকচার নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

টানেলটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল)। একই প্রতিষ্ঠানকে টানেল রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মূল টানেল ছাড়াও পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে।

দুই টিউবের এই টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে ৪ লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে সিটি আউটার রিং রোড দিয়ে পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলে প্রবেশ করে আনোয়ারা প্রান্তে পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কের চাতরী চৌমুহনী পয়েন্টে ওঠা যাবে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।  

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দুপাশে দুটি অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশন নির্মাণ হবে। ওই দুটি স্টেশন থেকে পুরো টানেলের অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। টানেলের দুপাশে তৈরি করা হবে স্টেশন দুটি। কোনো কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে মুহূর্তেই দুপাশ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছুটে যাবেন। অগ্নিনির্বাপণে স্টেশন দুটিতে থাকবে বিশেষ ধরনের যন্ত্রাংশ।  

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দুপ্রান্তে দুটি অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই টানেল কর্তৃপক্ষ সঙ্গে আলোচনা করে স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু হবে। আমাদের দেওয়া নকশা বা টানেল কর্তৃপক্ষের নকশা অনুযায়ী স্টেশন স্থাপন আলোচনার মাধ্যমে হবে। তবে স্টেশন দুইটিতে বিশ্বমানের ইকুইপমেন্ট থাকবে।  

তিনি আরও বলেন, দুপাশে অগ্নিপ্রতিরোধ শুধু টানেল সংশ্লিষ্ট দুটি ফায়ার স্টেশন থেকে নয়, নগরে-উপজেলায় থাকা ফায়ার স্টেশনগুলোও যুক্ত থাকবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে সবকটি ফায়ার স্টেশন একযোগে কাজ করবে। টানেলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মুহূর্তেই পৌঁছে যাবে অগ্নিনির্বাপণের গাড়ি ও ফায়ার ফাইটাররা। স্টেশনগুলোতে এমন কিছু অত্যাধুনিক ইকুইপমেন্ট থাকবে- যা দিয়ে খুব সহজেই অগ্নিপ্রতিরোধ-নির্বাপণ করা যাবে। টানেলে অগ্নিপ্রতিরোধ-নির্বাপণে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি স্থাপন নিশ্চিত করা হবে।

গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগের সব জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল যান চলাচলের জন্য ডিসেম্বরে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। চলতি বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টানেলের একটি টিউব এবং ডিসেম্বরে দ্বিতীয় টিউবটিও খুলে দেওয়া হবে। টানেলের কাজ খুব সহজেই বাস্তবায়ন করা গেছে। এত বড় একটা প্রজেক্ট, নির্ধারিত সময়ে যে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তা দেশের জন্য বড় সাফল্য। এই টানেল বাংলাদেশের জন্য মডেল হিসেবে চিহ্নিত হবে।

বরগুনার আলো