• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

অনলাইনে ঝুঁকছেন ক্রেতারা

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২৪  

ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বড় বড় শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। রাজধানী ঢাকার মার্কেট, শো-রুম, বিপণি-বিতানগুলোতে চলছে ব্যাপক কেনাকাটা। রমজান মাসে চৈত্রের প্রচণ্ড রোদে মার্কেট-বিপনি বিতানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। এই কেনাকাটা দৃশ্যমান। এর বাইরে ঈদ উপলক্ষে অদৃশ্য কেনাকাটাও চলছে ব্যাপকভাবে। প্রযুক্তির বদৌলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অনলাইনে চলছে ব্যাপক কেনা-বেচা। ক্রেতারা ফেসবুক ও অনলাইনে অর্ডার করছেন আর বিক্রেতারা পছন্দের পণ্য ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন। অনলাইন ও ফেসবুকে কেনাকাটা মার্কেটের প্রচণ্ড ভিড়ের কেনাকাটার মতো দৃশ্যমান না হলেও অদৃশ্য কেনাকাটায় প্রচুর আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তরুণ-তরুণীরা।

অনলাইনে পণ্য বিক্রি করা কোম্পানিগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর শোভন জানান, ঈদের সময় স্বাভাবিকভাবেই অনলাইনে অর্ডার ও ডেলিভারি বেশি হয়। বছরের অন্যান্য সময় প্রতিদিন প্রায় ৮ লাখ অর্ডার ও ডেলিভারি হয়। কিন্তু ঈদের সময় এটি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়।

এক যুগ আগে উচ্চাভিলাষী কিংবা অভিজাতদের মাধ্যম মনে করা হলেও এখন অনলাইন কেনাকাটা সর্বসাধারণের ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহর কিংবা প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষও অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে অনলাইন কেনাকাটায়। চাল, ডাল, সবজী, নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য কিংবা পোশাক-প্রসাধনী সবই মিলছে ঘরে বসেই। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় তাই ঈদের সময় এটি হয়ে উঠে আরো জনপ্রিয় কেনাকাটার মাধ্যম। এদিকে ঈদকে ঘিরে দেশের পরিচিত ব্র্যান্ডগুলো শোরুমের পাশাপাশি অনলাইনেও এখন পণ্য বিক্রির ব্যাপক প্রস্তুতি রাখছে। নতুন নতুন উদ্যোক্তারাও অনলাইনে সাজিয়েছেন পণ্যের পসরা। রমজান ও ঈদ উপলক্ষে অনলাইনে পণ্যের অর্ডার ও ডেলিভারি সন্তুষ্ট বিক্রেতারাও, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতাদের আগ্রহ ও অর্ডার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীবাসীর কর্মব্যস্ততা, গরম, যানজট ঠেলে, মার্কেটের ভিড় সামলে অনেকেরই মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটার অনিহা তৈরি হয়েছে। যার ফলেই প্রতিনিয়তই আগ্রহ বাড়ছে অনলাইন কেনাকাটায়। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ঘরে বসে শত শত পণ্যের ছবি, পণ্যে মান, গুণাগুণ যাচাই-বাছাই, তুলনা করে কাক্সিক্ষত পণ্য অর্ডার করেন তারা। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ঘরে বসেই হাতে পাচ্ছেন সেই পণ্য। এছাড়া পণ্য হাতে পাওয়ার পর পেমেন্ট দেয়ার সুযোগ থাকায় আস্থাও বেড়েছে গ্রাহকদের। ফলে পণ্য পছন্দ না হলে থাকছে ফেরত দেয়ার সুযোগও। শুধু পোশাক নয়; ঈদের সাজ, গয়না, জুতাসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা রয়েছে। শাড়ি, কুর্তা, সালোয়ার-কামিজ, গয়না, পাঞ্জাবি, জুতাসহ বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে এসব শপে। এবারে ঈদের বাজারে ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট, মেয়েদের পাকিস্তানি সালোয়ার-কামিজসহ বিভিন্ন পণ্যের বেচা-কেনা বেড়েছে বলে জানা গেছে। পোশাক ও সাজ-সজ্জ্বায় দেশীয় পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

অনলাইনে পণ্য বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) হিসাবে দেশে ই-কমার্স সাইট আছে ৩ হাজারের বেশি। এর মধ্যে ই-ক্যাবের সদস্য ২৬শ’র বেশি। ফেসবুকভিত্তিক আছে ১০ হাজারেরও বেশি। ফেসবুকভিত্তিক পেজগুলোর বাইরে শুধু ওয়েবসাইটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেই গত ১ বছরে ১ লাখেরও বেশি মানুষের নতুন করে কর্মসংস্থান হয়েছে। আর ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব)-এর তথ্য অনুযায়ী, এই খাতে সারাদেশে গত কয়েকবছরে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষের। বছরে এখন অনলাইনে পণ্য বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকার উপরে। গতবছর ওয়েবভিত্তিক অনলাইনে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার পণ্য কেনা-বেচা হয়েছে। আর ফেসবুকসহ সকল মাধ্যমে মোট বিক্রির পরিমাণ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশে ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৭৭৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) একই সময়ে লেনদেন হয়েছিল ৭ হাজার ৭২৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩ হাজার ৪৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে।

জানা যায়, ঈদ ঘিরে মার্কেট বিপণিবিতানে যেমন ভিড় থাকে তেমনি অনলাইন ই-কমার্সের মাধ্যমে এবং ফেসবুকভিত্তিক এফ-কমার্সে অর্ডারের হিড়িক পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডসহ কয়েক হাজার অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে অনলাইন কেনাকাটার চাহিদা বাড়ে বাংলাদেশে। ঈদ কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ সময় নানারকম ছাড় আর উপহার দিয়ে পণ্যের পসরা সাজান।

প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, দেশের এক স্থানে বসে বিভিন্ন অঞ্চলের পোশাক খুব সহজে পাওয়া যাচ্ছে। এর জন্য যানজট, ভিড় এসব ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। পাশাপাশি পণ্যে কোনো সমস্যা হলে, সেটি ফেরতও দিতে পারছেন। ফ্যাশন ব্র্যান্ড সারা লাইফস্টাইলের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজ সাজানো হয়েছে ঈদের নতুন পোশাকে। ওয়েবসাইটে ‘ঈদুল ফিতর-২৪’ নামে আলাদা ক্যাটাগরিও রাখা হয়েছে। তারা মেয়েদের সিঙ্গেল জামা, থ্রি-পিস, শাড়ি, কুর্তি, টপস সংগ্রহে রেখেছে। ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, চিনো প্যান্ট, ডেনিম প্যান্ট ও পায়জামা।

কে ক্র্যাফটের উদ্যোক্তা খালিদ মাহমুদ খান বলেন, প্রতি বছরই অনলাইনের বাজার বড় হচ্ছে, ক্রেতারাও সুবিধা পাচ্ছে বেশি। ঈদের সময় কে ক্র্যাফটের একটি বড় শোরুমের বিক্রির সমান অর্ডার আসে অনলাইনে। কেবল জামাকাপড় নয়, জুতা, গয়না ও অন্যান্য ফ্যাশন পণ্যও বিক্রি করে কে ক্র্যাফট। দেশের বাইরে থেকেও পণ্য কেনাকাটার সুযোগ রয়েছে এ ফ্যাশন হাউজ থেকে।

ঈদ ঘিরে ডিল ডট কম, প্রিয় শপ, বাগডুম ডটকম, দারাজ, এখনি ডটকম, আজকের ডিল, হাটবাজার, উপহার বিডি নামে ই-কর্মাস সাইটগুলোতেও রোজার শুরু থেকেই কেনাকাটা চলছে। শুধু পোশাক নয়, নামিদামি ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ই-কমার্স সাইটগুলোতে এখন ক্রেতারা জুতাসহ সব ধরনের পণ্য কিনতে পারেন। ঈদ ঘিরে দেশীয় পোশাকের অন্যতম ব্র্যান্ড ইয়েলো, লারিভ, সাদাকালো অঞ্জন’স, বিশ্বরঙ, রঙ বাংলাদেশ, দেশী দশের অন্য ব্র্যান্ড, ক্যাটস আই, রিচম্যান, ইয়েলো, কিউরিয়াস, এক্সটেসি, ক্লাব হাউজ, জেন্টেল পার্কসহ পরিচিত ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর ফেইসবুক পেইজ ও ই-কমার্স সাইটে ঈদের সমাহার রেখেছে। তাদের ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ ঘিরে ওয়েবসাইটও তারা নতুন পোশাকের ডিজাইন দাম দিয়ে রেখেছে। সেখানে শাড়ি, কুর্তা, সালোয়ার-কামিজ, ছেলেদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, গয়না, জুতাসহ বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। সারা বছর মোট বিক্রির ৫ শতাংশ অনলাইনে হলেও ঈদে তা দ্বিগুণ হয়ে যায় পোশাক ব্র্যান্ড লা রিভের।
বিশ্ব রং এর স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা বলন, একটা পোশাক হয়তো আমরা আউটলেটে পাঠাচ্ছি একইসাথে ফেসবুকে ছবিটা দিচ্ছি, দেখা যাচ্ছে ক্রেতা আউটলেট পর্যন্ত আসার আগেই ফেসবুক থেকে পণ্য বুকিং হয়ে যাচ্ছে। অনেকে শো-রুমে এসে পাচ্ছেনও না।

অঞ্জন’স এর স্বত্বাধিকারী শাহিন আহমেদ বলেন, আমাদের ওয়েবসাইট থেকে যেমন বিক্রি হয় তেমনই অনেকে সেখানে পছন্দ করে শো-রুম থেকে কিনে থাকেন। তবে একটা জিনিস, অনলাইনে কেনাকাটা যতো দিন যাচ্ছে বাড়ছে। আমার ধারণা ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে।

অনলাইন কেনাকাটায় এখন ওয়েবসাইটের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকও বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ই-কমার্সে নারীদের পথচলায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে ফেসবুক গ্রুপ থেকে শুরু হওয়া একটি উদ্যোগ উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই)। এর সদস্য সংখ্যা এখন ১৪ লাখ ৬০ হাজার। এর মধ্যে নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন পাঁচ লাখের মতো। সবাই দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তা। এর পেছনে রয়েছেন উই-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা। তিনি ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। একই রকমভাবে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স এন্টারপ্রেনিয়ার্স, উইমেন এন্ড ই-কমার্স ট্রাস্টসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রুপ। যেগুলোতে রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা দেশীয় এবং নিজস্ব তৈরি পণ্য বিক্রি করছেন।

নাসিমা আক্তার নিশা জানান, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে উই। এর আগে নিশা নিজের উদ্যোগ শুরু করে ২০১০ সালে। নারীদের জন্য রাস্তাটা আসলেই খুব কঠিন। প্রথমত, এখানকার কাউকে তেমন চিনি না, যেখানেই যাই মনে হচ্ছে ভুল দরজায় নক করছি। মেয়েদের জন্য সহজে সব তথ্য কেউ দেয় না এবং আজেবাজে কথা শুনতে হয় বা আজেবাজে প্রস্তাব আসে। সবকিছু নিয়ে আমার একসময় মনে হলো, এই বাস্তবতায় মেয়েরা কাজ করতে পারবে না। এ জন্য এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দরকার, যেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য ও অনেক মানুষের অভিজ্ঞতা একত্র থাকবে। আমাকে তথ্যের জন্য যেসব সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে, অন্যদের যেন তেমন সমস্যার মুখে পড়তে না হয়- এই চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে উইয়ের মাধ্যমে।

জানা যায়, উইয়ের আরেকটি বড় অর্জন হলো, গ্রাহক-ক্রেতা-সবাইকে দেশি পণ্যে নিয়ে আসতে পারা। এ প্রসঙ্গে নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, ২০১৮-১৯ সালের দিকেও অনেকে বিদেশি পণ্য নিয়ে মেতে ছিলেন। আমার কাছে মনে হলো, আমাদের দেশীয় পণ্যকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা দরকার। আমরা ঠিক করলাম, এই গ্রুপে শুধু দেশীয় পণ্য নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা পোস্ট দিতে পারবেন। আগে সবাই পোস্ট দিতে পারতেন। আমরা প্রথমে শুরু করলাম জামদানি দিয়ে। ওই বছরই আমরা দ্বিতীয় বছর পূর্তি করলাম। সবাই পরিকল্পনা করলাম, জামদানি পরব। সে পরিকল্পনা সফল হলো। আমরা দেশীয় পণ্যকে প্রাপ্য সম্মান দিতে পারলাম। দেশীয় পণ্যের উদ্যোগ নেয়ার পর অবশ্য শঙ্কা ছিল, অনেক উদ্যোক্তা হয়তো চলে যাবে; কিন্তু অনেক উদ্যোক্তা তখন জয়েন করা শুরু করলেন। কারণ এ জায়গায় একটা শূন্যতা ছিল।

নিশা বলেন, আমরা তখন উদ্যোক্তাদের বলি, আপনারা যা-ই পারেন করেন। আমি কিনে নেব। সে অনুযায়ী তাদের রান্না করা খাবার আমরা কিনেছি, রিভিউ দিয়েছি। সেই রিভিউ দেখে অনেকে অর্ডার করেছেন। যাতে আবার উদ্যোক্তারা উল্লসিত হন এবং তাদের কিছু টাকাও অর্জন করা সম্ভব হয়। সেবার ঈদের সময় ১০০ উদ্যোক্তা লাখ টাকার ওপরে বিক্রি করেছেন। এরপর আমরা তাদের ‘লাখপতি’ বলা শুরু করলাম। যে মেয়ের কোনো আয়-রোজগার ছিল না, সে রান্না করে, কাপড় সেলাই করে লাখ টাকার ওপরে বিক্রি করছে। এটা তো অনেক বড় অর্জন। এভাবেই উদ্যোক্তা তৈরি শুরু।
তবে অনলাইন কেনাকাটায় এখনো কিছু প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। একটি পণ্য দেখিয়ে অন্য পণ্য, নিম্নমানের পণ্য সরবরাহসহ বেশকিছু ঘটনা ঘটছে।

ই-কমার্স প্রতারণা ঠেকাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা-বিটিআরসি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, যেসব ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করছে তাদের বিটিআরসির মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ডিজিটাল কমার্স অথরিটি তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, এতে কমে আসবে ই-কমার্স খাতে প্রতারণার পরিমাণ। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে ই-কমার্সের অগ্রগতি বাড়াতে হবে। তবে তা সঠিক পন্থায় হতে হবে।

ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, রমজানে প্রচুর এগ্রো পণ্য বিক্রি হয়েছে। আর ঈদকে কেন্দ্র করে ফ্যাশন, জুয়েলারি, প্রসাধনী পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রমজান মাসে গড়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অর্ডার এবং ডেলিভারি বেড়ে যায়। ই-ক্যাব সভাপতি জানান, ই-কমার্স নিয়ে যে আস্থাহীনতা গড়ে উঠেছিল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ই-ক্যাব মিলে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে তা এখন দূর হয়েছে। আবারও ক্রেতারা এই মাধ্যমে ফিরেছেন।

বরগুনার আলো