• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

বসন্তকালে বক্ষব্যাধি

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

 

ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক, এখন চলছে ঋতুরাজ বসন্তকাল। গ্রীষ্মের দারুণ গরমের আর মাঘের শীতের পর এ সময়টি আবহাওয়ার দিক দিয়ে যতই মধুুর হোক না কেন, কিছু কষ্টদায়ক ব্যাধি এ ঋতুটিকে ঘিরে রাখে। এ সময়টিতে গাছে গাছে ফুলের পরাগ রেণু ছাড়ে বলে বসন্তকালে বাতাসে প্রচুর অ্যালার্জেনের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়। বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জেনের মধ্যে অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি রোগের মধ্যে ফুলের পরাগ রেণু অন্যতম। সে জন্য এ সময়টিতে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, হে ফিভার এবং হাঁপানির আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। বাতাস শুষ্ক থাকে বলে বাতাসে সালফার ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ সালফার ডাই-অক্সাইড পরিবেশ দূষণ ঘটায় বলে এ সময়টিতে বিভিন্ন ধরনের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। যাদের শ্বাসকষ্ট আছে তারা এসব রোগের হাত থেকে বেঁচে থাকতে হলে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। গ্রামেরদিকে এ ঋতুতে অ্যালার্জিক এলভিওলাইটিস দেখা দেয়। এক জাতীয় ছত্রাকের দ্বারা এ সমস্যা দেখা দেয় এবং খড়কুটা, গরুর ভুসি ব্যবহারের সময় অ্যালার্জেন (এসপারজিলাস ফিউমিগেটাস) শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে অ্যালার্জিক এলভিওলাইটিস রোগের সৃষ্টি করে। এ রোগেও হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তবে হাঁপানির মতো সাঁই সাঁই শব্দ থাকে না এবং এর চিকিৎসা ব্যবস্থাও হাঁপানি থেকে ভিন্ন প্রকৃতির। আজকাল পরিবেশ দূষণ মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে শিশুরাও এখন ব্যাপকভাবে শ্বাসকষ্টের শিকারে পরিণত হচ্ছে। চেম্বারে বসলেই প্রতিদিন একটা সাধারণ দৃশ্য চোখে পড়ে। সেটি হলো উদ্বিগ্ন বাবা-মা আর সন্তানকে কোলে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসছেন। শিশু শ্বাসকষ্টে ভুগছে। শিশুর সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের কি নিদারুণ পেরেশানি। তারা বারে বারে একটা কথাই জানতে চান, তাদের সন্তান ভালো হবে তো? বসন্তকালে কিছু ভাইরাস জাতীয় রোগ যেমন- হাম, পানি বসন্ত, ভাইরাস জ্বর প্রভৃতি হতে দেখা যায়। এ জ্বরে ঘরের একজন আক্রান্ত হলে দেখা যায় আস্তে আস্তে অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হওয়া শুরু করে। এমন করে একঘর থেকে অন্য ঘরে, এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি এই চক্রে জড়িয়ে যায়। বসন্তকালে শীতের আবহাওয়ার সময়কার ঘুমন্ত ভাইরাসগুলো একটু গরম পাওয়ায় বাতাসের মাধ্যমে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। পানিবসন্ত এবং হাম ভাইরাসজনিত রোগ। এগুলোকে আমরা সংক্রামক ব্যাধি বলি। কারণ এগুলো খুবই ছোঁয়াচে। পানিবসন্ত তেমন মারাত্মক রোগ নয় যদিও যার কোনোদিন এ রোগ হয়নি তার জন্য ছোঁয়াচে। সেজন্য এ রোগ হলে যার জীবনে এ রোগ হয়নি তাকে রোগীর কাছ থেকে দূরে রাখা উচিত। সরাসরি সংস্পর্শে এবং রোগীর হাঁচি-কাশির মধ্য দিয়ে এ রোগ পরিবেশে ছড়িয়ে যায়। পানিবসন্ত এবং হাম হলে রোগীকে কখনো ঠান্ডা লাগাতে দেবেন না। কারণ এ দুটি রোগেই ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া কিংবা ব্রঙ্কো-নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। হাম পরবর্তী শিশুর ব্রঙ্কো-নিউমোনিয়া শিশুর জন্য প্রাণঘাতী সমস্যায় পরিণত হতে পারে। এখনো আমাদের দেশে কুসংস্কার রয়ে গেছে যে, পানিবসন্ত এবং হাম হলে তাকে ঠান্ডা খাবার খাওয়াতে হবে। এটা একটা ভয়ঙ্করধর্মী কুসংস্কার। তাই এ ব্যাপারে সবার সচেতনতা থাকা প্রয়োজন। আরেকটি ব্যাপার দেখা যায়, পানিবসন্ত এবং হাম রোগীকে তার আত্মীয়-স্বজন মাছ, গোশত খেতে দেন না। এটাও একটা ভ্রান্ত ধারণা। কারণ এ দুটি রোগেই শরীরে প্রচন্ড আমিষের ঘাটতি হয়, তার ওপর যদি তাকে আমিষ থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে তার জন্য হয়ে দাঁড়াবে অতিরিক্ত বিপদের ঝুঁঁকি। মনে রাখবেন রোগীকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। রোগীকে মাছ, গোশত, ডিম, দুধ, ফলমূল খেতে দেন। এতে বসন্তের ঘা পাকবে না। ভাইরাস জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে বসন্তকালে কিছু কিছু টাইফয়েড এবং প্যারাটাইফয়েজ হতে দেখা যায়। ভাইরাস হলে সাধারণত একটু যদি কাশি থাকে তার ওপর থাকে শরীর ব্যথা এবং মাথাব্যথা। তাই বসন্তকালীন অনাবিল আনন্দের দিনগুলোতে উচিত আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সময়টাতে সাবধানে চলা। মনে রাখবেন প্রতিকার নয়, এসব ক্ষেত্রে প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।
অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ

বরগুনার আলো