• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস: যেসব ভুয়া স্বাস্থ্য পরামর্শ বিপদ বাড়াবে

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২০  

 

বিশ্বের নানা দেশে করোনাভাইরাস দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়ছে এবং এখন পর্যন্ত এর কোন প্রতিষেধক বের হয়নি।

তবে দুর্ভাগ্যবশত: করোনাভাইরাস ঠেকাতে নানা ধরণের স্বাস্থ্য পরামর্শ দেখা যাচ্ছে - যেগুলো প্রায়ই হয় অপ্রয়োজনীয় নয়তো বিপজ্জনক।

কিন্তু অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এসব পরামর্শ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?

রসুন:
ফেসবুকে এমন অসংখ্য পোস্ট দেখা গেছে যেখানে লেখা: যদি রসুন খাওয়া যায় তাহলে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ‘যদিও রসুন একটা স্বাস্থ্যকর খাবার এবং এটাতে এন্টিমাইক্রোবিয়াল আছে’ কিন্তু এমন কোন তথ্য প্রমাণ নেই যে রসুন নতুন করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রেই এধরনের প্রতিকারক ব্যবস্থা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু এর মাধ্যমেও ক্ষতি হতে পারে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রে খবর বের হয়েছে যে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে একজন নারী দেড় কেজি কাঁচা রসুন খেয়েছে।

এতে করে তার গলায় ভয়াবহ প্রদাহ শুরু হয়। পরে ঐ নারীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়।

আমরা জানি ফল, সবজি, এবং পানি খেলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে। কিন্তু নির্দিষ্ট কোন খাদ্য দিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে, এর পক্ষে কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।

অলৌকিক সমাধান
জরডান সাথের হলেন একজন ইউটিউবার, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তার রয়েছে হাজার হাজার অনুসারী।

তিনি দাবি করছেন যে, ‘একটা অলৌকিক খনিজ পদার্থ’ যাকে এমএমএস নামে ডাকা হয় সেটা দিয়ে এই করোনাভাইরাস একেবারে দূর করা সম্ভব।

এটাতে রয়েছে ক্লোরিন ডাই-অক্সাইড যেটা একটা ব্লিচিং এজেন্ট।

জরডান সাথের এবং অন্যরা এই পদার্থকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগেই প্রচার করে আসছে।

কিন্তু জানুয়ারি মাসে তিনি টুইট করে বলেন ‘ক্লোরিন ডাই-অক্সাইড ক্যান্সারের কোষকেও ধ্বংস করতে পারে এবং এটা করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে।’

গত বছরে মার্কিন ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রিশন সতর্ক করে বলে যে এমএমএস পান করা স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর।

অন্যান্য দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।

এফডিএ বলছে, তারা এমন কোন গবেষণা সম্পর্কে জানে না যে এই পদার্থ নিরাপদ অথবা কোন অসুস্থতার জন্য পথ্য হতে পারে।

এফডিএ সতর্ক করে বলেছে এটা পান করার ফলে, মাথাব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, এবং পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

ঘরে তৈরি জীবাণুনাশক
করোনাভাইরাস ঠেকানোর একটা কার্যকর উপায় হচ্ছে বার বার করে হাত ধোয়া।

হাত ধোয়ার জেল, যেটা দিয়ে তাৎক্ষণিক জীবাণু ধ্বংস করা যায়, সেটা ফুরিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ইটালি এখন করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি।

সে দেশে যখন এই জেল ফুরিয়ে যাওয়ার খবর বের হল তখন এই জেল কীভাবে ঘরে বানানো যায় সেটার রেসিপি দেয়া শুরু হল সোশাল মিডিয়াতে।

কিন্তু সেসব রেসিপি ছিল মূলত সেই সব জীবাণুনাশকের - যা ঘরের মেঝে বা টেবিলের উপরিভাগে ব্যবহার করতে হয়।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দেন এটা ত্বকের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়।

অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড জেলগুলোতে ৬০%-৭০% অ্যালকোহল থাকে তার সাথে থাকে এমোলিয়েন্ট নামে এক ধরণের পদার্থ যেটা ত্বককে নরম রাখে।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক স্যালি ব্লুমফিল্ড বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন না ঘরে বসে হাতের জন্য উপযুক্ত জীবাণুনাশক তৈরি করা সম্ভব।

রূপার জল
কলোইডিয়াল সিলভার মূলত এমন জল যেখানে রুপার ক্ষুদ্র কণিকা মেশানো থাকে।

মার্কিন টেলি-ইভানজেলিস্ট ধর্মপ্রচারক জিম বেকার এই জল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।

তার অনুষ্ঠানে এক অতিথি দাবি করেন যে এই জল কয়েক ধরণের করোনাভাইরাস মেরে ফেলতে সক্ষম।

অবশ্য তিনি স্বীকার করেন যে কোভিড-১৯ এর ওপর এটা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি।

কলোইডিয়াল সিলভারের সমর্থকরা দাবি করেন যে এটা অ্যান্টিসেপটিক, এবং নানা ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহার করা চলে।

কিন্তু মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার ভাষায় বলেছে, এই ধরনের রূপা ব্যবহার করে স্বাস্থ্যের কোন উপকার হয় না। বরং এর ব্যবহারে কিডনির ক্ষতি হতে পারে ও লোকে জ্ঞান হারাতে পারে।

তারা বলে, লোহা এবং জিংক যেমন মানব দেহের জন্য উপকারী, রূপা তেমনটা নয়।

১৫ মিনিট অন্তর জলপান
ফেসবুকের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টে একজন ‘জাপানি ডাক্তার’কে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের জীবাণু মুখের মধ্যে ঢুকে পড়লেও প্রতি ১৫ মিনিট পর পর পানি খেলে তা দেহ থেকে বের হয়ে যায়।

এই পোস্টের একটি আরবি ভার্সন ২৫০,০০০ বার শেয়ার হয়েছে।

কিন্তু লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক স্যালি ব্লুমফিল্ড বলেছেন, এই দাবির পক্ষে সত্যিই কোন প্রমাণ নেই।

তাপমাত্রা ও আইসক্রিম পরিহার
গরমে এই ভাইরাস মরে যায় বলে সোশাল মিডিয়াতে অনেক ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

গরম পানি পান করা, গরম জলে গোসল করা, এমনকি হেয়ারড্রায়ার ব্যবহারেরও সুপারিশ করা হচ্ছে।

ইউনিসেফের উদ্ধৃতি দিয়ে এমনি একটি পোস্ট নানা দেশে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়েছে, গরম জলপান করলে এবং রৌদ্রের নীচে দাঁড়ালে করোনাভাইরাসের জীবাণু মরে যাবে।

পাশাপাশি আইসক্রিম খেতেও বারণ করা হয়েছে।

কিন্তু ইউনিসেফ বলছে, এটা স্রেফ ভুয়া খবর। ফ্লু ভাইরাস মানব দেহের বাইরে বেঁচে থাকতে পারে না।

আর দেহের বাইরে এই জীবাণুকে মেরে ফেলতে হলে ন্যূনতম ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা লাগবে, যেটা গোসলের পানি থেকে অনেক বেশি গরম।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

বরগুনার আলো