• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

জুম্মার দিনে দান-সদকায় বেশি সওয়াব

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারি ২০২০  

সপ্তাহের সেরা দিন শুক্রবার তথা জুম্মার দিন। এটি পৃথিবীর অন্যতম তাৎপর্যবহ দিবস। জুম্মা নামে পবিত্র কোরআনে একটি সূরা আছে। এইদিনে মহান আল্লাহ তায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন।

ইসলামের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রবাহ এই দিনে হওয়ায় জুম্মার দিনের গুরুত্ব প্রতিটি মুসলমানদের নিকট অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ও রাসুল (সাঃ) তার বাণীতে দিনটির ফজিলত সম্পর্কেও বলেছেন। ফলে জুম্মার দিনের রয়েছে আলাদা মর্যাদা।

দিনটির গুরুত্ব বিবেচনা করে অধিক সওয়াবের আশায় এ দিনে অনেকে বেশি বেশি দান খয়রাত করে থাকেন। দানের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। তবে কি জুমার দিনে দান খয়রাতে বেশি সওয়াব রয়েছে? প্রকৃত কথা হলো, ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। একমাত্র রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দিনে দান খয়রাতের বিশেষ কোনো ফযিলত ইসলামে দেয়া হয়নি।

তবে দুস্থ, নিঃস্ব, গরিব, এতিম, মিসকিন, আশ্রয়হীন, পঙ্গু, বস্তিবাসী, অন্ধ, অসহায়দের দুঃখ-কষ্ট মোচনে সাহায্য-সহযোগিতায় দান-খয়রাত ও সেবা-যত্ন করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তোমরা যে পর্যন্ত না নিজেদের প্রিয় বস্তু দান-খয়রাত করবে, সে পর্যন্ত কোনো সওয়াব পাবে না।’ এ ছাড়া আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে আরও বলেছেন, যে বা যারা অঢেল ধন-সম্পদ, অর্থ সঞ্চয় করছে তারা যেন দুনিয়া ত্যাগ করার আগেই আল্লাহর নামে ‘ফি সাবিলিল্লাহ’ দান-খয়রাত করে যেতে থাকে।’

শুধু তাই নয়, আমাদের মহানবী মুহাম্মদের (সা.) কাছে কেউ কিছু চাইলে তার কাছে যা থাকত তা-ই দান করে দিতেন। নিজে অসমর্থ হলে অন্য কারও কাছ থেকে ধারকর্জ করে হলেও দানপ্রার্থীকে দিয়ে দিতেন।

শুধু তাই নয়; নিজের অতি প্রয়োজনকে তুচ্ছ মনে করে পরিবার-পরিজনসহ অভুক্ত রেখেও গরিব, এতিম, মিসকিন, অসহায়-অভাবী মানুষকে আহার করাতেন। আল্লাহর প্রিয় নবীর (সা.) দান-খয়রাত ছিল বিশ্বব্যাপী মানবতার সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

আবু দাউদ শরিফে উল্লেখ আছে, একবার হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সাহাবিদের নিয়ে ওহুদ পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। পাহাড়টি দেখে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমার সামর্থ্য থাকলে গরিব-দুঃখী, এতিম, অভাবী, অসহায় মানুষকে এই পাহাড়সম স্বর্ণ দান করে দিতাম।’

আল্লাহর প্রিয় হাবিব মুহাম্মদের (সা.) এমনই ছিল দান-খয়রাতের আদর্শ। দান-খয়রাতের ফজিলত ও মরতবা সম্পর্কে পবিত্র কোরআন-হাদিসে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। কোনো ব্যক্তি যদি নিতান্ত অভাবের তাড়নায় কারও কাছে চাইলে তাকে ধমক দেওয়া হলে অন্তরে চোট লাগে এবং কষ্ট পেয়ে চোখ দিয়ে দরদরিয়ে পানি ঝরে, এমন কথা বা মন্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন, তুমি দানপ্রার্থীকে ধমক দিও না। শুধু এ কথা বলেই আল্লাহতায়ালা ক্ষান্ত হননি। তিনি তার স্বীয় কালামে আবারও ঘোষণা করেছেনথ কোনো কিছু দানপ্রার্থীকে দান বা খয়রাত দেওয়া হোক বা না হোক কোনো প্রকার কষ্টদায়ক কথা বলার চেয়ে একটি মিষ্টি-মধুর কথা বলাই উত্তম।

আল্লাহতায়ালার ওই বাণীতে স্পষ্টতই বোঝা যায়, অভাব-অভিযোগের তাড়নায় যারা এসেছে তারাও আমাদের মতো রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। তাদেরও ক্ষুধা রয়েছে, চাহিদা রয়েছে। এ জন্য মানুষের জন্য মানুষের অন্তর কাঁদা উচিত। মাত্র কিছুকালের এ দুনিয়ায় অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়ে কী লাভ? নিজের জন্য সামান্য কিছু রেখে পরের তরে বিলিয়ে দিয়ে পরকালীন জীবনে সুখ-শান্তি এবং নাজাতপ্রাপ্ত হন।

এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে আবারও ইরশাদ করেছেন ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা কোনো দানগ্রহীতাকে কোনোরূপ খোঁটা বা কষ্ট দিয়ে তোমাদের দান-খয়রাত ও সাহায্য-সেবাকে বরবাদ করে দিও না।’ এখানে একটু বলা প্রয়োজন, ‘ডান হাতে দান করলে বাম হাতও যেন না জানে’এটি পবিত্র ইসলামেরই নির্দেশ। দানশীলতা মানব চরিত্রের মহৎ গুণ, যা মানুষের হৃদয়কে কৃপণতার অভিশাপ থেকে মুক্ত ও সতেজ রাখে।

এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা আরও বলেছেন, ‘যাদের মন-দিল কৃপণতা হতে মুক্ত, তারাই হবে সত্যিকার সাফল্যমণ্ডিত।

উল্লেখ্য, দান-খয়রাতের ক্ষেত্রে সমাজের অনেকেই নিজেদের ব্যবহৃত অকেজো-অযোগ্য পুরনো জিনিসপত্র দান-খয়রাত করে নিজেদের দাতা হিসেবে নাম জাহিরের অপচেষ্টা চালায়। এতে সওয়াবপ্রাপ্ত হওয়া দূরের কথা, এতে দান-খয়রাত, সাহায্য-সেবার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করা হয়।

দান পরকালের কঠিন সময়ে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করে, ইহকালে প্রাচুর্যময় ও দুশ্চিন্তাহীন মর্যাদাপূর্ণ জীবন উপহার দেয়। আল্লাহ প্রদত্ত ধন-সম্পদ অভাবী ও অসহায় মানুষের জন্য ব্যয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ জনকল্যাণমূলক কাজে সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ অনেক সওয়াবের কাজ। এসব খাতে অর্থ-সম্পদ দানের মন-মানসিকতা গড়ে তোলা দরকার।

বরগুনার আলো