• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামি অনুশাসন

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২০  

সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণী গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।

এসব ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ শুরু হয়। এছাড়া প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনের খবর আসছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ-মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সংগঠন।

বর্তমানের এ প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামি অনুশাসন সম্পর্কে আলোকপাত করা জরুরি প্রয়োজন।

ইসলাম সবসময় নারীর অধিকার ও মর্যাদার নিশ্চয়তা দেয়। নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনুল কারিমে একটি সূরার নাম ‘নিসা’ বা নারী। আবার সূরা বাকারা, আলে ইমরান, মায়েদা, আহযাব, নূর ইত্যাদিতে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। 

প্রসঙ্গত, বলতে হয় ‘ধর্ষণ’ বা ব্যভিচারের শাস্তি নিশ্চিত করে সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও নারী অধিকার সুরক্ষিত করা ইসলামের শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম অঙ্গীকার।

ইসলামে ধর্ষণ বলতে বিবাহবহির্ভূত যেকোনো যৌনচার, সঙ্গম বা অপরাধকে ‘যিনা’ বা ব্যভিচার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যিনা সুস্পষ্ট হারাম ও নিন্দনীয় অপরাধ। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاء سَبِيلاً

‘আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সূরা: বনী ইসরাঈল, আয়াত: ৩২)।

ইমাম কুরতুবী বলেন, ‘যিনা করো না’ এর চেয়ে ‘যিনার কাছেও যেয়ো না’ অনেক বেশি কঠোর বাক্য। অর্থাৎ যিনার পর্যায়ভুক্ত সবকিছুই হারাম।

ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদ- দেয়া এবং যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশত বেত্রাঘাত করাই হলো একমাত্র শাস্তি। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে একই বিধান প্রযোজ্য। 

মহান আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, 

الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِئَةَ جَلْدَةٍ وَلَا تَأْخُذْكُم بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ

‘ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’ (সূরা: নূর, আয়াত: ০২)। 

অন্যদিকে নারী নির্যাতনের জঘন্যতম মাধ্যম দেহব্যবসা। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশ ‘তোমাদের অধীনস্তদের তোমরা অবৈধ বৃত্তিতে (দেহব্যবসায়) বাধ্য কর না...।’ (সূরা: নূর, আয়াত: ৩৩)।

ইসলাম নারী-পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক মিলনকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তবে তা প্রমাণের জন্য ইসলামে ৪ জন পুরুষ চাক্ষুষ সাক্ষীর বিধানসহ বেশ কিছু কঠোর প্রক্রিয়া অনুসরণের শিক্ষা ও নির্দেশনা দেয়া আছে। তবে ধর্ষকের স্বীকারোক্তি অথবা সাক্ষ্য না পাওয়া গেলে আধুনিক ডিএনএ টেস্ট, সিসি ক্যামেরা, মোবাইল ভিডিও, ধর্ষিতার বক্তব্য ইত্যাদি অনুযায়ী ধর্ষককে দ্রুত গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। স্বীকারোক্তি পেলে তার ওপর শাস্তি কার্যকর করা যাবে।

তবে এমন ক্ষেত্রে সচ্ছতা, নৈতিকতা, পাপ-পরকাল, চিন্তাবিশেষ অগ্রাধিকার পাবে এবং বুঝতে হবে শাস্তির কঠোরতার একমাত্র উদ্দেশ্য ন্যায়, শান্তি ও নারী অধিকার বা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতা নারী নির্যাতনের অনুঘটক। তাই ইসলামে ‘পর্দা’ একটি সার্বক্ষণিক বিধান। এক পলকে একটু দেখায় অনেকটুকু অশ্লীলতা ও নিন্দনীয় অপরাধের জন্ম হয়। এজন্যই ‘চোখের হেফাজত’ বা দৃষ্টির সংযম খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহর নির্দেশ, ‘হে রাসূল (সা.) মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে... নারীরা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে নত রাখে ও নিজের গুপ্তাঙ্গ হেফাজত করে এবং নিজেদের সাজসজ্জা অন্যদের প্রদর্শন না করে।’ (সূরা:নূর, আয়াত: ৩০, ৩১)। 

শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহর কঠোর হুঁশিয়ারি, ‘যারা ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার বিস্তারে উৎসাহী তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সূরা: নূর, আয়াত: ১৯)।

অন্যদিকে দেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষণের জন্য যতটুকু শাস্তির বিধান রয়েছে তা ঠিক মতো প্রয়োগ না হওয়ার ফলে ধর্ষণের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বরং ধর্ষিতাকে একঘরে করে রাখা হয়, তাকে সমাজে বাঁকা চোখে দেখা হয়। তার পরিবারকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। এগুলো কোনোটাই ইসলাম সমর্থন করে না।

বস্তুত ধর্ষণ, ব্যভিচার বা নারী নির্যাতন হলো তথাকথিত ভোগবাদী আধুনিক সভ্যতার উপহার। কিন্তু ইসলাম নারী মুক্তি ও স্বাধীনতার রক্ষক। পৈষাচিকতায় নারীকে বিনোদন অথবা বিপননের মাধ্যম হিসেবে নয় বরং মানুষ তথা আল্লাহর পরিপূর্ণ সৃষ্টির সৌন্দর্যে ইসলাম নারীকে বিকশিত দেখতে চায়। এ লক্ষে ‘সূরা নূর’ মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। 

হজরত ওমর (রা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নারীদের সূরা নূর শিক্ষা দাও।’ 

অন্যদিকে চারিত্রিক পবিত্রতা ও পর্দা একটি আন্তরিক বিষয় এবং পর্দা মেনেই একজন নারী তার সম্ভ্রমকে বহুলাংশে নিরাপদ রাখতে পারেন। 

এজন্যই রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা যা প্রকাশ করো ও গোপন করো আল্লাহ সে বিষয়ে অবগত আছেন।’ (সূরা: নূর, আয়াত :২৯)।

বরগুনার আলো