• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী আইইবির ৬১তম কনভেনশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

কোরআনে দেয়া আল্লাহপাকের নির্বাচনী ইশতেহার

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৮  

নির্বাচন এলেই রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহার ঘোষণা করে। দেশের উন্নয়ন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা ওয়াদা থাকে ইশতেহারে। থাকে কথার ফুলঝুরি। এবারের সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছে।

যারা এখনও ইশতেহার ঘোষণা করেনি, তারাও অল্প দিনের মধ্যেই ঘোষণা করবে। মজার ব্যাপার হল পবিত্র কোরআনও একটি নির্বাচানী ইশতেহার ঘোষণা করেছে।

আল্লাহপাক যদি কাউকে রাষ্ট্রক্ষমতা দেন, তার করণীয় কী এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত অথচ চমৎকার একটি কর্মপ্রণালি ঘোষণা করেছেন আল্লাহতায়ালা। আসুন জেনে নিই কোরআনে বলা নির্বাচনী ইশতেহারগুলো।

আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাজিনা ইম্মাক্কান্নাহুম ফিল আরদি ওয়া আকামুসসালাতা, ওয়া আতুজ্জাকাতা, ওয়া আমারু বিল মারুফি, ওয়া নাহাও আনিল মুনকার। অর্থ : আল্লাহ যাদের রাষ্ট্রপ্রধান এবং জনগণের প্রতিনিধি বানাবেন তাদের দায়িত্ব হল, সালাত কায়েম করা, জাকাত আদায় করা, ভালো কাজের আদেশ এবং মন্দকাজের নিষেধ করা।’ (সূরা হজ : ৪১।) এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা স্পষ্ট বলছেন, যারা রাষ্ট্রের দায়িত্ব পেতে চায় তাদের ইশতেহার কী হবে। প্রথমেই তাদের কাজ হল কল্যাণভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গঠন করা।

সালাত শব্দের অর্থ শুধু নামাজ নয়। বরং প্রতিটি কল্যাণমূলক কাজই সালাতের অন্তর্ভুক্ত। তাহলে একজন রাষ্ট্রনায়ককে প্রথমেই এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, আমাকে যদি রাষ্ট্রের দায়িত্ব দেয়া হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ! রাষ্ট্রে কোনো ধরনের অকল্যাণ-অশান্তি থাকবে না। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি মানুষ সালাতি ও শান্তিময় জিন্দেগি উপভোগ করবে।

দ্বিতীয় কাজটি হল, জাকাত আদায় করা। অর্থনীতি একটি রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড। দরিদ্রতা হল এ মেরুদণ্ডের ক্ষত। জাকাত হল সে ক্ষতের ওষুধ। কোরআন বলছে, রাষ্ট্রপ্রধানের দ্বিতীয় কাজ হবে, রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা।

এ জন্য জাকাত থেকে শুরু করে ঐচ্ছিক এবং বাধ্যতামূলক দান-সদকা, ব্যবসা-বাণিজ্য, বেকারদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুরো দেশে অভাব- এবং দরিদ্রতাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে। তবেই দেশের জনগণ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

আরেকটি অর্থ এ অংশ থেকে নেয়া যায়, তা হল- অর্থনীতিকে এমন শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে যেতে হবে যে, রাষ্ট্রের বেশিরভাগ জনগণ জাকাত দিতে পারে এ পরিমাণ সম্পদের মালিক যেন তারা হতে পারে।

একজন রাষ্ট্রপ্রধানের তৃতীয় কর্মসূচি হল, তার রাষ্ট্রে ভালো কাজের আদেশ ও উৎসাহ দেয়া হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের আইন এবং অন্যান্য বিভাগ এমনভাবে গড়ে উঠবে, যেন একপর্যায়ে প্রতিটি জনগণই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভালো ও সৎকাজের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। শুধু তাই নয়। তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে ভালো ও সৎকাজের উপদেশ এবং পরামর্শ দেবে।

কখনও যদি কেউ মন্দ ও দুর্নীতির কথা বলেও ফেলে, সাধারণ মানুষ তাকে সুন্দর ও সঠিক পথে চলার জন্য বোঝাবে। একপর্যায়ে পরিবেশের প্রভাবে সে ভালো কাজ করতে বাধ্য হবে।

ভালো কাজের আদেশের পাশাপাশি অসৎকাজে নিষেধের কর্মসূচিও রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তি থেকে শুরু করে সামষ্টিক পর্যায়ে অসৎ এবং খারাপ কাজগুলো আইন করে নিষেধ করতে হবে।

পাশাপাশি মানুষ যেন কোনোভাবেই অন্যায়-অসত্যের সঙ্গে মিশে যেতে না পারে সে কর্মসূচিও একটি রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে। একটি আদর্শ রাষ্ট্র শুধু খারাপ কাজের নিষেধই করবে না, বরং খারাপ কাজের আশপাশেও যেন মানুষ ঘেঁষতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপাশি কেন মানুষ খারাপ পথে পা বাড়ায়, সে কারণ খুঁজে বের করে প্রত্যেকটি কারণের পথ বন্ধ করে দিতে হবে। তবেই অসৎ কাজের নিষেধ যথার্থ হবে।

পবিত্র কোরআনের আলোকে একজন মুসলিম রাজনীতিবিদের, একটি আদর্শ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অবশ্যই এ বিষয়গুলো প্রাধান্য পাওয়া জরুরি। এ বিষয়গুলো ছাড়াও আরও অন্যান্য বিষয় গুরুত্ব পেতে পারে।

কিন্তু এ চারটি মৌলিক কর্মসূচিকে সামনে রেখে আমাদের দেশের কর্মপরিকল্পনা ঠিক রাখতে পারলে নিশ্চিত করে বলা যায়- আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি সোনার বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে ইনশাআল্লাহ। আল্লহতায়ালা আমাদের বোঝার তাওফিক দান করুন। আমাদের দেশের কর্ণধার-রাজনীতিবিদদের হৃদয়ে কোরআনের ঐশী আলো জ্বলে উঠুক।

লেখক : শিক্ষার্থী মাস্টার্স, ডিপার্টমেন্ট অব তাফসির মাদরাসা ই আলিয়া, ঢাকা

বরগুনার আলো