• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

সন্তান : দাম্পত্য জীবনের পূর্ণতা

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  


 
মানুষের অপ্রতিরুদ্ধ জৈবিক চাহিদা বৈধ পদ্ধতিতে পূরণের জন্যই দাম্পত্য জীবনের ব্যবস্থাপনা রেখেছে ইসলাম। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে পূর্ণতা আসে না নেক সন্তান ছাড়া। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী যখন বাবা-মা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে তখনই তাদের দাম্পত্য জীবনের সার্থকতা। 

কথা হচ্ছে, অনেক দম্পতিকেই দেখা যায় সন্তান হত্যার ব্যাপারে ‘প্রথমরাত’ থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। তারা মনে করে, সংসার জীবনে আনন্দ-ফূর্তির প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে এই সন্তান। আর তাই প্রথমরাত থেকেই সন্তান হত্যার ঘৃণ্য ও অমানবিক সব পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকে। আর বলে, এখনই সন্তান নেয়া যাবে না, আরও পরে নিব। তাদের কথার ভাব এমন, যেন সন্তান হওয়া-না হওয়া তাদের ইচ্ছা বা হুকুমের উপর নির্ভর করছে। আর সন্তান হত্যা করা যে মহাপাপ তা যেন তারা জানেনই না। আর জানলেও বিশ্বাস করেন না।

একটু তাকিয়ে দেখুন, সমাজে এমন অনেক দম্পতি পাবেন যারা প্রথম জীবনে জন্ম নিয়ন্ত্রণের নামে সন্তান হত্যার বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। পরে তাদের আর সন্তানই হয়নি। শত চিকিৎসা আর কান্নাকাটি করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। নিঃসন্তানের অভিশাপ মাথায় নিয়ে সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমনকি সংসারও ভাঙার পথে। 

অতীতে এত প্রতিবন্ধি বা বিকলাঙ্গ রুগ্ন শিশুর জন্ম হতো না। কারণ তারা জন্ম নিয়ন্ত্রণের নামে কোনো বিষ গ্রহণ করত না। কিন্তু দিন দিন প্রতিবন্ধী আদম সন্তানের তালিকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, জন্ম নিরোধকল্পে বিভিন্ন স্থায়ী ও স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ। গর্ভাশয়ে এসব বিষ মারাত্মক ইনফেকশন সৃষ্টি করে। ফলে পরবর্তীতে সেখানে যে সন্তান জন্ম নেয় তা হয় রুগ্ন বা প্রতিবন্ধী।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো আজকে জন্ম নিরোধের এ ভুল বুঝতে পারছে এবং অধিক সন্তান নেয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে ভাতা পর্যন্ত দিচ্ছে। অথচ মুসলিম জাতি যেন জনসংখ্যার দিক থেকে বাড়তে না পারে সেজন্য এসব পদ্ধতির দিকে আমাদেরকে বেশি উৎসাহ ও বিনামূল্যে সেবা দেয়া হচ্ছে। 

যাহোক, সন্তান হত্যার চিন্তা মাথায় এসে থাকলে আজই তাওবা করুন। অন্যথায় আল্লাহর গজবের ভয় রয়েছে নিশ্চিত। দুয়া করুন, হে আল্লাহ! আমাদের অনেক নেক সন্তান দান করুন। যাতে আপনার সন্তুষ্টির পথে তারা কাজে আসে। আমরাও যেন গর্ব করতে পারি। কিয়ামতের দিন বলতে পারি, আমরা অমুকের গর্বিত পিতা-মাতা।

মহান আল্লাহ বলেন :

﴿وَلَا تَقْتُلُوْآ أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ ط نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ ط إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيْرًا﴾

দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিজিক দেই, আর তোমাদেরকেও। তাদের হত্যা মহাপাপ। [সুরা ইসরা, ১৭: ৩১]

﴿وَكَذٰلِكَ زَيَّنَ لِكَثِيْرٍ مِّنَ الْمُشْرِكِيْنَ قَتْلَ أَوْلَادِهِمْ شُرَكَاؤُهُمْ لِيُرْدُوْهُمْ وَلِيَلْبِسُوْا عَلَيْهِمْ دِيْنَهُمْ ط وَلَوْ شَآءَ اللهُ مَا فَعَلُوْهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُوْنَ﴾

আর এভাবে তাদের দেব-দেবীরা বহু মুশরিকদের চোখে নিজেদের সন্তান হত্যাকে আকর্ষণীয় করে দিয়েছে তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য এবং তাদের দীনের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য। আল্লাহ যদি ইচ্ছে করতেন তবে তারা এ করত না। কাজেই তাদেরকে ছেড়ে দাও, তারা তাদের মিথ্যে নিয়ে মগ্ন থাকুক। [সুরা আনয়াম, ৬: ১৩৭]

﴿قَدْ خَسِرَ الَّذِيْنَ قَتَلُوْآ أَوْلَادَهُمْ سَفَهًام بِغَيْرِ عِلْمٍ وَّحَرَّمُوْا مَا رَزَقَهُمُ اللهُ افْتِرَآءً عَلَى اللهِ ط قَدْ ضَلُّوْا وَمَا كَانُوْا مُهْتَدِيْنَ﴾

যারা মূর্খের মতো না জেনে তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে আর আল্লাহর নামে মিথ্যে কথা বানিয়ে নেয়ার মাধ্যমে আল্লাহর দেয়া জীবিকাকে হারাম করে নিয়েছে, তারা নিশ্চিতরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে আর তারা কস্মিনকালেও হিদায়াতপ্রাপ্ত ছিল না। [সুরা আনয়াম, ৬: ১৪০]

﴿قُلْ تَعَالَوْا أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلَّا تُشْرِكُوْا بِه شَيْئًا وَّبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَلَا تَقْتُلُوْآ أَوْلَادَكُمْ مِّنْ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ ذٰلِكُمْ وَصّٰكُمْ بِه لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ﴾

বলো, এসো! তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য যা নিষিদ্ধ করেছেন তা পড়ে শোনাই। তা এই যে, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরিক করো না। পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো। দারিদ্রতার ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। আমিই তোমাদেরকে আর তাদেরকে জীবিকা দিয়ে থাকি। প্রকাশ্য বা গোপন কোনো অশ্লীলতার কাছেও যেয়ো না। আল্লাহ যে প্রাণ হরণ করা হারাম করেছেন তা ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া হত্যা করো না। এ সম্পর্কে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করো। [সুরা আনআম ৬: ১৫১]

﴿اَلْمَالُ وَالْبَنُوْنَ زِيْنَةُ الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِنْدَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَّخَيْرٌ أَمَلًا﴾

ধন-সম্পদ আর সন্তানাদি পার্থিব জীবনের শোভা-সৌন্দর্য। আর তোমার প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার লাভের জন্য স্থায়ী সৎকাজ হলো উৎকৃষ্ট আর আকাক্সক্ষা পোষণের ভিত্তি হিসেবেও উত্তম। [সুরা কাহফ, ১৮: ৪৬]

﴿أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلٰى نِسَآئِكُمْ ط هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ط عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُوْنَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ ج فَالْئٰنَ بَاشِرُوْهُنَّ وَابْتَغُوْا مَا كَتَبَ اللهُ لَكُمْ ص وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِص ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ ج وَلَا تُبَاشِرُوْهُنَّ وَأَنْتُمْ عٰكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ ط تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ فَلَا تَقْرَبُوْهَا ط كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللهُ اٰيٰتِه لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُوْنَ﴾

তোমাদের জন্য রমাযানের রাতে তোমাদের স্ত্রীগণের নিকট গমন করা জায়েয করা হলো। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা লাভ কর।
তোমরা আহার ও পান করতে থাকো, যে পর্যন্ত তোমাদের জন্য কালো রেখা হতে ঊষাকালের সাদা রেখা প্রকাশ না পায়। তারপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আর মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সাথে সহবাস করো না। এসব আল্লাহর আইন। কাজেই এগুলোর নিকটবর্তী হয়ো না। আল্লাহ মানবজাতির জন্য নিজের আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা মুত্তাকী হতে পারে। [সুরা বাকারা, ২: ১৮৭]

﴿لِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ط يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ ط يَهَبُ لِمَنْ يَّشَآءُ إِنَاثًا وَّيَهَبُ لِمَنْ يَّشَآءُ الذُّكُوْرَ أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَّإِنَاثًا ج وَيَجْعَلُ مَنْ يَّشَآءُ عَقِيْمًا ط إِنَّه عَلِيْمٌ قَدِيْرٌ﴾

আসমান ও জমিনের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান তাই সৃষ্টি করেন। যাকে চান কন্যা সন্তান দেন, যাকে চান পুত্র সন্তান দেন। অথবা তাদেরকে দেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই। আর যাকে ইচ্ছে বন্ধ্যা করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বাধিক অবহিত ও ক্ষমতাবান। [সুরা আশ-শুরা ২৬: ৪৯-৫০]

হাদিসে এসেছে : 
আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কোন্ ধরনের নারী জান্নাতি আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না?’ তাঁরা বললেন, ‘হ্যাঁ! হে আল্লাহর রাসুল।’ তিনি বললেন, ‘জান্নাতি নারীরা হচ্ছে, স্বামীর প্রতি প্রেম নিবেদনকারিণী এবং অধিক সন্তান প্রবসকারিণী। তার আনুগত্যের প্রকাশ হচ্ছে, স্বামী তার প্রতি রাগান্বিত হলে স্বামীর কাছে গিয়ে বলে, এই আমার হাত আপনার হাতে সঁপে দিলাম। আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি চোখের পলক ফেলব না। অর্থাৎ আমি কোন আরাম নিব না, কোন আনন্দ বিনোদন করব না, যতক্ষণ আপনি আমার প্রতি খুশি না হন।’ [তাবারানি, মুজামুল কাবির: ১১৮, নাসায়ি, সুনানুল কুবরা: ৯১৩৯]

বরগুনার আলো