• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

শিহরণ জাগানো ছয় আধা-মানুষের গল্প

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯  

পরিভাষায় তাদের বলা হয় Feral Children । বহুদিন ধরে মনুষ্য সমাজ থেকে দূরে জঙ্গলে জন্তুদের সঙ্গে বসবাস করতে করতে এক সময় তারা হারিয়ে ফেলে মানুষের স্বভাব‚ জন্তুদের মতোই হাঁটাচলা‚ খাদ্যাভ্যাস রপ্ত করে তারা হয়ে ওঠে অব-মানব । এমনই ছয় চমকে দেওয়া অব-মানব নিয়ে এই লেখা।

The Chicken Boy‚ ফিজি‚ ১৯৭৮

জন্ম থেকেই একটু অন্যরকম আচরণ করত সুজিত । অতিষ্ঠ ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে তার মা-বাবা তাকে বন্ধ করে রাখেন মুরগির খোঁয়াড়ে । পরবর্তীকালে মা সুইসাইড করেন ও আর বাবা খুন হয়ে যান । ঠাকুর্দা সুজিতের দায়িত্ব নিলেও তিনিও তাকে সেই মুরগির ঘরেই বন্দি রাখেন । তার বয়স যখন প্রায় আট বছর একদিন রাস্তার মাঝখানে খুঁজে পাওয়া যায় তাকে । মুরগির মতোই হাত ঝাপটাচ্ছে তখন সে‚ মাটি থেকে খুঁটে খাচ্ছে খাবার । হাতের তালু তথা আঙুলগুলো গেছে শরীরের ভেতরের দিকে মুড়ে । মুরগির মতোই তার বসার ভঙ্গি‚ মুখ দিয়ে শুধু অনবরত মুরগির মতো শব্দ । রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে একটি হোমে রাখা হয় । কিন্তু সেখানেও তার অতিরিক্ত হিংস্রতার কারণে বিছানার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় টানা প্রায় কুড়ি বছর ।

শামদেও‚ ভারত‚ ১৯৭২

১৯৭২ সালে ভারতবর্ষের এক জঙ্গলে খুঁজে পাওয়া যায় ৪ বছরের শামদেওকে । তখন সে খেলা করছিল কতগুলো নেকড়ের বাচ্চার সঙ্গে । গায়ের রঙ সম্পূর্ণ কালো‚ গা লোমে ঢাকা‚ হাতে পায়ে বড় বড় নখ । জন্তুদের মতোই রক্তের স্বাদ ছিল তার ভারি পছন্দের‚ মুরগি শিকার করা তার স্বাভাবিক এবং প্রিয় শখ । ১৯৭৮ সালে তাকে উদ্ধার করার পর আস্তে আস্তে কাঁচা মাংস খাওয়া ছেড়ে দিলেও বহুদিন কোনও কথা বলেনি সে । ১৯৭৮ সালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লক্ষণৌতে মাদার টেরেজার হোমে । কিছু সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করেতে শিখলেও ১৯৮৫ সালে মারা যাওয়ার আগে অব্দি মানুষের ভাষা শিখতে পারেনি সে ।

Jungle Girl‚ কম্বোডিয়া‚ ২০০৭

২০০৭-এর জানুয়ারি এক গ্রামবাসীর খাবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে Jungle Girl ‘রোকোম‘ । কাঁধের দাগ দেখে তাকে তার হারিয়ে যাওয়া মেয়ে বলে শনাক্ত করেন এক পুলিশকর্মী । ১৯৯৮ সালে আট বছর বয়সে বোন এর সঙ্গে মোষ চরাতে গিয়ে জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিল রোকোম । যখন সে ধরা পড়ে তার গা ভর্তি ময়লা‚ সম্পূর্ণ উলঙ্গ‚ ভুলে গেছে মানুষের ভাষা । দাঁরিয়ে নয় সে চলাফেরা করত চারপেয়েদের মতো । আর খিদে পেলে বা তেষ্টা পেলে ইঙ্গিতে শুধু মুখের দিকে দেখাত । ২০০৮-এর জুলাই মাসের মধ্যে খেতে‚ চান করতে ও নিজে নিজে জামা কাপড় পরতে শিখলেও আর কোনওদিনই কথা বলতে শেখেনি সে ।

মারিনা চাপমান‚ কলোম্বিয়া‚ ১৯৫৯

১৯৫৪ সালে দক্ষিণ আমেরিকার এক গ্রাম থেকে ৫ বছর বয়সে অপহরণ করা হয়েছিল মারিনাকে । অপহরণের পর জঙ্গলেই মারিনাকে ফেলে রেখে চলে যায় তার অপহরণকারীরা । ৫ বছর পর এক দল শিকারী যখন তাকে উদ্ধার করে তখন সে থাকত একদ্ল কাপুচিন বাঁদরদের সঙ্গে । বাঁদরদের মতোই তখন তারও খাদ্য‚ গাছের ফলমূল‚ শিকড়‚ বেরি ইত্যাদি । তাদের মতোই চার পায়ে চলা ফেরা করে‚ গাছে চড়ে মারিনা । ভুলে গেছে মানুষের ভাষা । উদ্ধারের পর এক পতিতালেয়ে তাকে বেচে দেয় সেই শিকারীর দল । পরবর্তীকালে একটি মাফিয়া পরিবারে দাসী হিসেবে ঠাঁই পায় সে । শেষমেশ বহু ঝড় পেরিয়ে ১৯৭৭ সালে ইউ.কে-এর ব্র্যাডফোর্ডে গিয়ে থিতু হয় মারিনা । বিয়ে হয়‚ সন্তানেরও জন্ম দেয় সে । ছোট মেয়ে ভেনেসার সঙ্গে যৌথভাবে লেখা ‘The Girl With No Name’ বইতে নিজের কথা লিখে গেছে মারিনা ।

The Monkey Boy‚ উগান্ডা‚ ১৯৯১

১৯৮৮ সালে বাবার হাতে মা কে খুন হতে দেখে মাত্র ৩ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল জন সেবুনায়া । ১৯৯১ সালে ৬ বছর বয়সে যখন খুঁজে পাওয়া যায় তাকে তখন সে প্রায় বাঁদরের মতো জীবন যাপন করে । হাঁটুতে কড়া পড়ে গেছে‚ বেঁচে আছে ফলমূল খেয়ে । হোমে পাঠিয়ে আস্তে আস্তে সুস্থ করে তোলা হয় তাকে।

কমলা ও অমলা‚ ভারত‚ ১৯২০

১৯২০ সালে নেকড়েরা বেরিয়ে যাওয়ার পর গাছের ওপর লুকিয়ে থাকা রেভারেণ্ড জোসেফ সিং জঙ্গলের ভেতরে একটা নেকড়ের গুহা থেকে উদ্ধার করেন দুই বোন কমলা ও অমলাকে । কমলার বয়স তখন আট‚ অমলার দেড় । নেকড়ের মতোই গুটিয়ে শুয়ে থাকত তারা । সেই কারণে মানুষের মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকাশও ঘটেনি । কাঁচা মাংসই ছিল তাদের প্রধান খাদ্য । নেকড়ের মতোই গর্জন করত তারা । মানুষের দুনিয়ায় কোন রকম উৎসাহ ছিল না তাদের । তাদের ঘ্রাণ‚ শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি ছিল নেকড়েদের মতোই প্রখর । উদ্ধার হওয়ার পরের বছরই মারা যায় অমলা । পরবর্তীকালে মানুষের মতো দাঁরিয়ে হাঁটতে ও কিছু শব্দ বলতে শিখলেও শেষ পর্যন্ত ১৭ বছর বয়সে কিডিনি ফেল করে মারা যায় কমলা ।

বরগুনার আলো