• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা

দুই ভাইয়ের অবৈধ সম্পদের হিসাব মেলাতে ঘাম ছুটছে পুলিশের

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ফ্ল্যাট ও প্লটের সন্ধান মিলছে ক্যাসিনো অভিযানের সময় গ্রেফতার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি (বরখাস্ত) এনামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূইয়ার। এই দুই ভাইয়ের অবৈধ সম্পত্তির হিসাব-নিকাশ ও যাচাই-বাছাই করতে ঘাম ছুটে যাওয়ার মতো অবস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)। তাদের অবৈধ সম্পদ খুঁজতে গিয়ে প্রতিদিনই অবাক হচ্ছেন কর্মকর্তারা। তদন্ত শেষে পুনরায় তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিআইডি। অপরদিকে, র‌্যাবের দায়ের করা চারটি মামলার অভিযোগপত্র শিগগিরই জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংস্থাটি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তদন্তে তাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন এমন অর্ধশত ব্যক্তির নামও বেরিয়ে আসছে।

তদন্ত সূত্রে দুই ভাইয়ের সম্পত্তির কিছু হিসাব পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রয়েছে, রাজধানীর সূত্রাপুরের বানিয়ানগরে ২০১৪-১৫ সালে কেনা ছয়টি ফ্ল্যাট ও এক কাঠা জমি। বাবা চাচাদের নামে ওয়ারীর ১০৫ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে পাঁচটি ফ্ল্যাট ও পৌনে দুই কাঠা জমি । ১০৬ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে ১০ তলা ভবনে ১০টি ফ্ল্যাট ও দুই কাঠা জমি। ১০৩ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে এক কাঠার প্লট। ১১৬ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে ছয়তলা ভবনে ছয়টি ফ্ল্যাট, ১১২ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে ছয়তলা ভবনে ছয়টি ফ্ল্যাট, আধাকাঠা জমি। ১২০ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে এক কাঠার প্লট। ৭০নং দক্ষিণ মৈসুন্দি ওয়ারী সাততলা ভবনে ১৪টি ফ্ল্যাট।

আরও আছে, ৬৫/২ শাহ সাহেব লেন গেন্ডারিয়ায় ১০ তলা ভবনে ১৭টি ফ্ল্যাট ও তিন কাঠা জমি। ৭০ ও ৭১নং শাহ সাহেব লেনে ছয়তলা বাসায় দুটি ফ্ল্যাট ও ১ কাঠা জমি। ৮নং শাহ সাহেব লেনে পাঁচতলা বাড়িতে ১৩টি ফ্ল্যাট ও তিন কাঠা জমি। ১৫নং নারিন্দা লেনে ছয়তলা ভবনে ১১টি ফ্ল্যাট ও দুই কাঠা জমি। ৬ নম্বর গুরুদাস সরদার লেনে ছয়তলা ভবনে ১২টি ফ্ল্যাট ও চার কাঠা জমি। গেন্ডারিয়ায় ১৩৫ ডিস্টিলারি রোডে একতলা টিনশেড বাড়ি ও সাড়ে তিন কাঠা জমি। ওয়ারী থানার পেছনে ৪৪/বি বজ্রহরি শাহ স্ট্রিটে চার কাঠার খালি প্লট। ৮৮ মুরগিটোলা নয়াহাজীতে ৯ কাঠার খালি প্লট। কেরানীগঞ্জে তেঘরিয়া এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে বাংলো বাড়ি।

এনু রুপন স্টিল হাউজের নামে বংশাল থানার ১৪ নবাব ইউসুফ রোডে দোকান, একই রোডে আরেকটি দোকান আছে ভাড়ায় নেওয়া। ধোলাইখালে বাঁধন এন্টারপ্রাইজ নামে দোকান। ২৯নং বানিয়ানগরে সুমন শিট কাটিং নামে জহিরুল হক দুলের সঙ্গে পার্টনারশিপে ব্যবসা। ১০৩ লালমোহন স্ট্রিটের পাশে ১০১/১০২ নম্বর প্লটে আধা কাঠা জমি। ১১৯ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে আধা কাঠা জমির ওপর ছয়তলা ভবনে ফ্ল্যাট। নারিন্দা লেন গেন্ডারিয়ায় চারতলা বাড়িতে পাঁচটি ফ্ল্যাট ও পাঁচ কাঠা জমি। এছাড়াও সেখানে ১৫ কাঠার ওপর একতলা তিন রুমের একটি বাড়ি আছে। ১৪ নারিন্দা লেনে পাঁচতলা ভবনে দুটি ফ্ল্যাট, একটি তিনতলা ভবনে একটি ফ্ল্যাট। সেখানে ডেভেলপার জাহিদ ডায়েম-এর ভবনে এক হাজার বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট নির্মাণাধীন। ৬৫ শাহ সাহেব লেন খালি টিনশেড বাড়ি।

ঢাকার বাইরের সম্পদের মধ্যে রয়েছে, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় ১০ কাঠার খালি প্লট, এনু ও রুপন স্টিল হাউজের জন্য বানিয়ানগরে ভাড়া নেওয়া দোকান। শরীয়তপুরের নড়িয়া থানায় ১২ শতাংশ ক্ষেত। পালং থানার দোমশা গ্রামে ২০ শতক ও ১৪ শতক ক্ষেত। এছাড়াও চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও খুলনা, মানিকগঞ্জ ও সাভারে তাদের জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। সিআইডি সেগুলো যাচাই-বাছাই করছে।

অন্যদিকে, তাদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা পেয়েছে পুলিশ। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এরা দুই ভাই ক্যাসিনোর টাকা ব্যাংকে রাখতো না। কারণ, তাদের টাকার উৎস বৈধ ছিল না। তারা জমি, ফ্ল্যাট ও স্বর্ণ কিনতো। তবে এসব সম্পত্তিও তারা বৈধ করতে পারেনি। এগুলো অর্জনের আয়ের কোনও বৈধ উৎস এখনও দেখাতে পারেনি। ঢাকার আশপাশের সব জেলায় তাদের জমি রয়েছে। তবে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরা দুই ভাই শিক্ষিত না। তারা অবৈধ সম্পত্তি অর্জনের পাশাপাশি সেগুলো উড়িয়েছে। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছে। এ সময় তারা একজন শিক্ষিত লোককে গাইড হিসেবে নিতো। এই দুই ভাইয়ের কাছ থেকে অনেকেই টাকা পয়সা নিয়েছে।’

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও অর্থ জব্দের পর তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানিলন্ডারিং আইনে দায়ের হওয়া ৯টি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। ৯টির মধ্যে চারটি মামলার এজাহারে দুই ভাই এনামুল ও রূপনের নাম রয়েছে। মামলা তদন্ত করে আমরা তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করি। একপর্যায়ে কেরানীগঞ্জে এক সহযোগীর বাড়ি থেকে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’

বরগুনার আলো