আদিবাসী নারী মুক্তিযোদ্ধা
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসী নারী মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ছোট করে দেখার মতো নয়। খাসিয়া নারী কাঁকন বিবি ও কাঁকেট, রাখাইন নারী প্রিনছা খে, গারো নারী সন্ধ্যারানী সাংমা, ভেরোনিকা সিমসাংসহ অনেক নারী মহান মুক্তিযুদ্ধে স্মরণীয় অবদান রেখেছেন। বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি সেক্টর কমান্ডার মীর শওকত আলী ও ক্যাপ্টেন হেলাল উদ্দিনের অধীনে পরিচালিত শহীদ কোম্পানির একজন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কাঁকেট মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। তিন মাস সেনাক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় নির্যাতন-নিপীড়নের পর সেনাক্যাম্পেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। প্রিনছা খে মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে সেবিকার দায়িত্ব পালন করতেন। পাকিস্তানী বাহিনী প্রিনছা খেকে বন্দী করে। তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালায় অহরহ। গোপনে বিষ সংগ্রহ করে পাকিস্তানী সেনাদের খাবারে তা মিশিয়ে প্রিনছা খে ১৫ পাকিস্তানী সেনাকে মেরে ফেলেন। সারা বাংলাদেশে এমন অসংখ্য আদিবাসী নারী মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের ইজ্জত বিকিয়েছেন। অস্ত্র ধরেছেন পাকিস্তানী বর্বর পশুদের বিরুদ্ধে। ক্যাম্পে ক্যাম্পে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। এমনই দু’জন নারী মুক্তিযোদ্ধা হলেন- সন্ধ্যারানী সাংমা ও ভেরোনিকা সিমসাং।
সন্ধ্যারানী সাংমা
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যে ক’জন নারী বিশেষ অবদান রেখেছেন তাঁদের মধ্যে একজন হলেন সন্ধ্যারানী সাংমা। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর জানজালিয়া গ্রামে তিনি ১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা জমির মারাক। মাতার নাম রিংমি। বর্তমানে তিনি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নলচাপ্রা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান সন্ধ্যারানী সাংমার মধুপুর জলছত্র মিশন স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষায় হাতে খড়ি। অতঃপর ভূটিয়া হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পিতা ছিলেন একজন কৃষক। মাতা আদিবাসী সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘরে ও কৃষিক্ষেতে কাজ করতেন। ১৯৬৯ সালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জয় রামকুড়া খ্রীস্টান মিশনারি হাসপাতালে নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন।
১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন নার্সিং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ময়মনসিংহ থেকে হালুয়াঘাটের দিকে অগ্রসর হলে সন্ধ্যারানী সাংমা তাঁর দূর সম্পর্কীয় বোন ভেরোনিকা সিমসাংয়ের সঙ্গে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মহেন্দ্রগঞ্জ থানার অধীনে চাপাহাতি গ্রামে পৌঁছেন।
এ সংবাদ শুনে হালুয়াঘাটের জয় রামকুড়া নার্সিং হাসপাতালের ডাক্তার প্রেমাংকুর রায় সন্ধ্যারানী সাংমা ও ভেরোনিকা সিমসাংকে ১১ নং সেক্টরের অধীনে অবস্থিত ফিল্ড নার্সিং হাসপাতালে নিয়ে আসেন। যে হাসপাতালের দায়িত্বে ছিলেন ১১ নং সেক্টরের ক্যাপ্টেন আব্দুল মান্নান ও ডাক্তার প্রেমাংকুর রায়। হাসপাতালটির অবস্থান ছিল বাঘমারা ক্যাম্প থেকে ৪০০ গজ দূরে। সেই হাসপাতালে মেডিক্যাল ওয়ার্ড ও সার্জারি ওয়ার্ডে প্রতিদিন আহত ও রোগাক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেয়া হতো।
সন্ধ্যারানী সাংমা সেপ্টেম্বর মাসের দিকে ধানুয়া-কামালপুর হয়ে জামালপুরে প্রবেশ করেন। সেখানে একটি রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করেন এবং তাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেন। শেরপুরে ২৯ দিন অবস্থান করে সন্ধ্যারানী সাংমা মুক্তিযোদ্ধাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেন। এরপর বকশীগঞ্জ হয়ে জামালপুরে যান এবং দুটি অপারেশনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। দুই সপ্তাহ পর জামালপুর হানাদার মুক্ত হয়। জামালপুর হানাদার মুক্ত হলে দু’জন ভারতীয় সৈন্যের তত্ত্বাবধানে সন্ধ্যারানী সাংমা মধুপুরে নিজ বাড়িতে পৌঁছেন।
যুদ্ধকালীন প্রতিটিক্ষণ সন্ধ্যারানী সাংমার কাছে স্মরণীয়। একদিন বকশীগঞ্জের একটি মাঠে তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী হাসপাতালে সন্ধ্যারানী সাংমা, ভেরোনিকা সিমসাং, দুলাল মিয়া, ডাক্তার প্রেমাংকুর রায়, ক্যাপ্টেন আব্দুল মান্নানসহ আট/দশ জনের একটি টিম কর্মরত ছিলেন। হঠাৎ তাঁবুর পার্শ্বে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিকট বোমার আওয়াজ পাওয়া যায়। তাঁবুর প্রায় কাছাকাছি বোমাটি ফাটে। অল্পের জন্য তাঁরা সকলে রক্ষা পান। সন্ধ্যারানী সাংমা ১৯৭৩ সালের ১৬ জানুয়ারি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নলচাপ্রা গ্রামের চার্চিল কুবীকে বিয়ে করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি জেবিরাজ দোলন কুবী, অহিমাস সাংমা ও মঞ্জুশ্রী মৃ নামে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী|
ভেরোনিকা সিমসাং
ভেরোনিকা সিমসাং টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার আমলীতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম বিশ্বনাথ চাম্বুগাং। মাতার নাম কামিনী সিমাসাং। ভেরোনিকা সিমসাং ১৯৬৯ সালে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটের জয় রামকুড়া খ্রীস্টান মিশনারি হাসপাতালে নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে তিনি নার্সিং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ময়মনসিংহ থেকে হালুয়াঘাটের দিকে অগ্রসর হলে ভেরোনিকা সিমসাং ও সন্ধ্যারানী সাংমা মরিয়মনগর মিশনে আশ্রয় নেন। সেখানে থেকে তাঁরা চলে যান ভারতের মেঘালয় প্রদেশের মহেন্দ্রগঞ্জ থানার চাপাহাতি গ্রামে আত্মীয়ের বাসায়। ভেরোনিকা সিমসাং ও সন্ধ্যারানী সাংমা ভারতের চাপাহাতি গ্রামে অবস্থান করছেন জেনে হালুয়াঘাটের জয় রামকুড়া খ্রীস্টান মিশনারি হাসপাতালের ডাক্তার ফিল্ড নার্সিং হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বাঘমারা ক্যাম্পের অদূরেই ফিল্ড নার্সিং হাসপাতালটির অবস্থান ছিল। ক্যাপ্টেন আব্দুল মান্নান ও ডাক্তার প্রেমাংকুর রায় সে হাসপাতালের দায়িত্বে ছিলেন। কিছুদিন সেখানে থেকে ভেরোনিকা সিংসাং আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেন।
১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে ভেরোনিকা সিমসাং ও তাঁদের মেডিক্যাল টিম ধানুয়া-কামালপুর হয়ে শেরপুর ও জামালপুরে প্রবেশ করেন। শেরপুর ২৯ দিন অবস্থান করে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদান করেন। জামালপুরের বিভিন্ন যুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদান করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেরোনিকা সিমসাং বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদানরত অবস্থায় ডিসেম্বরে জামালপুর হানাদার মুক্ত হলে দুজন ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় বাড়ি ফেরেন।
ভেরোনিকা সিমসাং ১৯৭৩ সালে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের বেড়িবাইদ গ্রামের খগেন্দ্র সাংমা ডিব্রাকে বিয়ে করেন। সেবিকা মুক্তিযোদ্ধা ভেরোনিকা সিমসাং ২০০৫ সালে ১৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে মধুপুরের বেড়িবাইদ গ্রামে সমাহিত করা হয়। পারিবারিক জীবনে তিনি লাকী সিমসাং, দীনা সিমসাং, দীপন সিমসাং নামে দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী ছিলেন।
বরগুনার আলো- প্রস্রাবের যে সমস্যা মূত্রথলির রোগের লক্ষণ
- জেনে নিন খাবার স্যালাইনের সঠিক ব্যবহার
- প্রাণ জুড়াতে কাঁচা আমের আইসক্রিম
- ফোনের বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করবেন যেভাবে
- সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি: অভিযুক্তের আত্মহত্যা
- থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে
- রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে
- অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ
- বাংলাদেশের রেল উন্নয়নে সহযোগিতায় আগ্রহী রাশিয়া
- এআই প্রযুক্তিতে চলবে সরকারি অফিস
- সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে ১২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি
- চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার সুপারিশ
- সংশোধন করা হচ্ছে শ্রম আইন
- রেডিয়েশন প্রয়োগে ঘরেই সংরক্ষণ করা যাবে পেঁয়াজ
- চিকিৎসকরা অফিস টাইমে হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা
- প্রবৃদ্ধির দৌড়ে চীন মালয়েশিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
- গণতন্ত্র দখলকারীদের থেকে এখন গণতন্ত্রের সবক শুনতে হয়
- দেশের গণমাধ্যমে ৩ গুণ বেড়েছে ভুয়া খবর
- আমাদের ইভিএম এর ত্রুটি কেউ প্রমান করতে পারেনি-ইসি মো. আলমগীর
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেই
- গৌরনদীতে ৪ কেজি গাঁজা ও ১০৩ পিচ ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- ভোলায় কোস্ট গার্ডের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন ও ঔষধ সামগ্রী বিতরণ
- ইলিশ শিকারে নেমেছে জেলেরা, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার আশা
- র্যাবের অভিযানে শেবাচিম থেকে দালাল চক্রের ২৫ সদস্য আটক
- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা, যুবক গ্রেপ্তার
- ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার, পরীক্ষার্থী প্রায় ৯৫ হাজার
- অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
- আন্তর্জাতিক কার্বন ক্রেডিটিংয়ের মাধ্যমে আয় সম্ভব : পরিবেশমন্ত্রী
- শেষ হলো ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা
- দেশের বিভিন্ন স্থানে মহান মে দিবস পালিত
- বরগুনায় মা ও মেয়ে ধর্ষণের পলাতক আসামী গ্রেফতার
- কলাপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড
- গরমে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া কি বিপদের লক্ষণ?
- কমবয়সীদেরও কেন হয় হার্নিয়া, এর চিকিৎসা কী?
- এই গরমে দিনে কয়বার গোসল করা উচিত?
- দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ শিকারে প্রস্তুত জেলেরা
- রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- চালের বিকল্প হিসেবে গম আমদানি করছে সরকার
- শবে কদরের নামাজের নিয়ত ও পড়ার নিয়ম
- মাত্র ১২০ টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকুরি পেল বরিশালের ৫৮ জন
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- বোরোর বাম্পার ফলনে হাওড়ে উৎসবের আমেজ
- প্রথম ধাপে বরিশালের ২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান ১২ জন
- হার্টে হলদেটে ছোপ কেন হয়, কীসের লক্ষণ?
- বেশিক্ষণ রোদে থাকলে যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে
- ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে ঈদ মার্কেট
- আইএমএফের ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ে বাধা নেই: গভর্নর
- হিট স্ট্রোক এড়াতে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
- যমুনার বুকে দৃশ্যমান হলো দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু রেলসেতু
- সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে মাদরাসা