• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা

যেভাবে এলো ইংরেজি ক্যালেন্ডার

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০২০  

২০১৯ শেষে চলে এলো ২০২০। ১ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় ইংরেজি নববর্ষ। কিন্তু সব সময়ই কি ১ জানুয়ারিতেই উদযাপিত হয়েছে নতুন বছর? নাকি এর ব্যতিক্রম ছিল?

সব সময় নতুন বছর ১ জানুয়ারি উদযাপিত হয়নি, এমনকী এখনো অনেক দেশেই ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে উদযাপিত হয় না। এছাড়া, দেশ ও জাতিভেদে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ক্যালেন্ডার ও সে অনুযায়ী আলাদা নববর্ষ। আধুনিক ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ইতিবৃত্ত জানতে যেতে হবে অনেক অনেক বছর আগের সময়ে।

অতি প্রাচীনকালে চাঁদের গতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হতো ক্যালেন্ডার। এতে ছিল ১২টি চন্দ্রমাস। তখন ২৯.৫ দিনে এক চন্দ্রমাস আর প্রায় ৩৬৫.২৪ দিনে হতো এক বছর। নির্দিষ্ট সময় পর পর অতিরিক্ত দিন যোগ করার জন্য যুক্ত হতো ১৩ নম্বর অধিমাস বা একটি অতিরিক্ত মাস।

মিশরীয়রাই প্রথম সৌর ক্যালেন্ডার ব্যবহার করেন। তারাই প্রথম বছরের দৈর্ঘ্য নির্ভুলভাবে পরিমাপ করতে পেরেছিলেন। সেটি প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৪২০০ সালের কথা। প্রতিবছর প্রায় একই সময় নীলনদের কূল ছাপিয়ে বয়ে যেত পানি। মিশরের পুরোহিতরা দেখলেন, বন্যার সময় সূর্য ওঠার আগে লুব্ধক তারা পূর্ব আকাশে ওঠে। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় কি-না দেখা জন্য তারা দিন গুনেছিলেন। দেখা গেলো, ঠিক ৩৬৫ দিন পর এটি আবার ঘটেছে। মিশরীয়রা তখন তাদের বছরকে ১২ মাসে ভাগ করলেন, প্রতিটি মাসে থাকতো ৩০ দিন। বছর শেষে পাঁচটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে হিসাব মেলানো হতো। মিশরীয় ক্যালেন্ডার ছিল প্রাচীনতম সৌর ক্যালেন্ডার।

রোমান শব্দ ‘ক্যালেন্ডস’ থেকে ক্যালেন্ডার শব্দটি এসেছে। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৭৩৮ সালে রোমান ক্যালেন্ডার চালু করেছিলেন রোমের প্রথম সম্রাট রমুলার। এ ক্যালেন্ডারের শেষ চার মাসের নাম রাখা হয়েছিল ল্যাটিন সেপ্টেম (সাত) থেকে সেপ্টেম্বর, অক্টেম (আট) থেকে অক্টোবর, নভেম (নয়) থেকে নভেম্বর এবং ডিসেম (দশ) থেকে ডিসেম্বর। তখন বছর গণনা করা হতো ১০ মাসে, তাতে থাকতো ৩০৪ দিন। 

সেসময় ফসল ফলনের সঠিক সময় নির্দিষ্ট করার জন্য ক্যালেন্ডারের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। শীতকালে ফসল হতো না বলে, শীতের দুই মাস তারা বছর গণনার সময় ধরতেন না। তাদের বছর শুরু হতো মার্চ মাস থেকে। তাই তারা বর্ষবরণ করতেন ১ মার্চ। দুই মাস যে তাদের বছর থেকে উধাও হয়ে যেতো, তা নিয়ে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপই ছিল না!

পরে খ্রিস্টপূর্ব ৭১৩ সালে রোমান শাসক ন্যুমা পম্পিলিয়াস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস দু’টি যুক্ত করেন। সে সময় ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের শেষ মাস। 

খ্রিস্টপূর্বে ৪৬ সালে বিখ্যাত রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার চালু করলেন নতুন ক্যালেন্ডার। এতে মিশরীয়দের আদলে সৌরবর্ষ ব্যবহার করা হলো, নাম দেওয়া হলো ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার’। এ ক্যালেন্ডারের বছর হতো ৩৬৫.২৫ দিনে। এবং প্রতি তিন বছরে একদিন বেড়ে হতো ৩৬৬ দিন। এ ক্যালেন্ডারেই প্রথম সপ্তাহের সাত দিনের নাম দেওয়া হলো। 

জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি চলে এলো বছরের প্রথমে। এছাড়া, সপ্তম মাস কুইনটিলিসের নাম পরিবর্তন করে জুলিয়াস সিজারের নাম অনুসারে রাখা হলো জুলাই। পরে অগাস্টাস সিজার নিজের নাম অনুসারে অষ্টম মাস সেক্সটিলিসের নাম বদলে রাখেন আগস্ট। তিনিই লিপইয়ার বা অধিবর্ষ চার বছরে করেন। অর্থাৎ, ফ্রেব্রুয়ারি মাসে প্রতি চার বছর অন্তর যুক্ত হয় একটি অতিরিক্ত দিন। ২০২০ সালও অধিবর্ষ, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ দিনে।

আমরা যে খ্রিস্ট বছর বা খ্রিস্টাব্দ বলি, তার সূচনা হয় আরও পরে। যিশুখ্রিস্ট যে বছর জন্মগ্রহণ করেন অর্থাৎ ৫৩২ সাল থেকে বছর গণনা শুরু করেন ডাইওনিসিয়াম এক্সিগুয়াম নামে এক পাদ্রি। এভাবেই সূচনা হয় খ্রিস্টাব্দের। 

১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে রোমের পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি জ্যোতির্বিদদের পরামর্শে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার পরিমার্জন করেন তৈরি করেন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। সেসময় পোপ গ্রেগরি ঘোষণা করেন, যেসব শতবর্ষীয় সাল ৪০০ দিয়ে বিভক্ত হবে, সেসব শতবর্ষ অধিবর্ষ হিসেবে গণ্য হবে। এ ক্যালেন্ডারের হিসাব বেশ নিখুঁত, তাই সব জায়গায় এটিই প্রচলিত হতে থাকে। 

আমরা যে ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলি সেটি তৈরি হয়েছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে। তার আগে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপিত হতো ২৫ মার্চ। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করেই আমরা ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করি প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি। ইংরেজরা ১৭৫২ সাল থেকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার শুরু করেন। পরবর্তীকালে আরও অনেক দেশই এ ক্যালেন্ডার ব্যবহার শুরু করে। তাই ১ জানুয়ারি ঠিক ইংরেজি নববর্ষ নয়, বরং রোমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ। 

বরগুনার আলো