• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক রাইসি-আমির আব্দুল্লাহিয়ান মারা গেছেন: ইরানি সংবাদমাধ্যম সকল ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতে কাজ করছে বিএসটিআই: প্রধানমন্ত্রী চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত

স্বাস্থ্য রক্ষায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮  

অনেকেই শুনেছেন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের প্রয়োজনীয়তার কথা। কিন্তু আসলে কি এই ফ্যাটি এসিড? কেনই বা খেতে হয় এই ওমেগা-৩? উপকারিতা কি কি? এসবের উত্তর জানা নেই অনেকেরই। চলুন জেনে নিই ওমেগা-৩সম্পর্কে।

আমাদের মস্তিষ্কের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগই এই ফ্যাটি এসিড। সেল মেমব্রেন, হরমোন, সিগনালিং ম্যাসেঞ্জার প্রভৃতি তৈরিতে ফ্যাটি এসিডের গুরুত্ব অনেক। উপকারী এই ফ্যাটি এসিডকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন বিজ্ঞানীরা- অতি প্রয়োজনীয় ও স্বল্প প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড। এদের মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিডের অধিকাংশই মানুষের শরীর নিজে নিজে তৈরি করতে পারে না। খাবারের থেকে গ্রহণ করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় হল ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এদিকে স্বল্প প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর নিজেই তৈরি করতে পারে।

ওমেগা-৩ কি?

ওমেগা-৩হল এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ মাত্রই জানেন, সম্পৃক্ত চর্বি হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। তেল-চর্বিযুক্ত খাবার একটা বয়সের পর সে কারণে খেতে মানা। কিন্তু অসম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খেতে বাঁধা নেই, বরং এটি রক্তে উপকারী চর্বির পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহের নানা উপকার করে। প্রকৃতিতে কয়েক ধরনেরওমেগা-৩চর্বি আছে। এর মধ্যে আলফা লিনোলেইকএসিড পাওয়া যায় কিছু উদ্ভিজ্জ্ব খাবার বা তেলে। অন্যদিকে সামুদ্রিক খাবারে পাওয়া যায় ইকোসা পেন্টানোয়িক অ্যাসিডএবং ডোকোসা হেক্সানোয়িক অ্যাসিড

চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে আমাদের খাদ্যে প্রধান উপাদান তিনটি।  কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও চর্বি। এর মধ্যে চর্বির প্রধান কাজ হল দেহে শক্তি যোগানো। চর্বি থেকে সমপরিমাণ কার্বোহাইড্রেট বা প্রোটিনের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি শক্তি মেলে।অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড দেহের জন্য উপকারী অন্যদিকে স্যাচুরেটেড বা সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড দিয়ে তৈরি চর্বি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে ধমনীর ভেতরের গায়ে লেগে যায়। এতে ধমনীর ব্যাস ক্রমশ ছোট হয়ে আসে। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। দুধ, ঘি, মাখন, মাংস, ক্রিম, ডিম, চকোলেট ইত্যাদি সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের উৎস। এই সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডগুলো স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কঠিন আর অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডগুলো তরল হয়।

মোনোআনস্যাচুরেটেড চর্বি বা অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় সমস্ত ধরনের বাদাম, জলপাই তেল, এবং ক্যানোলা তেল এ। মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল কমায়। তাই এর ব্যবহার নিঃসন্দেহে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল এর মাত্রা কমিয়ে কোলেস্টেরল জনিত ধমনীর রোগ প্রতিহত করে। পলি আনস্যাচুরেটেড চর্বি পাওয়া যায় সয়াবিন, সূর্যমুখীর তেল, ভুট্টা ইত্যাদিতে।

ওমেগা-৩ এর কাজ

প্রদাহ কমানো, অপ্রয়োজনীয় রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিহত করা, ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ানো, রক্তের কোলেস্টেরল কমানো, প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা জড়ো হওয়া কমানো, রক্তে ট্রাই গ্লিসারাইড কমানো, ক্যানসার কোষের বাড়া প্রতিহত করা, রক্তনালীর পুরু হয়ে যাওয়া, রক্তনালীর প্রসারণে সহায়তা, শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়ানো ইত্যাদি।
যেসব রোগে ওমেগা-৩ উপকারী

হৃদরোগ প্রতিরোধ, হৃৎপিন্ডকে সবল রাখা, রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কোলেস্টেরল কমিয়ে স্ট্রোক প্রতিরোধ। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, রক্তচাপ কমানো, মানসিক রোগ যেমন- ডিপ্রেশন, ডিমেনশিয়া, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভি ডিজর্ডার, শিশুদের সুস্থ সবলভাবে বেড়ে ওঠার জন্য যথেস্ট পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড প্রয়োজন। ক্যানসার প্রতিরোধ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি।
ওমেগা-৩ পাওয়া যায় কোথায়
উদ্ভিজ্জ তেল যেমন- তিসির তেল ও ক্যানোলা অয়েল ইত্যাদিতে পাওয়া যায় ওমেগা-৩। যা আমাদের দেশে ব্যবহৃত হয় না। এদিকে সয়াবিন তেলে ওমেগা-৬ এর পরিমাণ বেশি থাকায় এর নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করতে হবে। সামুদ্রিক মাছের তেল ওমেগা-৩ এর উৎকৃষ্ট উৎস। এছাড়া গবেষণায় পাওয়া গেছে, দেশীয় মাছের মধ্যে রুই মাছ, পাংগাস, মাগুর ইত্যাদি মাছের তেলে পাওয়া যাবে ওমেগা-৩; যাতে ওমেগা-৩ ও ৬ এর ভারসাম্য বর্ণণামূলকভাবে সঠিক মাত্রায় বিদ্যমান। বীজ জাতীয় খাবারেও পাওয়া যায় ওমেগা-৩। মাছের ডিমে ক্ষতিকর চর্বির সঙ্গে বেশ ভালো পরিমাণে থাকে ওমেগা-৩। ১ চামচ মাছের ডিমে প্রায় ৩৪২ মিলিগ্রাম পরিমাণ ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের বাদামে আছে ওমেগা-৩। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আছে ওয়ালনাট বা আখরোট, পেস্তা ইত্যাদি বাদামে। শাকসবজি যেমন পালং শাক, ব্রকলি ইত্যাদিতে যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। দেশের বাজারে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ ডিম বাজারজাত করছে ‍পুর্নাভা লিমিটেড। এদিকে একদিনে মাত্রাতিরিক্ত ওমেগা-৩ (৩ গ্রাম এর অধিক) স্ট্রোকের মতো ভয়ংকর রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই ওমেগা-৩ ও ৬ এর ভারসাম্য জেনে বুঝে খাদ্য গ্রহণ করা উচিৎ।

বাদাম জাতীয় খাবার গ্রহণ বৃদ্ধি করতে পারলে ওমেগা -৩ সঠিক পরিমানে পাওয়া সম্ভব। তাই নজর দিন খাদ্য তালিকায়, বাদাম জাতীয় খাবার গুলো গ্রহণ করার অভ্যাস করুন এবং বাচ্চাদের ও অভ্যাস করান।

বরগুনার আলো