• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

আরো তীব্র হচ্ছে অ্যামাজনের দাবানল

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০১৯  

‘পৃথিবীর ফুসফুস’ খ্যাত ব্রাজিলের বিখ্যাত অ্যামাজন জঙ্গল গত দশদিন ধরে তীব্র দাবানলের আগুনে অবিরাম জ্বলছে। এরমাঝেই গত বৃহস্পতি থেকে শুক্রবারের মধ্যে জঙ্গলটিতে নতুন করে আরো এক হাজার ২০০টি স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। 

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স জানিয়েছে, ২০১৯ সালে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৪ হাজার দফায় অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছে এ বনভূমি। তবে আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে এবারের আগুন সবচেয়ে ভয়াবহ। 

এ আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ব্রাজিলের উগ্র ডানপন্থী ও বাণিজ্যপন্থী প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো’র নীতিকে দায়ী করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। বন পুড়ে বাণিজ্য সম্প্রসারণের নীতির জন্য নিজ দেশের পরিবেশবাদীদের কাছেও তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। 

সর্বশেষ আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্রাজিল সরকারের নিষ্ক্রিয়তার ঘটনায় দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের হুমকি দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রাজিলিয়ান অর্থনীতিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে অন্য দেশগুলো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চাপের মুখে শনিবার অ্যামাজনে সেনা মোতায়েন করে বলসোনারো সরকার। এরমধ্যেই সেখানে নতুন করে সহস্রাধিক স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ার খবর এলো।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে সহস্রাধিক স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর কেন্দ্রীয় সরকারের শরণাপন্ন হয়েছে ছয়টি রাজ্য। বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ রকমের আগুনের কুণ্ডলী তৈরি হয়েছে। এসব রাজ্যের কর্তৃপক্ষ আগুন নিয়ন্ত্রণে সামরিক বাহিনীর সহায়তা চাইছে।

শনিবার পরিবেশমন্ত্রী রিকার্ডো সেলেস জানান, সেনা সহায়তা চাওয়া রাজ্যগুলো হচ্ছে পারা, রন্ডোনিয়া, রোরাইমা, টোকানটিন্স, একর এবং ম্যাটো গ্রোসো।

আগুন নিয়ন্ত্রণে ৪৪ হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফার্নান্দো আজেভেদো। যেসব রাজ্য থেকে সহায়তা চাওয়া হয়েছে সেসব রাজ্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে দুইটি সি-১৩০ হারকিউলিস এয়ারক্রাফট ব্যবহার করবে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এসব এয়ারক্রাফট ১২ হাজার লিটার পানি ছিটাতে সক্ষম।

ফার্নান্দো আজেভেদো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার কথা বললেও বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে কোনও সহায়তা দিচ্ছে না। এক ফোনকলে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোকে ওই সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপর এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আর কোনও কথা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র সহায়তার প্রস্তাব দিয়ে নীরব থাকলেও অ্যামাজন জঙ্গলকে বাঁচাতে বিমান থেকে পানি ঢালার উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া। আগুন নিয়ন্ত্রণে সুপারট্যাংকার বোয়িং বিমান ৭৪৭-৪০০ ভাড়া করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। শুক্রবার থেকেই আকাশপথে ওই সুপারট্যাংকার নিয়ে অভিযান শুরু হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে যে কোনও পদক্ষেপকে সম্মানের সঙ্গে স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

 

মহাকাশ থেকে তোলা অ্যামাজনের দাবানলের ছবি...

মহাকাশ থেকে তোলা অ্যামাজনের দাবানলের ছবি...

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দুনিয়ার ২০ শতাংশ অক্সিজেনের জোগান দেওয়া অ্যামাজনের ভয়াবহ এ আগুন আদতে কোনও দুর্ঘটনা নয়। সেখানে যে আগুন জ্বলছে তার বেশিরভাগই লাগাচ্ছে কাঠুরে ও পশুপালকেরা। গবাদি পশুর চারণভূমি পরিষ্কার করতে এসব আগুন লাগানো হচ্ছে। আর এতে উৎসাহ জোগাচ্ছেন ট্রাম্পপন্থী হিসেবে দেশটির উগ্র ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো। তিনি ব্রাজিলের ট্রাম্প হিসেবেও পরিচিত।

আগুন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অ্যামাজনে আগুন লাগানোর ঘটনায় ব্রাজিল সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় দেশটি থেকে গরুর মাংস আমদানি নিষিদ্ধের বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে ইউরোপের কয়েকটি দেশ। 

ফিনল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ব্রাজিলের গরুর মাংস আমদানি নিষিদ্ধ করার কথা দ্রুত ভাবার আহ্বান জানান। অন্যদিকে ব্রাজিলের এই শিল্প সম্প্রসারণে গত জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি যাতে কার্যকর না হয় সে বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার ঘোষণা দেয় ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ড। 

ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিক থেকে আসা উপর্যুপরি অর্থনৈতিক চাপের মুখে দৃশ্যত অ্যামাজনের সুরক্ষায় সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট।

চাপের মুখে সেনা মোতায়েন করা হলেও টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, পুরো দুনিয়াতেই বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকে। ফলে এটিকে ব্রাজিলের ওপর সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো যেতে পারে না।

বিস্তৃত জঙ্গলের প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এলাকা, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল ও সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

অ্যামাজন ধ্বংসের মাধ্যমে ব্রাজিল সরকার আত্মঘাতী পথ বেছে নিয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। দেশটির একজন শীর্ষ বিজ্ঞানী সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্স স্টাডিজের সিনিয়র গবেষক কার্লোস নোবরে মনে করছেন, এই পথ থেকে ব্রাজিল সরকারকে সরানোর একমাত্র উপায় আন্তর্জাতিক চাপ। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো সরকারের আমলে বন ধ্বংসের গতি তীব্র হয়েছে। পরিবেশ সংস্থাকে দুর্বল করে এবং খনিওয়ালা, কৃষক ও কাঠুরেদের সমর্থন দিয়ে বলসোনারোর সরকার বনাঞ্চল ধ্বংসে উৎসাহ দিচ্ছে। পরিস্থিতি খুব খারাপ। এর পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে। এসব আগুনের অনেকাংশেরই কারণ সাংস্কৃতিক চাপ, যা মন্ত্রীরা দিচ্ছে। তারা অরণ্য বিনাশে জোর দিচ্ছে কারণ তা অর্থনীতির জন্য ভালো। এতে যারা অবৈধভাবে বন ধ্বংস করে তারা শক্তিশালী হচ্ছে। 

বরগুনার আলো