• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

দয়া যেভাবে আপনার আয়ু বাড়াবে

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৯  

দয়া বা সহানুভূতি আমাদের কী দেয় ? আপনি হয়তো উষ্ণতায় কিছুটা ঝলমলিয়ে উঠবেন, অথবা হঠাৎ করে খুব ভালো বোধ করতে শুরু করবেন। এগুলো হয়তো সত্যি, কিন্তু তবু এর আদ্যোপান্ত গবেষণার জন্য এখন বিজ্ঞানী আর শিক্ষাবিদরা এখন একটি নতুন প্রতিষ্ঠান খুলেছেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বেদারি কাইন্ডনেস ইনস্টিটিউট অবশ্য এ নিয়ে অনেকের করা হাসি-ঠাট্টার জবাব দিতে শতভাগ তৈরি।

প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড্যানিয়েল ফেসলার বলছিলেন, "আমরা বিষয়টির বৈজ্ঞানিক দিকটি দেখতে চাই। আমরা এর মনস্তত্ত্ব, শরীরবিদ্যা এবং ইতিবাচক সামাজিক মিথস্ক্রিয়া নিয়ে কাজ করছি।"

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দয়া, সহানুভূতি কিংবা সহমর্মিতার মত বিষয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে।

গত মাসে প্রবীন ডেমোক্রেট এলিজা কামিংসের মৃত্যুর পর সেখানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দেয়া ভাষণে এই বিষয়টিই ছিল প্রধান বিষয়।

তিনি সেখানে বলেছিলেন, "শক্ত মানসিকতার বা শক্তিশালী মানুষ হবার জন্য দয়ালু হতে হয়।"

জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক এলেন ডিজেনেরাসও কিছুদিন আগে জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে 'বন্ধুত্বে'র বিষয়ে বলেছিলেন, "দয়ালু হওয়া মানে নিজের মতের সঙ্গে যার মিলবে, তার প্রতি দয়ালু হওয়া নয়। দয়ালু মানে সবার প্রতি দয়া বা সহানুভূতিশীল হওয়া।"

এবারে আসুন, বিশ্ব দয়া বা সহানুভূতি দিবসে দেখে নেয়া যাক, আসলে দয়ালু হবার মানে কী? আর কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?

বিশেষজ্ঞরা এটা বিশ্লেষণ করে দেখছেন এবং তাদের মতে এটি মানুষের জীবন-মৃত্যুর মতো জরুরী। ফেসলারের গবেষণার বিষয় হলো, কিভাবে দয়া ও সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে মানুষকে আরো দয়ালু ও সহানুভূতিশীল হতে উৎসাহিত করা যায়।

"বলা যায়, আমরা এখন নির্দয় একটা সময়ে বাস করি। যুক্তরাষ্ট্রে এবং পুরো বিশ্বে ব্যক্তি পর্যায়ে এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে ক্রমাগত সংঘাত বাড়ছে।"

তার মতে, দয়ামায়ার বিষয়টি মূলত একটি ভাবনা, একটি অনুভূতি এবং একটি বিশ্বাস, যা মূলত অপরের ভালোর সঙ্গে সম্পর্কিত। আর নির্দয় হওয়া মানে অসহিষ্ণু মতবাদ, অপরের ভালো সম্পর্কে উদাসীন।

সামাজিক মাধ্যমে ট্রলের শিকার হয়েছেন এমন যে কেউ বিষয়টি সহজেই বুঝতে পারবেন। ফেসলার মনে করেন, মানুষ এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসী আচরণ করে, অন্যের মতামতের মূল্য কম দেয়।

কাইন্ডনেস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য বেদারি ফাউন্ডেশন দুই কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। যেকোন ব্যক্তিকে সাহায্য করা এবং এ কাজের জন্য নতুন নেতা তৈরি করাই এই ইনস্টিটিউটের প্রধান উদ্দেশ্য।

আর সে কাজে বিজ্ঞান আর আধ্যাত্মিকতার সম্মিলন ঘটনোর চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। যেমন নৃবিজ্ঞানীরা দেখছেন দয়ার মনোবৃত্তি কিভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে যায়।

সামাজিক বিজ্ঞানীরা দেখছেন, যারা সাধারণত নির্দয় ব্যবহার করেন, তার পেছনের কারণ কী? অন্যদিকে মনোবিদরা দেখছেন, কিভাবে দয়ালু মনোভাব মানুষের মুড ভালো করে এবং বিষন্নতার লক্ষণ দূর করতে পারে।

ফেসলার মনে করেন, মানসিক চাপে থাকলে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সামাল দেবার ক্ষমতা কমে যায়। উল্টোদিকে, ভালো একটা মানসিক অবস্থায় পাহাড়ে চূড়ার মত কঠিন কাজও সহজে করতে পারে।

জরুরী বার্তা
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক কেলি হার্ডিং তার নতুন বই 'দ্য র‍্যাবিট এফেক্ট'- এ দেখেছেন, দয়ালু হবার মাধ্যমে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং সর্বোপরি মানুষকে দীর্ঘায়ু করে।

১৯৭০ সালে খরগোসের ওপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, একদল দয়ালু গবেষকের অধীনে কাজ করেছে এমন খরগোসরা গবেষণায় ঠিকঠাক অংশ নিচ্ছে।

একজন চিকিৎসক হিসেবে এমন ফল দেখে তিনি রীতিমত চমকে গিয়েছিলেন।

চিকিৎসক হার্ডিন মনে করেন, "দয়ালু হবার মাধ্যমে মানুষ অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে।"

দয়ালু জীবনের জন্য কিছু টিপস:

১. পাশের মানুষটির কথা মন দিয়ে শুনুন

২. কর্কশ আচরণের জবাব দয়ালু মনোভাব দিয়ে দিন

৩. যাদের মতামতের গুরুত্ব সাধারণত কেউ দেয়না, তাদের পাশে থাকুন। এর মাধ্যমে আপনি তাদের মূল্যায়ণ করে সম্মান দিলেন, যা তাকে ভালো করতে সাহায্য করবে

৪. নির্দয় আচরণ পেলে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাবেন না, ভাবার চেষ্টা করুণ এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মানুষ একটু ভালো ব্যবহার পেলে, একটু উৎসাহ পেলে অনেক ভালো কাজ করতে পারে, অনেক বড় বাধা অতিক্রম করতে পারে।

বর্তমান সময়ে মানুষের গতিশীল জীবনের কারণে অনেক সময়ই মানুষ পাশের মানুষটির ভালো-মন্দ নিয়ে ভাবে না।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের মানসিক সমস্যা অনেক বৃদ্ধি পাবার প্রেক্ষাপটে এখন দয়ালু হওয়া, পাশের মানুষটির প্রতি সহমর্মী হওয়ার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। বিবিসি বাংলা

বরগুনার আলো